মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিনটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ২৫ সেনা কর্মকর্তাসহ ৩২ আসামির বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার দিন ধার্য ছিল।
তার মধ্যে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম-খুন ও জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
বুধবার সকালে সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা হয় অত্যাধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভিআইপি প্রিজন ভ্যানে। বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন ভ্যানটি দেশেই তৈরি করা হয়েছে।
প্রিজনভ্যানটিতে রয়েছে তিনটি পৃথক কেবিন। প্রতি কেবিনে ১২ জন আসামি স্বাচ্ছন্দে বসতে পারবেন। প্রয়োজনে প্রতি কেবিনে ১৫ থেকে ১৬ জনও বসতে পারবেন। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি কেবিন আলাদাভাবে তালাবদ্ধ রাখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
পুরো ভ্যানজুড়ে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারির সুবিধা রয়েছে। ড্রাইভিং কেবিনে চালকসহ চারজন পুলিশ সদস্যের জন্য রয়েছে আরামদায়ক আসন, যেখান থেকে তারা মনিটরের মাধ্যমে ভ্যানের ভেতরের সব কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। এছাড়া আধুনিক সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে তারা আসামিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগও রাখতে পারবেন।
ভ্যানটির কাঠামো তৈরি হয়েছে দেশেরই এক ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে, যদিও এতে ব্যবহৃত ইঞ্জিন ও চেসিস এসেছে জাপানের বিখ্যাত ইসুজু ব্র্যান্ড থেকে। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ আমদানি করলেও মূল নকশা, সংযোজন ও প্রযুক্তিগত বাস্তবায়ন সম্পূর্ণ দেশিয় পর্যায়েই করা হয়েছে।
কারাগারে পাঠানো সেনা কর্মকর্তারা হলেন—র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন ও কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে); র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম।
ডিজিএফআইয়ের সাবেক তিনজন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকীকেও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।