হোম > জাতীয়

কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্তারা

রকীবুল হক

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘বিতর্কিত আদেশ’-এর কারণে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাচ্ছেন না শিক্ষা ক্যাডারের প্রায় আড়াই হাজার কর্মকর্তা। চাকরির এক যুগেও পদোন্নতি মেলেনি ৩২তম থেকে ৩৭তম ব্যাচের যোগ্য প্রভাষকদের।

‘২০০০ বিধিমালা’ নিয়ে বিভিন্ন জটিলতার কারণে এ অবস্থা বিরাজ করছে। পদোন্নতির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আইনি পদক্ষেপ ও আন্দোলন করেও সমাধান পাননি ভুক্তভোগীরা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং বিসিএস শিক্ষা সমিতির মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানে বারবার মন্ত্রণালয়কে তাগাদা দেওয়া হলেও তাতে কাজ হয়নি। ফলে আগামী রোববার থেকে ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষক পরিষদ’-এর ব্যানারে ‘নো প্রমোশন নো ওয়ার্ক’ কর্মসূচিতে যাচ্ছেন পদোন্নতিপ্রত্যাশীরা।

পরিষদের সমন্বয়করা জানান, চলতি বছরের জুন ও নভেম্বরে দুই দফায় একাধিকবার ডিপিসি (ডিপার্টমেন্টাল প্রমোশন কমিটি) সভা করেও মামলা জটিলতার অজুহাতে পদোন্নতির আদেশ জারি করছে না মন্ত্রণালয়। এতে চরম ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন তারা।

শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রণালয়ের ২০০০ বিধিমালা প্রণয়নকালে আইন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেওয়া হয়নি। বিতর্কিত ৬(৫) বিধি অনুযায়ী আত্তীকৃত শিক্ষকরা সব যোগ্যতা অর্জন করার পর নিয়মিত হলে তখন ক্যাডার কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী এক কর্মকর্তা ২০২৪ সালে বিধিমালা ২০০০ অমান্য করে একটি বিশেষ মহলকে সুবিধা দিতে একই তারিখ ও স্মারকে স্থলাভিষিক্ত করে ৫৪টি আদেশ জারি করেন। ওই সব আদেশে প্রায় ২০০০ আত্মীকৃত শিক্ষক ক্যাডার হিসেবে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পান। ওই ৫৪টি অবৈধ আদেশ বাতিলের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ক্যাডার কর্মকর্তারা ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর মাউশির মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ) সিনিয়র সচিব বরাবর আবেদন করেন।

মাউশি ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ১১টি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে প্রতিবেদনসহ মীমাংসা চেয়ে চিঠি দেয়। কিন্তু সে চিঠির বিষয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ের পদোন্নতি গত ১৭ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ পদোন্নতির জন্য চলতি বছরের ৪ জুন প্রথম দফায় ডিপিসির (ডিপার্টমেন্টাল প্রমোশন কমিটি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকের পর পাঁচ মাস পার হলেও পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। আত্তীকৃত শিক্ষকদের মামলার অজুহাতে এ পদোন্নতি প্রক্রিয়া বন্ধ রাখে মন্ত্রণালয়। অথচ আদালত পদোন্নতিতে স্থগিতের নির্দেশ দেয়নি বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।

ভুক্তভোগী কর্মকর্তারা গত ৪ জুনের ডিপিসির পর ছয় মাস ধরে মন্ত্রণালয় ও মাউশি কর্তৃপক্ষকে বিধি সংশোধন ও মামলার বিষয়টি সুরাহা করে পদোন্নতির দাবি জানান। কিন্তু তারা কোনো সমাধান পাননি। এ প্রেক্ষাপটে গত ৩০ অক্টোবর পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তারা ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার প্রভাষক পরিষদ’-এর ব্যানারে দ্রুত পদোন্নতির দাবিতে মাউশির সামেনে অবস্থান, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন।

