হোম > শিক্ষা

ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচন নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা

রকীবুল হক

দেশের বেসরকারি-স্কুল কলেজে ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডি নির্বাচন নিয়ে বেশ অস্থিরতা বিরাজ করছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কমিটি ভেঙে দিয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়। এর মেয়াদ শেষে নিয়মিত বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে বিভিন্ন মহল।

যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেয়াদোত্তীর্ণ বা অ্যাডহক কমিটি চলমান আছে, সেখানে সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নিয়মিত কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে সব অ্যাডহক কমিটি বিলুপ্ত হবে বলেও ৮ সেপ্টেম্বরের পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়।

ওই পরিপত্রের বিরুদ্ধে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের রায়ে সেটাও স্থগিত হয়ে গেছে। এর বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ আপিল করলেও শুনানি হয়নি বলে জানা গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মেয়াদ থাকা কমিটিগুলোই অব্যাহত রাখা এবং মেয়াদোত্তীর্ণগুলোতে নির্বাচন বা অ্যাডহকের মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলছে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী বর্তমান সরকারের সময়ে মেয়াদোত্তীর্ণগুলোতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নতুন কমিটি নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা। আবার অনেকে শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনাও মানতে নারাজ।

এরই মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসব কমিটি নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। অভিন্ন দাবি তুলেছে বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠনও। তবে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত ও সাধারণ অভিভাবকদের অনেকে দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচিও পালন হচ্ছে।

জানা গেছে, জুলাই বিপ্লবের পর সরকারের নির্দেশনায় গঠিত অ্যাডহক কমিটিতে কিছু প্রতিষ্ঠানে জামায়াতপন্থি ছাড়া অবশিষ্ট প্রায় সবগুলোতে বিএনপি নেতারা নিযুক্ত হন। ছয় মাস পর কমিটিগুলোতে নির্বাচনের নির্দেশনা থাকলেও সব ক্ষেত্রে তা বাস্তবায়ন হয়নি। আরো ছয় মাস বর্ধিত করা হয় অ্যাডহক কমিটি। অনেক প্রতিষ্ঠানে সে মেয়াদও এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।

এদিকে বেসরকারি স্কুল-কলেজ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে নীতিমালায় আমূল পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেয় বর্তমান সরকার। এ সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। নীতিমালাটি বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে উচ্চ আদালতে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ অক্টোবর আদেশে ম্যানেজিং কমিটি গঠনসংক্রান্ত পরিপত্র স্থগিত করে আদালত। বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবিলার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা প্রশাসন।

আদালতের আদেশের বিষয়ে রিটের পক্ষে শুনানিকারী সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, বেসরকারি স্কুল-কলেজের ম্যানেজিং কমিটিতে সভাপতি হিসেবে শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের মনোনয়নের যে বিধান করা হয়েছিল, তা বৈষম্যমূলক। এ কারণে আদালত প্রজ্ঞাপনটির কার্যকারিতা স্থগিত করেছে।

নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা ২০২৪ সংশোধন করে গত ৩১ আগস্ট পরিপত্র জারি করা হয়। এই পরিপত্রে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে শুধু সরকারি কর্মকর্তা (নবম গ্রেডের নিচে নয়) বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (পঞ্চম গ্রেডের নিচে নয়) জন্য সংরক্ষিত থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়। এ পরিপত্রের আলোকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর আগে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত বা এ সংক্রান্ত কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি নির্বাচনসংক্রান্ত নির্দেশনা স্থগিত করতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) লিখিত দাবি জানায় বিএনপি। গত ২৩ অক্টোবর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল গিয়ে এ দাবি জানায়।

তবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সম্পন্ন করার দাবি জানান অভিভাবকরা। এ দাবিতে ২৬ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনের পাশাপাশি শিক্ষা সচিবকে স্মারকলিপিও দেয় অভিভাবক ঐক্য ফোরাম।

এ বিষয়ে ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল কবির দুলু আমার দেশকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী সভাপতি পদে নির্বাচন করা যাবে না। ওই পদে নির্বাচনও হয় না। তাই বাকিপদে তথা, নির্বাচনের মাধ্যমে মেয়াদোত্তীর্ণ সব কমিটি নতুন করে গঠন করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ নির্বাচন দিলে কোনো জটিলতা তৈরি হবে না। পরীক্ষার ক্ষেত্রেও কোনো প্রভাব পড়ার শঙ্কা নেই। সব প্রতিষ্ঠানে ভোটার তালিকাও প্রস্তুত আছে।

সূত্রমতে, রাজধানীর বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মতিঝিল আইডিয়াল, ভিকারুন নিসা নূন এবং মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে নতুন কমিটি নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে।

তবে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব জাকির হোসেন বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমলাদের পরিবর্তে শিক্ষানুরাগী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়া উচিত। তাই সংশোধিত আমলানির্ভর নীতিমালা বাস্তবায়নের সুযোগ নেই। আপাতত যে অ্যাডহক কমিটি আছে সেগুলোই বহাল অথবা মেয়াদোত্তীর্ণগুলোকে বর্ধিত করা যায়।

এ বিষয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম আমার দেশকে বলেন, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী আগের মেয়াদ থাকা অ্যাডহক কমিটি অব্যাহত থাকবে আর মেয়াদোত্তীর্ণগুলো চাইলে নতুন করে গঠন বা নির্বাচন করতে পারবে। আদালতের বিষয়টি শুনানিতে অংশ নিয়ে মোকাবিলা করা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গভীর উদ্বেগ

বাইরে শান্ত, ভেতরে প্রাণচঞ্চল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষকদের ওপর পুলিশি হামলায় ইউটিএফের নিন্দা

ইমু আমাদের সংগঠনকে সমর্থন করে, জনশক্তি না: জবি ছাত্রী সংস্থা

কবি নজরুল ও ইকবালকে নিয়ে ঢাবিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন রোববার

শিক্ষাব্যবস্থা এখনো ব্রিটিশ ও ভারতীয় প্রেসক্রিপশনে চলছে: সাদিক কায়েম

ধর্মীয় উসকানিমূলক মন্তব্যে শেকৃবি শিক্ষার্থী বহিষ্কার

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক পদ পুনর্বহালের দাবিতে জবিতে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ

ববি মার্কেটিং প্রিমিয়ার লীগ অনুষ্ঠিত

জকসুর ভোটার তালিকা প্রকাশ