হোম > বাণিজ্য

জনতা ব্যাংকের এক শাখার প্রায় পুরো ঋণ এস আলমের পকেটে

রোহান রাজিব

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঋণের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়। ব্যাংক থেকে ঋণের নামে যে কয়টি গ্রুপ অর্থ বের করে নেয়, তার মধ্যে অন্যতম ছিল এস আলম গ্রুপ। জনতা ব্যাংকের প্রধান তিন শাখার একটি হলো সাধারণ বীমা ভবন করপোরেশন। এই শাখা থেকে ১০ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয় এস আলম গ্রুপকে, যা শাখার মোট বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৯৭ শতাংশ। এই শাখা থেকে ঋণ দেওয়ার টাকা ছিল না। তবুও অন্য শাখা থেকে অর্থ এনে দেওয়া হয়েছিল। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে একক ঋণসীমা লঙ্ঘন করা হয়। বর্তমানে এস আলম গ্রুপের সব ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে।

জনতা ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি বছরের জুন শেষে সাধারণ বীমা ভবন করপোরেশন শাখা ৪৪৭ জন গ্রাহকের অনুকূলে বিতরণকৃত ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০ হাজার ৯৪১ কোটি টাকাই খেলাপি হয়ে গেছে। এই শাখার মোট বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে এস আলম গ্রুপের ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয় ১০ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা, যা শাখার মোট বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৯৭ শতাংশ। ব্যাংকের শাখায় জুন শেষে আমানত স্থিতি ছিল মাত্র ১০১ কোটি টাকা। অর্থাৎ শাখায় পর্যাপ্ত আমানত না থাকা সত্ত্বেও অন্য শাখা থেকে অর্থ এনে এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হয়েছিল।

একক ঋণসীমা লঙ্ঘন

ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৬(খ)(১) অনুযায়ী, একক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গ্রুপকে একটি ব্যাংক তার মূলধনের সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ ফান্ডেড এবং ১০ শতাংশ নন-ফান্ডেড ঋণ দিতে পারে। আর গ্রুপ বলতে কোনো ঋণগ্রহীতা বা তার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানিকে বোঝানো হয়। গত জুন পর্যন্ত জনতা ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ছিল ২ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা। এর মানে একক কোনো গ্রুপকে ফান্ডেড ৩৪৭ কোটি ১০ লাখ এবং নন-ফান্ডেড ২৩১ কোটি ৪০ লাখ টাকা দেওয়া যাবে। দুইয়ে মিলে সর্বোচ্চ ৫৭৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা দিতে পারবে ব্যাংক।

তবে এস আলম গ্রুপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে এস আলম ট্রেডিং কোম্পানির ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৪২ কোটি টাকা, এস আলম রিফাইন্ড সুগারের ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা, এস আলম সুপার এডিবল অয়েলের ৭৮৬ কোটি, এস আলম ভেজিটেবল অয়েলের ১ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা ও গ্লোবাল ট্রেডিংয়ের এক হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণসীমা লঙ্ঘন করে বেশি দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার ৮৭১ কোটি টাকা বা ৩৬৫ শতাংশ ।

একই গ্রুপের অপর একটি প্রতিষ্ঠান এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। এই প্রতিষ্ঠানকে মূলধনের ১ হাজার ৬০২ কোটি টাকা বা ৯৪ শতাংশ বেশি দেওয়া হয়েছে।

ঋণ বন্ধে চিঠি দিয়ে তুলে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক

২০২২ সালের ২৬ জুলাই দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে জনতা ব্যাংকের প্রধান ৩ শাখার বৈদেশিক ঋণ কার্যক্রম বন্ধে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ওই সময় এস আলমের ক্ষমতার দাপটে তা একদিন পর তুলে নিতে হয়। তিন শাখা হলো—লোকাল অফিস, জনতা ভবন করপোরেশন ও সাধারণ বিমা ভবন করপোরেশন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, জনতা ব্যাংকের মোট ঋণের ৭৬ শতাংশ এই ৩ শাখায়। আর প্রভাবশালীরা এই ৩ শাখারই গ্রাহক। তাদের কাছে ওই সময় হারতে হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। যদি ওই সময় ঋণ কার্যক্রম বন্ধ করা যেত তাহলে ব্যাংকের এত বড় ক্ষতি হতো না। কারণ ২০২২ সালের পরই ব্যাংক থেকে অধিকাংশ ঋণ বের হয়।

ব্যাংকের বক্তব্য

জানতে চাইলে সাধারণ বীমা ভবন করপোরেশন শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক বাদল কান্তি দাস আমার দেশকে বলেন, আমাদের ঋণগুলো শাখাভিত্তিক হয় না। এটা সেন্ট্রাল থেকে নির্ধারণ করা হয়। কারণ আমরা কাউকে ঋণ দিতে হলে হেড অফিস থেকে ধার করতে হয়। এস আলমের সব ঋণ খেলাপি। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ব্যাংকের পক্ষ থেকে এখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা লড়তেছে।

অনলাইন রিটার্ন দাখিলে সমস্যা, আবেদনের মেয়াদ বাড়লো

ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট ও ব্রেইন স্টেশন ২৩ পিএলসির মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর

দেশব্যাপী চলছে ওয়ালটনের আইটি ফেয়ার

ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের সভা

প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের মানুষদের ঋণ দিলো এনআরবিসি ব্যাংক

ব্র্যাক ব্যাংক অপরাজেয় আলো নারী হকি টুর্নামেন্ট-২০২৫ শুরু ২ নভেম্বর

স্বর্ণের বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা, ভরসা পাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা

জামানত ছাড়া ব্যাংকগুলোকে ঋণ দিতে পারবে না বাংলাদেশ ব্যাংক

সঞ্চয়পত্রের সিস্টেম জালিয়াতি : তিনজনের অ্যাকাউন্ট জব্দ, নিরাপত্তা জোরদার

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত