সাপের কামড়ে আক্রান্ত ছয় বছরের শিখা মনিকে বাঁচাতে স্বজনরা একের পর এক হাসপাতালে ছুটেছেন। কিন্তু কোথাও মেলেনি জরুরি অ্যান্টিভেনম (ভ্যাকসিন)। সাভার থেকে শুরু করে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুরেও শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। অবশেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছানোর পর মৃত্যু হয় শিশুটির।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির পাশে থেকে শিশু শিখা মনি সাপের কামড়ের শিকার হয়। পরে রাত আটটার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিখা মনি সাভারের ব্যাংক টাউনের নামা গেন্ডা বটতলা এলাকায় জহুরুল ইসলামের মেয়ে। তার বাবা দুবাই প্রবাসী এবং মা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
নিহত শিশুর নানী শাহনাজ বেগম জানান, আমার মেয়ে জেসমিন আক্তার একমাত্র কন্যা ছিল শিখা মনি। সে ছিল আমার বড়ই আদরের নাতনি। আজ দুপুরের দিকে বাড়ির পাশে অন্যান্য শিশুদের সাথে ঘাসের খেতে মধ্য খেলা করতে ছিল। সেখানে হঠাৎ তার বাম পায়ে একটি সাপ কামড় দেয়। আমরা বিষয়টি জানতে পেরে প্রথমে নাতিকে নিয়ে সাভার উপজেলা হাসপাতালে যাই। সেখানে ডাক্তার সাহেব একটি ওষুধ দিয়ে বলে এটা দুই বেলা খাওয়াবেন ঠিক হয়ে যাবে। পরে আমার নাতনিকে বাসায় নিয়ে আসি, বাসায় আমার নাতনির অবস্থার অবনতি হলে পরে সাভারের এনাম মেডিকেলে নিয়ে যাই, পরে সেখানকার ডাক্তার জানায় আপনারা দ্রুত শিশুটিকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে আমার নাতনিকে ওখান থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল নিয়ে যাই। সেখানে নেওয়ার পরে চিকিৎসকরা জানান আমাদের কাছে ভ্যাকসিন নেই, পরে ওখান থেকে দ্রুত মহাখালী হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে সেখানে গেলে চিকিৎসক আমাদেরকে জানায়, ওখানেও সাপের ভ্যাকসিন নেই। সেখান থেকে আমার নাতনিকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান,আমার মেয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী সাভার থেকে ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে ও ভ্যাকসিন পেলাম না আমার নাতনিকে বাঁচাতে পারলাম না, এই কান্নায় ভেঙে পড়লো তিনি। আমাদের নিজ বাসা, সাভারের গেন্দা বটতলা এলাকার দুবাই প্রবাসী জহরুল ইসলামের মেয়ে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোহাম্মদ ফারুক জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকে অবগত করা হয়েছে।