যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ ২৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ‘পেনি’ বা এক সেন্ট মুদ্রা তৈরির ইতিহাসের অবসান ঘটাতে যাচ্ছে। গত বুধবার ফিলাডেলফিয়া মিন্টে শেষ ব্যাচের পেনি তৈরি হবে বলে জানিয়েছে দেশটির ট্রেজারি বিভাগ। তবে উৎপাদন বন্ধ হলেও বাজারে প্রচলিত মুদ্রাগুলো কার্যকর থাকবে। খবর বিবিসির।
মার্কিন সরকারের ব্যাখ্যা, এই সিদ্ধান্তে বছরে প্রায় ৫৬ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে। কারণ বর্তমানে একটি পেনি তৈরিতে খরচ হচ্ছে প্রায় চার সেন্ট অর্থাৎ নিজ মূল্যের চেয়ে চারগুণ বেশি।
গত ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ উদ্যোগ ঘোষণা করে বলেছিলেন, আমাদের বাজেট থেকে অপচয় কমাতে হবে তা এক পেনি করে হলেও।
তামা, লেপিত দস্তা দিয়ে তৈরি এই মুদ্রায় যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধকালীন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের প্রতিকৃতি খোদাই করা থাকে। প্রথমবার পেনি চালু হয়েছিল ১৭৯৩ সালে।
ট্রেজারি বিভাগের হিসাবে, এখনো প্রায় ৩০০ বিলিয়ন পেনি বাজারে প্রচলিত রয়েছে, যা বাণিজ্যের প্রয়োজনীয়তার তুলনায় বহুগুণ বেশি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খুচরা লেনদেনে এর ব্যবহার কমে গেছে। অনেকেই পিগি ব্যাংক বা ঘরে জমিয়ে রাখেন এই মুদ্রা, যা বাজারে ফেরে না।
পেনি বন্ধের ঘোষণায় ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে দাম সমন্বয় শুরু করেছে। রিচমন্ড ফেডারেল রিজার্ভের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো যখন পণ্যের দাম কিছুটা বাড়িয়ে রাউন্ড ফিগারে বা পূর্ণ সংখ্যায় সমন্বয় করবে তাতে ক্রেতাদের বছরে অতিরিক্ত প্রায় ছয় মিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে।
এর আগে কানাডা ২০১২ সালে এক সেন্ট মুদ্রা তৈরি বন্ধ করে দেয়। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ৯০-এর দশকেই এক ও দুই সেন্ট মুদ্রা প্রত্যাহার করে নেয়।
যুক্তরাষ্ট্রে এখন আলোচনা শুরু হয়েছে ‘নিকেল’ নিয়ে যার মান পাঁচ সেন্ট, কিন্তু তৈরি খরচ প্রায় ১৪ সেন্ট। তবে পেনির পর নিকেল বন্ধ হলে তা ভোক্তা ব্যয়ের ওপর আরো বড় প্রভাব ফেলবে বলে সতর্ক করেছে ফেডারেল রিজার্ভ।