ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এস এম ফরহাদ বলেছেন, যে কোনো ধরনের ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে ডাকসুর ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, শিক্ষক, কর্মচারী কিংবা যার মাধ্যমেই হ্যারাসমেন্ট ঘটুক না কেন-সে যত বড় প্রভাবশালীই হোক, তার শিকড় আমরা উপড়ে ফেলতে হবে।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এরশাদ হালিমের ‘বিকৃত যৌনাচার’ এর দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মাদ এবং কার্যনির্বাহী সদস্য সর্বমিত্র চাকমা।
জিএস ফরহাদ অভিযোগ করেন, এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষে ‘গাফিলতি ও উদাসীনতার’ পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ‘একজন শিক্ষক কোনো ক্রাইমে অভিযুক্ত হলে এবং তা প্রমাণিত হলে- দুটি জায়গা থেকে শাস্তি আসা উচিত। একটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, আরেকটি রাষ্ট্র। দু’দিকেই আমরা গাফিলতি দেখেছি, এমনকি ইচ্ছাকৃতভাবে বিষয়টি উপেক্ষা করা হচ্ছে বলেও মনে হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন, প্রতিবেদন প্রকাশ এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু তা না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা কোনো শিক্ষক ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না- সে নিয়েও সন্দেহ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মাদ বলেন, ড. এরশাদ হালিমকে গ্রেপ্তারের পর রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল তাকে রিমান্ডে নিয়ে জবাবদিহির আওতায় আনা। কিন্তু রাষ্ট্র রিমান্ড আবেদন না করায় তিনি এটিকে ‘বৃহৎ ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, “কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠী তাকে শেল্টার দিচ্ছে। আমরা হুঁশিয়ারি দিচ্ছি- তাৎক্ষণিকভাবে রিমান্ড আবেদন করে কার্যকর ব্যবস্থা নিন।”
তিনি দাবি করেন, জরুরি সিন্ডিকেট বৈঠক ডেকে ড. এরশাদ হালিমকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে এবং ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।
এর বাইরে সমকামিতার বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রের সুস্পষ্ট আইন’ প্রণয়নের দাবি জানিয়ে মুসাদ্দেক আলী বলেন, “যারা সমকামিতার সঙ্গে জড়িত থাকবে, তাদের জন্যও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।