হোম > ফিচার > ক্যাম্পাস

হীরক জয়ন্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

মুহাম্মাদ রিয়াদ উদ্দিন

১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর সবুজ পাহাড়ের কোলে প্রতিষ্ঠিত হয় আয়তনে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। পাখির কলতান, ঝরনার গান ও প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মাঝে হাজার হাজার যুগল চোখের সোনালি স্বপ্নের চাষাবাদ করে এ পবিত্র বিদ্যাপীঠ। হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে আজ হীরক জয়ন্তীর মোলাকাত। এই হীরক জয়ন্তী কেবল কিছু দালানকোঠা কিংবা কিছু অবকাঠামোর নয়; কত-শত স্মৃতি, স্বপ্ন, প্রেম ও বন্ধুত্বেরও হীরক জয়ন্তী। এই হীরক জয়ন্তী জ্ঞান, তপস্যা ও অধ্যয়নের। এই ফিচারটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, শিক্ষক, সাবেক শিক্ষার্থী, চাকসুর প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীদের স্মৃতি, স্বপ্ন, প্রত্যাশা, অনুভূতি ও অভিব্যক্তির ঐকতান।

উপাচার্যের অনুভূতি ও অভিব্যক্তি

ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার

উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

১৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা প্রতি বছরই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্‌যাপন করি। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছর প্রথম ৫৯তম দিবস উদ্‌যাপন করেছিলাম। এ বছর একটু নতুন উদ্যোগে নতুন উদ্যমে এবং অধিকতর অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই দিবস উদ্‌যাপিত হবে। কারণ গত বছর চাকসু ছিল না, এ বছর আমাদের ছাত্রদের নির্বাচিত প্রতিনিধি চাকসু হয়েছে। কাজেই এই উদ্‌যাপনের সঙ্গে চাকসুও আছে।

এই ৬০ বছরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যতখানি এগিয়ে যাওয়া উচিত ছিল, সেক্ষেত্রে আমি খুব একটা সন্তুষ্ট নই। আমি মনে করি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় খুব একটা এগিয়ে যেতে পারেনি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অবকাঠামোগতভাবে শহর থেকে অনেকখানি দূরে হওয়ায় নানারকম অসুবিধার সম্মুখীন ছিল, এখনো আছে। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পরে সেদিকে মনোযোগ দিয়েছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেবামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি করার জন্য নানারকম উদ্যোগ নিয়েছি। ৬০ বছর উপলক্ষকে কেন্দ্র করে আমরা কোনো উদ্যোগ নিইনি। আমরা যে উদ্যোগ নিয়েছি, সেক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটা একাডেমিক পরিবেশের মধ্যে রেখে কীভাবে যোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা যায়, সে চিন্তা আমাদের মধ্যে সবসময় কাজ করছে। সে লক্ষ্যে আমরা অনেকগুলো কাজ করেছি, যাতে আমাদের এখান থেকে যারা পাস করে যাবে, তারা যেন সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার গ্র্যাজুয়েটদের সঙ্গে কম্পিটিশনে জব মার্কেটে ভালো করতে পারে।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় নান্দনিকতার দিক থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এর সঙ্গে যদি আমরা একাডেমিক এক্সিলেন্স যোগ করতে পারি তাহলে যথেষ্ট। এটাই হওয়া উচিত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রধান শপথ বা চিন্তা। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে আমি, প্রো-ভিসি কামাল স্যারসহ উপস্থিত থাকতে পারব না, সেজন্য মনে দুঃখ থেকে যাচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে চীনে যাচ্ছি কনফুসিয়াস সেন্টারের স্বাক্ষর-সংক্রান্ত কাজে। কনফুসিয়াস সেন্টারের কাজ হলো লেভেল ১, ২, ৩ ও ৪—এভাবে চাইনিজ ল্যাংগুয়েজ শেখাবেন তাদের শিক্ষকরা; আমাদের কোনো টাকা দেওয়া লাগবে না। একটা অবকাঠামো করা হবে চারতলা বা পাঁচতলা, সেটার নাম দেওয়া হবে কনফুসিয়াস সেন্টার। এরকম আরো দুটো আছে বাংলাদেশে।

আমাদের আরো পরিকল্পনা আছে, আগামী এক বছরে পাঁচতলাবিশিষ্ট ওয়ান স্টপ বুক অ্যান্ড সুভ্যেনির শপ এবং ১০ তলাবিশিষ্ট দুটি হলের কাজ শুরু করা প্রভৃতি। কাজেই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ৬০ বছরে আমরা কতটুকু এগুতে পেরেছি। অবকাঠামোগত দিক দিয়ে হয়তো আমরা কিছু বিল্ডিং করেছি, কিন্তু এখনো আমাদের অনেক ঘাটতি রয়েছে।