আন্দোলনের মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ৬ নভেম্বর ও পরে একাধিক ডিপিসি সভা করে। ডিপিসি কমিটি পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নিলেও কোনো আদেশ জারি করেনি। মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, আত্তীকৃতদের মামলা জটিলতার কারণে আদেশ জারির মুহূর্তে হঠাৎ আটকে যায় ১২ বছর ধরে পদোন্নতিবঞ্চিত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদোন্নতি।

এদিকে, আন্দোলনকারী প্রভাষকরা গত ৯ নভেম্বর সারা দেশে সব সরকারি কলেজে মানববন্ধন কর্মসূচি এবং সব জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। তখন তারা ঘোষণা দেন, ১৩ নভেম্বরের মধ্যে পদোন্নতির আদেশ জারি না হলে ১৬ নভেম্বর ‘নো প্রমোশন নো ওয়ার্ক’ লাগাতার কঠোর কর্মসূচি দেবেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, অন্য ক্যাডারের ৩৬তম ব্যাচ ২০২৩ সালে এবং ৩৭তম ব্যাচ ২০২৪ সালে পদোন্নতি পেয়েছে। গত সপ্তাহেও বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তাকে সুপারনিউমারি পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অথচ শিক্ষা ক্যাডারে প্রভাষক পর্যায়ের ৩২তম থেকে ৩৭তম ব্যাচ পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার কর্মকর্তা সব যোগ্যতা অর্জন করেও পদোন্নতি পাচ্ছেন না। সরকার ইচ্ছা করলেই আমাদের পদোন্নতি দিতে পারে।

জানা গেছে, ৩২তম ও ৩৩তম বিসিএস ব্যাচের চার শতাধিক প্রভাষক চাকরিতে যোগদানের এক যুগ পরও প্রথম পদোন্নতি পাননি। এছাড়া ৩৪তম বিসিএস ১০ বছর, ৩৫তম বিসিএস ৯ বছর, ৩৬তম বিসিএস আট বছর, ৩৭তম বিসিএস সাত বছর পার করলেও পদোন্নতি পাচ্ছে না। প্রভাষক হতে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির লক্ষ্যে গ্রেডেশনভুক্ত কর্মকর্তার সংখ্যায় ৩২তম বিসিএসে রয়েছেন ৫৪ জন, ৩৩তম বিসিএসে রয়েছেন ৩৬১ জন, ৩৪তম বিসিএসে ৬৩১ জন, ৩৫তম বিসিএসে ৭৪০ জন, ৩৬তম বিসিএসে ৪৬০ জন এবং ৩৭তম বিসিএসে রয়েছেন ১৫৩ জন।

পদোন্নতিবঞ্চিত প্রভাষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে বিসিএস শিক্ষা সমিতির সদস্য সচিব সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মাসুদ রানা খান আমার দেশকে জানান, শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষকরা দীর্ঘ প্রায় ১৩ বছর ধরে পদোন্নতিবঞ্চিত। মন্ত্রণালয় চাইলে পদোন্নতি দিতে পারে। বঞ্চিতরা বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নামছেন। আমরা তাদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে একমত এবং সমিতি তাদের পাশে থাকবে। পদোন্নতি নিয়ে এ জটিলতা দ্রুত সমাধানের জন্য তিনি সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কলেজ শাখার এক কর্মকর্তা জানান, প্রভাষকদের পদোন্নতি জটিলতার বিষয়ে কাজ করছেন ডিপিসির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে অনেক মিটিংও হয়েছে। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ২৫১ সদস্যের কমিটি গঠন

জাবিতে রাত ১০টার পর সব ধরনের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ

সরকারি প্রাথমিকে ফিডিং কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন শিক্ষা উপদেষ্টা

‘চেয়ার মানুষকে বড় করে না, মানুষ বসলে চেয়ার সম্মানিত হয়’

রাবিতে ৪০ বছর পর নবীনদের বরণ করে নিলো ছাত্রশিবির

জবিতে উদীচীর কক্ষে গাঁজা সেবনের অভিযোগ

ড্যাফোডিলে রোবোটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রাম চালু

স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিল রাবি যশোর জেলা সমিতি

বুয়েটে দুইদিনের বিজ্ঞান উৎসবে নানান প্রদর্শনী