ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ জলবায়ু পরিবর্তন ও অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে দ্রুত ক্ষয়ের মুখে পড়েছে। মসজিদের দেয়াল, গম্বুজ, স্তম্ভ ও বিশেষ করে মিহরাবে ফাটল, চুন খসে পড়া এবং সাদা লবণের স্তর স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। নিচ থেকে উঠে আসা নোনা পানি ইটের ভেতরে লবণ ক্রিস্টাল তৈরি করে স্থাপনার মূল গঠন দুর্বল করে দিচ্ছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি এবং আইকমসের যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে—তাপমাত্রা বৃদ্ধি, শিল্প দূষণ, বর্ষাকালের আর্দ্রতা এবং ভূগর্ভস্থ লবণাক্ততা ক্ষয়কে আরও ত্বরান্বিত করছে।
ঐতিহাসিক স্থাপনাটির জরুরি সংরক্ষণের জন্য প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সাবেক ডিজি ড. মো. শফিকুল আলমের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে। তদন্তে দেখা গেছে, মিহরাব যেকোনো সময় ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। পাথর খণ্ড যুক্ত রাখতে ব্যবহৃত লোহার ক্ল্যাম্পে জং ধরায় ভার বহনক্ষমতাও কমে গেছে।
আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন বলেন, ইউনেস্কোর সহায়তায় মসজিদের পূর্ণ ক্ষয়-মানচিত্র তৈরি করা হবে এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করে দ্রুত সংরক্ষণ-কাজ শুরু করা হবে। ইউনেস্কো ঢাকার পরামর্শ অনুযায়ী জরুরি ভিত্তিতে সাময়িক সংরক্ষণ কাজেরও সুপারিশ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ষাটগম্বুজ মসজিদকে ‘বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্য’ ঘোষণা করার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে—যা দেশের জন্য বড় ধাক্কা হবে।