অস্ট্রেলিয়ায় ইসলামিক ওয়েবিনারে ড. ইয়াসির ক্বাদী
আপনারা অস্ট্রেলিয়ার মুসলমানরা অনেক ভাগ্যবান। বর্তমানে আপনারা দেশের জনসংখ্যার ৩ শতাংশের বেশি মুসলিম, যাদের অধিকাংশই নতুন প্রজন্মের অভিবাসী। এর পাশাপাশি মুসলমানদের অভিবাসন প্রবাহ এখনো আশাব্যঞ্জক। তুলনামূলক বিচার করলে নর্থ আমেরিকায় মুসলমানরা এখন হলো জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশ এবং সেখানে অভিবাসন প্রক্রিয়া বেশ জটিল বলে মন্তব্য করেন বিশ্ববিখ্যাত ইসলামিক গবেষক ও পন্ডিত ড. ইয়াসির ক্বাদী।
বাংলাদেশি প্রবাসীদের মাঝে সুপরিচিত সামাজিক, ধর্মীয় ও চ্যারিটি সংগঠন ইসলামিক প্র্যাকটিস অ্যান্ড দাওয়াহ সার্কেলের (আইপিডিসি) অধিকতর উত্তম দেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া বিনির্মাণে মুসলিমদের ভূমিকা শীর্ষক ওয়েবিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
গত শনিবার নেক্সট জি্থর শিশু-কিশোর শাখার উদ্যোগে এ ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
ওয়েবিনারে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিখ্যাত ইসলামিক গবেষক ও পন্ডিত ড. ইয়াসির ক্বাদী।
এছাড়াও আইপিডিসি্থর সেন্ট্রাল প্রেসিডেন্ট ড. মুহাম্মদ মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং মোবারাত হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারটিতে অস্ট্রেলিয়ার একজন সুপরিচিত আলেম শায়খ ওয়াসিম রেজভিও বক্তব্য রাখেন।
অষ্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্টেটে অবস্থিত নয়টি আইপিডিসি ইসলামিক সেন্টারসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে এক হাজারের বেশি শিশু-কিশোর ও তরুণ অংশগ্রহণকারী এ সাড়া জাগানো ওয়েবিনারটিতে অনলাইনে যোগ দেয়।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ড. ইয়াসির ক্বাদী বলেন, আপনারা অস্ট্রেলিয়ার মুসলমানরা অনেক ভাগ্যবান। বর্তমানে আপনারা দেশের জনসংখ্যার ৩ শতাংশের বেশি মুসলিম, যাদের অধিকাংশই নতুন প্রজন্মের অভিবাসী। এর পাশাপাশি মুসলমানদের অভিবাসন প্রবাহ এখনো আশাব্যঞ্জক। তুলনামূলক বিচার করলে নর্থ আমেরিকায় মুসলমানরা এখন হলো জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশ এবং সেখানে অভিবাসন প্রক্রিয়া বেশ জটিল।
তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অজি মুসলমান হিসেবে নিজেদের পরিচয় নির্ণয় করতে উৎসাহ দেন এবং তরুণদের ইসলাম চর্চার পাশাপাশি জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি ক্ষেত্রে উৎকর্ষতা অর্জনে অগ্রসর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
এছাড়াও তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিশুদের জন্য ইসলামিক স্কুলকে প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিতে হবে এবং মসজিদ ও ইসলামিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে, যাতে শিশুরা ছোটবেলা থেকেই ধর্মীয় পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে।
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, পিতা-মাতাদেরকে সন্তানদের জন্য আদর্শ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। সন্তানদের মানসিক ও ধর্মীয় বিকাশে পর্যাপ্ত সময় ও পরিচর্যা দিতে হবে।
শায়খ ওয়াসিম রেজভী তার বক্তব্যে অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম যুবকদের ইসলামিক জ্ঞান অর্জন ও ধর্মীয় চর্চার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে আইপিডিসির সেন্ট্রাল প্রেসিডেন্ট ড. মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, আল্লাহর অনুগ্রহে গত ২৫ বছর ধরে আইপিডিসি অস্ট্রেলিয়ার প্রতিটি স্টেট ও সিটিতে নিরবচ্ছিন্ন সামাজিক ও দাওয়াহ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
আমাদের দায়িত্ব হলো পরবর্তী প্রজন্মকে একজন আদর্শ মুসলিমের জীবনের উদ্দেশ্য পালনের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা যেন তারা সমাজ ও দেশের জন্য ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে। এর পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক ইসলামিক সেন্টার ও মসজিদের মাধ্যমে আইপিডিসি অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম ও অমুসলিমদের কাছে সামাজিক সেবা পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আইপিডিসির মূল উদ্দেশ্য হলো একটি উন্নত, অধিকতর মানবিক ও কল্যাণময় অস্ট্রেলিয়া নির্মাণে ইতিবাচক পরিবর্তন সাধন করা। সুতরাং আমরা আপনাদেরকে আহ্বান জানাই, আপনারা আমাদের সাথে যুক্ত হোন, আমাদের সমর্থন দিন এবং মুসলিম উম্মাহ ও বৃহত্তর সমাজের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করুন।