হোম > ফিচার > স্বাস্থ্য

অ্যান্টিবায়োটিক কেন কার্যকারিতা হারায়

ডা. মো. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ

প্রতিবছর ১৮ থেকে ২৪ নভেম্বর বিশ্বজুড়ে পালিত হয় বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সপ্তাহ (WAAW)। এই সপ্তাহটি পালনের উদ্দেশ্য খুব স্পষ্ট। অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা হারানোর মতো ভয়াবহ বৈশ্বিক স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করা। যখন সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন সামান্য রোগও জীবন কেড়ে নিতে পারে। বাংলাদেশসহ অনেক দেশেই এ সমস্যা এক নীরব মহামারির রূপ নিয়েছে।

ভুল ব্যবহার ও MDR

অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স দ্রুত ছড়ানোর প্রধান কারণ হলো এর যথেষ্ট ব্যবহার। ওষুধের দোকানের ঝুঁকি। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ফার্মেসি থেকে সরাসরি ‘ওভার দ্য কাউন্টার’ অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খাওয়া আমাদের একটি বড় সমস্যা। সামান্য জ্বর বা সর্দি-কাশিতেও অনেকে ভুল ডোজে বা সম্পূর্ণ কোর্স শেষ না করেই ওষুধ খান।

মেট্রোনিডাজোলের (Metronidazole) অপব্যবহার। শুধু অ্যান্টিবায়োটিক নয়, মেট্রোনিডাজোলের মতো অনেক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ওষুধও অপ্রয়োজনীয়ভাবে ব্যবহার হচ্ছে। সাধারণ পেট খারাপ বা ডায়রিয়ার চিকিৎসায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই এই ওষুধ (ফিলমেট, ফ্ল্যাজিল ও মেট্রিল) সেবনের প্রবণতা ব্যাপক। এর ফলে প্যারাসাইট ও ব্যাকটেরিয়া এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করছে, যা ভবিষ্যতে জরুরি চিকিৎসায় এই ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট করে দিতে পারে। পোলট্রিশিল্পে বিপদ।

পোলট্রিশিল্পে মুরগি ও অন্যান্য প্রাণীর দ্রুত বৃদ্ধির জন্য বা রোগপ্রতিরোধের নামে অনিয়ন্ত্রিতভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে। এই প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া খাদ্যশৃঙ্খল ধরে মানুষের শরীরেও প্রবেশ করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সিপ্রোফ্লক্সাসিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক পশুপালনে ব্যবহার করতে নিষেধ করেছে। এই ভুল ব্যবহারের চূড়ান্ত ফল হলো মাল্টি-ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (MDR) । যেখানে পরিচিত কোনো ওষুধই আর কাজ করে না। এর ফলে রোগীর সুস্থ হতে বেশি সময় লাগে এবং চিকিৎসা খরচও বহুগুণ বেড়ে যায়।

শেষ ভরসার অ্যান্টিবায়োটিক

এমনকি চিকিৎসকদের শেষ ভরসার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত কিছু সংরক্ষিত অ্যান্টিবায়োটিকও এখন হুমকির মুখে। কোলিসটিনের (Colistin) মতো উচ্চমাত্রার ওষুধ শেষ বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হলেও, এর অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে এর বিরুদ্ধেও রেজিস্ট্যান্স তৈরি হচ্ছে। এটি চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্য এক গভীর উদ্বেগের বিষয়।

সমাধানে BARA-এর ভূমিকা

বাংলাদেশে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করছে বাংলাদেশ এএমআর রেসপন্স অ্যালায়েন্স (BARA)। এটি মানব স্বাস্থ্য, পশু স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ—এই তিনটি ক্ষেত্রকে নিয়ে ‘ওয়ান হেলথ’ নীতিতে কাজ করে। BARA মূলত সচেতনতা তৈরি, অ্যান্টিবায়োটিকের দায়িত্বশীল ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং জাতীয়ভাবে নির্দেশিকা বাস্তবায়নে সরকারি সংস্থাগুলোকে সমর্থন করে। AMR শুধু একটি খাতের সমস্যা নয়, এটি মানুষ, প্রাণী এবং পরিবেশের যৌথ সমস্যা। এই WAAW-এর সময়ে আমাদের সবার প্রতি আহ্বান, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক নয়, পশুপালনেও দায়িত্বশীলতা বজায় রাখুন এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। মনে রাখবেন, ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল্স : যত্ন সহকারে ব্যবহার করুন’।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক (মেডিসিন)

বারডেম জেনারেল হাসপাতাল

জকসু নির্বাচন: ৯ ডিসেম্বর থেকে ‘উন্মুক্ত লাইব্রেরি’ বন্ধ

রাবিতে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু কাল

ছেলে বাম জোটের এজিএস প্রার্থী, বাবা নির্বাচনি দায়িত্বে

ডেঙ্গুতে আরো ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৭৮৮

কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে ২৪৯ জনের মনোনয়ন জমা, চলছে যাচাই-বাছাই

ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

শীতে বাড়ে মানসিক চ্যালেঞ্জ

শিশুর হাঁপানি ও প্রতিকার

এনইআইআর বাস্তবায়নে ২০ হাজার ফোন ব্যবসায়ী পথে বসবে

জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ অনিকের সম্মানে পদ খালি রাখলো ছাত্রশক্তি