হোম > ফিচার > স্বাস্থ্য

শিশুর চোখ ভালো রাখে যে খাবার

লিনা আকতার

শিশুর চোখ সুস্থ রাখার জন্য পুষ্টি অপরিহার্য, বিশেষ করে দীর্ঘসময় ধরে স্ক্রিনে থাকা এবং জাংক ফুড, ফাস্টফুড, প্যাকেটজাত খাবার গ্রহণের কারণে শিশুদের চোখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখা আগের চেয়ে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে, কেননা বর্তমান ডিজিটাল যুগে দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ জন্য আপনার সন্তানের চোখের স্বাস্থ্যকে শক্তিশালী এবং সুস্থতা বজায় রাখার জন্য সঠিক পুষ্টির ওপর মনোযোগ দিন। বাব-মায়ের উচিত শিশুর খাবারে সব ধরনের সুষম খাবার দেওয়া। কারণ একটি সুষম খাদ্য চোখের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে এবং সুস্থ দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ খাবার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করবে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহজ করে তুলবে।

শিশুরা সাধারণত সব ধরনের খাবার গ্রহণ করতে চায় না। এ জন্য খাবারটিকে কৌশলে রঙিন, বৈচিত্র্যময় ও মজাদার করে তুলতে হবে অভিভাবককে। শিশুদের চোখের পুষ্টির কোনো অভাবের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে কি না, সেদিকে অভিভাবকদের খেয়াল রাখা উচিত। যেমন : শিশু ঘন ঘন চোখ ঘষা বা চোখের ক্লান্তি, দূরের বা কাছের জিনিস দেখতে অসুবিধা, শুষ্ক, লাল ও চুলকানিযুক্ত চোখ। এছাড়া আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি ইত্যাদির লক্ষণ দেখা দিলে একজন চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করার কথা বিবেচনা করবেন।

চোখের স্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টি কেন গুরুত্বপূর্ণ

চোখের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যার ঝুঁকি কমায় এবং পরে চোখের সমস্যায় যেমন শুষ্ক চোখ, মায়োপিয়া এমনকি ছানি প্রতিরোধে যাতে সহজেই না পড়ে, সে জন্য চোখকে শক্তিশালী করে তোলে। চোখের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পুষ্টি উপাদান চোখকে শুধু পুষ্টি জোগায় না; বরং ইউভি রশ্মি এবং ডিজিটাল স্ক্রিনের মতো পরিবেশগত কারণগুলোর কারণে সৃষ্ট জারণ ক্ষতি থেকেও রক্ষা করে থাকে। আসুন জেনে নেওয়া যাক, কোনগুলো শিশুর চোখের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান—

ভিটামিন এ

এটি চোখের শ্লেষ্মা ঝিল্লির স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ভূমিকা পালন করে। এটি ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে বাধা হিসেবে কাজ করে। এছাড়া ভিটামিন এ কর্নিয়ার পৃষ্ঠ বজায় রাখতে ও রেটিনার স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ রাতকানা প্রতিরোধ ও সামগ্রিক দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখতেও ভূমিকা পালন করে থাকে। ভিটামিন এ উৎসগুলো হলো গাজর, মিষ্টিকুমড়া, পালংশাক, কলিজা, ডিম ইত্যাদি।

ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড

এটি রেটিনা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং শুষ্ক চোখের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ডিজিটাল ডিভাইসে দীর্ঘ সময় ব্যয় করে এমন শিশুদের জন্য ওমেগা-থ্রি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবারগুলো হলো চর্বিযুক্ত মাছ, তিসিবীজ, চিয়াবীজ, আখরোট ইত্যাদি।

ভিটামিন সি

ভিটামিন সি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা চোখের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায় এবং চোখের রক্তনালিগুলো শক্তিশালী করে। পাশাপাশি ছানিপড়ার মতো রোগ প্রতিরোধ করে। ভিটামিন সি খাদ্যের উৎসগুলো হলো কমলালেবু, স্ট্রবেরি, পেয়ারা, ব্রোকলি, আমড়া, আমলকী, জাম্বুরা ইত্যাদি।

