রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হলো “আল-কুরআনে গবেষণা” শীর্ষক কনফারেন্স এবং গবেষক সম্মাননা অনুষ্ঠান হয়। ডক্টর ঈসা মোহাম্মদ এর সভাপতিত্বে আব্দুস সালাম হলে রোববার বিকাল ৩টায় এ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
দেশ-বিদেশের পিএইচ.ডি. ডিগ্রিপ্রাপ্ত গবেষক, বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যাপক, বিভাগীয় প্রধান, আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ, এম.ফিল.-পিএইচ.ডি. ও অন্যান্য গবেষণারত গবেষক এবং বিশিষ্টজনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি গবেষণামুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে।
ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় এর ভাইস চ্যান্সেলর, প্রফেসর ড. শামসুল আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, কুরআন হচ্ছে মানব জাতির পূর্ণাঙ্গ দিকনির্দেশনা। আধুনিক গবেষণার প্রতিটি ক্ষেত্রেই কুরআনের জ্ঞান প্রাসঙ্গিক। গবেষকদের এ ক্ষেত্রটিতে আরও গভীরভাবে মনোনিবেশ করতে হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমান জ্ঞানসভ্যতায় কুরআনিক গবেষণার উন্নয়ন জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কুরআনিক স্টাডিজের প্রাতিষ্ঠানিক বিকাশের জন্য তিনি নীতিগত সমর্থন ও বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানের কী-নোট স্পিকার-০১ প্রফেসর ড. আবম সাইফুল ইসলাম সিদ্দীকী তার বক্তব্যে কুরআনিক গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “ভাষাতত্ত্ব সাহিত্য, সমাজবিজ্ঞান, নীতিশাস্ত্র, বিজ্ঞান–প্রতিটি ক্ষেত্রে কুরআনের আলোচনাকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে উপলব্ধি করার সুযোগ রয়েছে। আমাদের গবেষণাকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছে দিতে হলে পদ্ধতিগত, সমন্বিত ও তথ্যনির্ভর গবেষণা জরুরি।
তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আল-কুরআন গবেষণা কেন্দ্র খোলার জোর দাবি জানান।
কী-নোট স্পিকার-০২ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. যুবাইর মুহাম্মদ এহসানুল হক, বিভাগীয় প্রধান, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি তার বক্তব্যে “সহজ-সাবলীল ভাষায় কুরআনের নাযিল হওয়ার সময়ের অর্থ, মূলভাব ও প্রেক্ষাপট ঠিক রেখে কুরআনের অনুবাদের আধুনিকায়ন ও গবেষণার প্রতি গুরুত্ব দেন।”
সম্মাননা প্রদান
অনুষ্ঠানে আল-কুরআনসংশ্লিষ্ট পিএইচ.ডি. গবেষণার জন্য ১৮ জন এবং এম.ফিল গবেষণার জন্য ১০ জন-কে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। তাদের হাতে ক্রেস্টসহ সনদ তুলে দেন প্রধান অতিথি ও কনফারেন্স আয়োজকবৃন্দ। গবেষকগণ তাদের পিএইচ.ডি. গবেষণার সারাংশ, গবেষণা বিষয়ে বর্তমান অবদান, গবেষণা কেন্দ্রিক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং গবেষণা অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
বক্তারা বলেন, সমকালীন জ্ঞানব্যবস্থার সঙ্গে কুরআনের মেলবন্ধন ঘটাতে পারলেই জ্ঞান ভান্ডারের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকগণ বক্তব্য দেন। তারা বলেন, কুরআনিক গবেষণায় তরুণদের সম্পৃক্ত করতে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ বাড়ানো দরকার। আন্তর্জাতিক জার্নাল প্রকাশ, একাডেমিক প্রশিক্ষণ, গবেষণা অনুদান এবং কনফারেন্স আয়োজনের মাধ্যমে গবেষণার প্রসার সম্ভব।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব আল-কুরআন রিসার্চ অ্যান্ড লার্নিং, বাংলাদেশ এই প্রোগ্রামের আয়োজন করে। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডক্টর ঈসা মোহাম্মদ তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, দেশে নিয়মিত আন্তর্জাতিক মানের কুরআনিক গবেষণা কনফারেন্স আয়োজন করা প্রয়োজন।
আমরা আমাদের এই ধরণের আয়োজন ও উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে চাই।
সেজন্য সবাইকে আমাদের সাথে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি গবেষণা সংকলন প্রকাশ, গবেষকদের নেটওয়ার্ক গঠন এবং গবেষণাগারের ভিত্তি শক্তিশালী করার পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, গবেষক, চিন্তাবিদ ও চট্টগ্রাম ন্যাশনাল পাবলিক কলেজের প্রাক্তন এই অধ্যক্ষ।