সম্মিলিত নারী প্রয়াস
জুলাইয়ের সম্মুখ সারির যোদ্ধা ও আধিপত্যবাদ বিরোধী শহীদ হাদীর খুনিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। যারা জড়িত ছিল তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সম্মুখ সারির সকল জুলাই যোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বলেও দাবি করেন সম্মিলিত নারী প্রয়াসের সভানেত্রী শামীমা নাসরীন।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারী প্রয়াসের উদ্যোগে আয়োজিত শরীফ ওসমান হাদীকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে ও অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সম্মিলিত নারী প্রয়াসের সভানেত্রী অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন বলেন, আমরা জানি যারা রক্ত ঝরায় তারা সমাজ বদলায়। হাদীকে কেন মেরে ফেলা হলো? কেন তাকে গুলি করা হলো? হাদী জুলাইয়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। হাদীরা মরে না।
হাদীরা আদর্শ হয়ে উঠেছে। ডক্টর ইউনুস আপনার সরকার কেন হাদীকে নিরাপত্তা দিতে পারল না? সিইসি কিভাবে হাদীর খুনের ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেন? হাদী ইনসাফের রাষ্ট্র চেয়েছিল।
আমরা আজ এখানে হাদীর খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। এর পাশাপাশি আমরা শহীদ হাদীর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এসেছি। তেজগাঁও কলেজে সাকিব নামের এক ছাত্রকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হত্যা করেছে। কি পরিবর্তন হলো রাজনীতির?
আরও একজন জুলাই যোদ্ধা এনসিপি নেত্রী খুন হয়েছে। হয়তো তাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু আমরা এই হত্যার বিচার চাই। কোন জুলাই যোদ্ধা আত্মহত্যা করতে পারে না। আমরা এখানে কোন রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা নিয়ে আসি নাই। আমরা এখানে কাঁদতে আসিনি, আমরা ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আপনি শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। একজন নোবেল পুরষ্কারপ্রাপ্ত হিসেবে আপনাকে বলছি! আপনি হাদীর খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত করবেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে নিয়ে বলার কোন ভাষা নেই। আপনি বলেছেন, যারা নির্বাচনে দাড়িয়েছে তারা বন্দুক ব্যবহার করতে পারবে। উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।
সুশীল সমাজ রাজনৈতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব করেন। নারী কমিশন নাকি নারীদের জন্য ভালো ভালো কাজ করবে? অথচ একজন জুলাই যোদ্ধা নারীর লাশ পাওয়া গেল, কিন্তু নারী কমিশন হয়তো চা খাওয়ায় ব্যস্ত ছিল।
সম্মিলিত নারী প্রয়াসের সেক্রেটারী অধ্যাপক ফেরদৌস আরা খানম বলেন, আমরা লক্ষ করেছি তারা ভয় সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। একজন জুলাই যোদ্ধার উপর হামলা করে শহীদ করার মাধ্যমে আমরা দেখতে পেয়েছি জুলাই যোদ্ধা এবং সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। পরিচিত জুলাই যোদ্ধাদের জীবনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
হাদী ছিলেন জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সম্মুখ সারির যোদ্ধা। তিনি আমাদের শিখিয়েছিলেন কিভাবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে তিনি ফ্যাসিস্টদের কালচারালের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করছিলেন। হাদীর খুনিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। আমরা জীবন দিব কিন্তু জুলাই দিব না।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সহ-সেক্রেটারি মাহসিনা মমতাজ মারিয়া, ট্রেজারার রাইহানা সুলতানা বিনতে নাসিম, সদস্য সাংবাদিক লাবিন রহমান এবং ঘোষণায় ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার নিয়ামা ইসলাম।
সম্মিলিত নারী প্রয়াসের মানববন্ধনে একাত্বতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার নিশাদ শারমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্বীন ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাওইকা সাবিনা ইয়াসমিন ও জুলাই যোদ্ধা জান্নাতুন নাইম প্রমি।