ভিটামিন ই

চোখের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং বয়সজনিত চোখের রোগগুলোকে ধীর করে দেয় ভিটামিন ই। ভিটামিন ই-সমৃদ্ধ খাবারগুলো হলো বিভিন্ন ধরনের বাদাম, যেমন : কাঠবাদাম, চীনাবাদাম, আখরোট, কাজুবাদাম এবং বিভিন্ন বীজজাতীয় খাবার।

লুটেইন এবং জিয়াক্সিনথিন

এই ক্যারোটিনয়েডগুলো প্রাকৃতিক সানগ্লাস হিসেবে কাজ করে এবং ক্ষতিকারক নীল আলো এবং অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করে। এগুলো ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। এ জন্য খাদ্যতালিকায় নিয়মিত রাখতে হবে সবুজ শাকসবজি, ডিম, ভুট্টা ইত্যাদি।

জিংক

জিংক ভিটামিন এ-কে মেলানিন তৈরিতে সাহায্য করে, যা চোখকে রক্ষা করে। মেলানিন হলো একটি রঞ্জক, যা অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে চোখকে রক্ষা করে। এটি শরীরকে ভিটামিন এ শোষণ করতেও সাহায্য করে। রেটিনার স্বাস্থ্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে। জিংকসমৃদ্ধ খাবারগুলো হলো মাংস, মটরশুঁটি, বাদাম, গোটাশস্য, কুমড়োর বীজ, মসুর ডাল ইত্যাদি।

ভিটামিন বি

দৃষ্টিশক্তি সুস্থ রাখতে ভিটামিন বি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন : ভিটামিন বি৬ ম্যাকুলার ডিজারেনশনের মতো কিছু চোখের সমস্যা রোধ করতে পারে। অন্যদিকে ভিটামিন বি১২ লোহিত রক্তকণিকা গঠনে ভূমিকা পালন করে, যা চোখের টিস্যুতে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য প্রয়োজন। এছাড়া ভিটামিন বি২ চোখকে জারণ চাপ থেকে রক্ষা করতে পারে। ভিটামিন বি-সমৃদ্ধ খাবারগুলো বেশির ভাগই প্রাণিজ উৎস। যেমন : মাংস, মাছ, ডিম ইত্যাদি।

হাইড্রেট

শুষ্ক চোখ প্রতিরোধ করতে সারাদিনে শিশুকে পর্যাপ্ত পানি পান করতে উৎসাহিত করুন।

টিপস

১. ২০-২০-২০ রুল মেনে চলতে হবে অর্থাৎ প্রতি ২০ মিনিট পর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরে তাকাতে হবে।

২. স্ক্রিন টাইম কমাতে হবে শিশুদের। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রয়োজনে সময় বেঁধে দিতে হবে।

৩. স্ক্রিনে ব্লু লাইট ফিল্টার ব্যবহার করুন।

৪. স্ক্রিন এবং চোখের মধ্যে অন্তত ১৬ থেকে ২০ ইঞ্চি দূরত্ব বজায় রাখা উচিত।

৫. পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম নিতে হবে।

৬. চোখ আঙুল দিয়ে ঘষবেন না। এতে ইনফেকশন হতে পারে।

লেখক : পুষ্টিবিদ, রাইয়ান হেলথ কেয়ার

হসপিটাল, দিনাজপুর

গুম হওয়া ৩ ছাত্রদল নেতার সন্ধান চেয়ে জবি ছাত্রদলের মানববন্ধন

ছাত্রদলের সংঘর্ষে আহত সাকিবুল মারা গেছেন

ডাকসুর উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী নাট্যোৎসব শুরু বৃহস্পতিবার

বিদেশিদের কাছে চট্টগ্রাম বন্দর লিজ দেওয়ার নিন্দা জানিয়ে ঢাবিতে বিক্ষোভ

অটিজম : ভিন্নতা মানেই অসম্পূর্ণতা নয়

ফুসফুসের ক্যানসার: সচেতনতা ও প্রতিরোধ

শীতে নাক বন্ধ হয় কেন?

সরকার সারা দেশে দ্রুতগতিতে ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণ করছে

সড়ক দুর্ঘটনায় চবি ছাত্রদল নেতার মৃত্যু

মনোনয়ন জমার শেষ দিনে লাপাত্তা নির্বাচন কমিশন, হতাশ প্রার্থীরা