ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, জুলাই বিপ্লবের সম্মুখ সারির নেতা ও ঢাকা–৮ আসনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে ক্যাম্পাসে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড় হয়ে তাঁতিবাজার মোড়ে গিয়ে পৌঁছায়।
মিছিলটি তাঁতিবাজার মোড়ে কিছু সময় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে। পরে সেখান থেকে আবার মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন রাস্তার বিশ্বজিৎ চত্বরে এসে পৌঁছান। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এবং দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।
বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা ‘আমরা সবাই হাদী হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’, ‘হাদী ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দিবো না’, একটা একটা লিগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর, ইনকিলাব ইনকিলাব; জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ 'স্লোগান দিতে থাকেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, 'হাদিকে হত্যা মূলত জুলাইকে হত্যা। হাদির ভাইয়ের উপর এই মামলা প্রমাণ করে জুলাইয়ের শক্তিরা বিভক্ত হলে এই পরিণাম কি ভয়াবহ হতে পারে। আমরা জুলাইয়ের শক্তিরা যদি আবারও রক্ত দিতে হয় দিব, প্রয়োজন হলে আবার আবু সাইদ, মুগ্ধ হবো, কিন্তু ফ্যাসিবাদকে নির্মূল না করা পর্যন্ত ঘরে ফিরবো না।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ১০ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসাইন মুন্না বলেন, 'এই সরকার আমাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেনি। এই সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আমরা যারা হাদি ভাইয়ের হত্যার বিচারের জন্য রাজপথে নেমে এসেছি আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই, হাদি ভাইকে যারা হত্যা করেছে এবং পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, তাদের বিচার নিশ্চিত না করে ঘরে ফিরে যাবো না।'
উল্লেখ, হাদি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন। রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় গত ১২ ডিসেম্বর চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে সন্ত্রাসীরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে গত সোমবার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।