হোম > অর্থনীতি

কারসাজির দায়ে পুঁজিবাজারে নিষিদ্ধ রুবাইয়াত-রিয়াজ

বিএসইসির কমিশন সভা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বহুল আলোচিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান এলআর গ্লোবালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামকেও অনুরূপ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শেয়ারবাজারের মূল মার্কেট থেকে তালিকাচ্যুত লোকসানি ও উৎপাদনে না থাকা পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালার লিমিটেড নামে একটি কোম্পানির শেয়ার অধিগ্রহণের নামে বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় রুবাইয়াত ও রিয়াজকে পুঁজিবাজারে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে বিএসইসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এদিকে, শেয়ার মূল্যায়নের মাধ্যমে ২৫ কোটি টাকা মানি লন্ডারিং হয়েছে বলে বিএসইসির তদন্তে প্রতীয়মান হওয়ায় বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। একই সঙ্গে এলআর গ্লোবালকে ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপনা থেকে সরিয়ে দেওয়া, ইউনিট হোল্ডারদের স্বার্থ সুরক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান বিজিআইসিকে তিন কোটি টাকা এবং কোয়েস্ট বিডির তৎকালীন পরিচালকদের সবাইকে এক কোটি টাকা করে জরিমানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কমিশন সভায়। এছাড়া আর্থিক অডিট ফার্ম শফিক বসাক অ্যান্ড কোংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে (এফআরসি) পাঠানো হবে বলে জানানো হয়।

বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালার কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতি শেয়ার ২৮৯ দশমিক ৪৮ টাকা দরে কেনে এলআর গ্লোবাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। এক্ষেত্রে এলআর গ্লোবাল ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ড এনসিসিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড-১, এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ডিবিএসইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ও গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ডের ২৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে। যে সময় এ অর্থ বিনিয়োগ করা হয়, তখন পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালার লিমিটেডের ব্যবসায়িক কার্যক্রম ছিল না এবং বড় ধরনের লোকসানে ছিল। বিনিয়োগের অব্যবহিত পূর্বে ডিএসইর ওটিসি প্ল্যাটফর্মে কোম্পানিটির প্রতি শেয়ারের ট্রেডিং প্রাইস ছিল মাত্র ১৩ দশমিক ৬০ টাকা। পরে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো থেকে মনোনীত পরিচালকদের (যারা ফান্ডের সঙ্গে কোনোভাবেই স্বার্থসংশ্লিষ্ট নয়; বরং এলআর গ্লোবালের স্বার্থপুষ্ট ব্যক্তি) মাধ্যমে কোম্পানিটির বোর্ড গঠন করা হয় এবং কোম্পানিটির নাম পরিবর্তন করে ‘কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেড’ নামকরণ করা হয়।

একই সঙ্গে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ১ দশমিক ৬০ কোটি টাকা থেকে ৫০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। ওই ছয়টি ফান্ড থেকে প্রতি শেয়ার ১৫ দশমিক ৮৮ টাকা মূল্যে মোট ৪৫ দশমিক ০২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়। এ সময় কোম্পানির বিদ্যমান পূর্বতন শেয়ারহোল্ডাদের কোনো শেয়ার দেওয়া হয়নি। এছাড়া উল্লিখিত ক্ষেত্রে বিধিমোতাবেক মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ ও ইজিএম করা হয়নি এবং প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ইস্যুকৃত শেয়ার লক ইন করা হয়নি। উল্লিখিত ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে না থাকা এমন লোকসানি কোম্পানিতে ৬৮ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে ইউনিট হোল্ডারদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করা হয়।

এসব ঘটনায় সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেডের তৎকালীন পরিচালক রিয়াজ ইসলাম, রেজাউর রহমান সোহাগ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শরিফ আহসান, মদিনা আলী, সৈয়দ কামরুল হুদা এবং ওমর সোয়েব চৌধুরীকে এক কোটি টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।

এছাড়া এলআর গ্লোবালের ব্যবস্থাপনায় থাকা ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে বিনিয়োগ করা অর্থ সুদসহ মোট ৯০ কোটি টাকা ফান্ডগুলোর বিনিয়োগের অনুপাতে ৩০ দিনের মধ্যে ফান্ডগুলোয় ফেরত আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে এলআর গ্লোবালের প্রধান নির্বাহীকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে এবং ব্যর্থ হলে তাকে ৯৮ কোটি টাকা জরিমানা গুনতে হবে। একই সঙ্গে এলআর গ্লোবালের পরিচালক জর্জ এম স্টক ও রেজাউর রহমান সোহাগকে এক কোটি টাকা করে জরিমানা দিতে হবে।

বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে ২৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা তৎকালীন পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালার লিমিটেডে বিনিয়োগের বিষয়টি অনুমোদন এবং কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেডের পরিশোধিত মূলধন ১ দশমিক ৬০ কোটি টাকা থেকে ৫০ কোটি টাকায় উন্নীত করার বিষয়টি অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় অনৈতিক যোগসাজশ থাকার বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায় বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং এলআর গ্লোবালের প্রধান নির্বাহী রিয়াজ ইসলামকে পুঁজিবাজারের কার্যক্রম থেকে আজীবন নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর আগে গত জুলাই মাসে রুবাইয়াতকে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিল বিএসইসি। আইএফআইসি বন্ড কেলেঙ্কারির ঘটনায় তিনি ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানকে আজীবন অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছিল।

কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের প্রতি বিডার যে আহ্বান

আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের ১১ কোটি টাকার অনিয়ম উদঘাটন

সরকারি ক্রয়ে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ

প্রকল্প সংস্কৃতির কারণে মূল কাজ থেকে বিচ্যুত বিবিএস

কার্গো টার্মিনালের আগুনে রপ্তানি খাতে ক্ষতি ১২ হাজার কোটি টাকা

ঘোষণা দিয়েও লভ্যাংশ দেয়নি ১৭ কোম্পানি

শাহজালালে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি

গতি ফিরেছে উন্নয়নে, ৩ মাসে ৫ শতাংশ এডিবি বাস্তবায়ন

রূপালী ব্যাংকে গ্রাহক সেবা পক্ষ উদ্বোধন

বগুড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ সচেতনতা কার্যক্রম