সাবেক শিক্ষার্থীদের অনুভূতি ও প্রত্যাশা

ড. রউফুল আলম

স্টাফ সায়েন্টিস্ট, ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো এবং

সাবেক শিক্ষার্থী, রসায়ন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়টুকু আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় এবং রঙ ঝলমলে এক অধ্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়জীবন আমাদের মনে স্বপ্ন বুনে দেয়, আত্মবিশ্বাস তৈরি করে দেয় এবং জীবনের চ্যালেঞ্জকে কী করে দ্রবীভূত করতে হয়, সেটা শেখায়। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখনো আমার স্মৃতিতে এসে নাড়া দেয়। মাঝে মাঝে ভীষণভাবে মিস করি সেই সময়গুলো। তবে এটাও সত্য, পৃথিবীর পথে পথে অনেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন গবেষণা করেছি, তখন মনও খারাপ হয়েছে। আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার মান আরো অনেক বাড়াতে হবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েই যেন আমাদের তরুণরা বিশ্বমানের তরুণ হয়ে উঠতে পারে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।

শিক্ষকদের অনুভূতি ও প্রত্যাশা

ড. শারমিন মুস্তারী

অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে শুভেচ্ছা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০তম জন্মদিনে প্রত্যাশা—শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাবে, গবেষণায় ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে অনন্য হয়ে উঠবে এবং রাজনৈতিক দলের মতাদর্শে সংকুচিত হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে চাওয়া—চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা মাথায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয় তার গ্র্যাজুয়েটদের তৈরি করবে। বাংলাদেশের তরুণরা সব ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখে চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুলসংখ্যক তরুণকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা চিন্তা করে কর্মক্ষম করে তুলে দেশের সম্পদে পরিণত করতে হবে। কারিকুলাম প্রণয়নের সময় এআই, রোবোটিকসের মতো বিষয়গুলো মাথায় রেখে কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে। একই সঙ্গে মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষা থেকেও তারা যেন বিচ্যুত না হয়, তেমন কার্যক্রমও রাখতে হবে। তরুণদের মধ্যে একটা বড় অংশ হলো নারী। নারীর জন্য পক্ষপাতমুক্ত ও নিরাপদ বিশ্ববিদ্যালয় চাই, যা নিপীড়নমূলক প্রথা দূরীকরণে ভূমিকা রাখতে পারবে।

চাকসু প্রতিনিধিদের অনুভূতি, লক্ষ্য ও প্রত্যাশা

ইব্রাহিম হোসেন রনি

ভিপি, চাকসু

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ বছর পূর্তি আমাদের গৌরবের ইতিহাস, সংগ্রামের উত্তরাধিকার ও আগামী প্রজন্মের জন্য প্রেরণার বাতিঘর। একজন চাকসু প্রতিনিধি হিসেবে আমি একে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহযোগিতা ও আদর্শের মিলনস্থল হিসেবে দেখি। এই বিশ্ববিদ্যালয় কেবল জ্ঞানের আলয় নয়, এটি স্বাধীন চিন্তা, সংস্কৃতি ও নেতৃত্ব বিকাশের কেন্দ্র। শিক্ষার্থীদের অধিকার, কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রমে তাদের সক্রিয় সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা আমার লক্ষ্য। আমি চাই শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরি করে একটি অংশগ্রহণমূলক প্রশাসনিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চাই। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার প্রত্যাশা—চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ৬০ বছরের গৌরবময় ঐতিহ্যকে ধারণ করে আরো আধুনিক, গবেষণানির্ভর ও আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে এবং গড়ে তুলবে আগামীর আলোকিত বাংলাদেশ।

আইয়ুবুর রহমান তৌফিক

এজিএস, চাকসু

চবির ৬০ বছর পূর্তি হয়েছে, বয়সের কথা চিন্তা করলে দেশের অন্যতম বয়োবৃদ্ধ ক্যাম্পাস। জ্ঞান, গরিমা ও শিক্ষায় এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অনেক অবদান রেখেছে। তবুও আমাদের যে লক্ষ্য সেটি অর্জিত হয়নি। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও আমরা নানা অবহেলার শিকার। ৩৫ বছরের বেশি সময় পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্র আলোর মুখ দেখেছে, সেটিও তরুয়া-ফরহাদদের রক্তের বিনিময়ে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আমাদের লক্ষ্য এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আরো উচ্চতম স্থানে নিয়ে যাওয়া। শিক্ষার্থী ও দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হবে সত্যিকারের মানুষ সৃষ্টির কারখানা, যারা এ দেশের জনমানুষের কল্যাণের ব্রত নিয়ে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ৬০ বছর পূর্তিতে সাবেক ও বর্তমান সবাইকে অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সব চবিয়ান ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আরো উজ্জ্বলতম স্থানে পৌঁছে দেব, এমনটাই প্রত্যাশা।

নাহিমা আক্তার দীপা

ছাত্রীকল্যাণ সম্পাদক, চাকসু

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ বছরের যাত্রা জ্ঞানের আলো, স্বাধীন চিন্তা ও মানবিক মূল্যবোধের এক গৌরবময় ইতিহাস। চাকসুর প্রতিনিধি হিসেবে আমি এই হীরক জয়ন্তীকে দেখি শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের সমন্বিত উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে। আমার লক্ষ্য একটি নিরাপদ, সুন্দর ও নারীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ে তোলা, যেখানে মাতৃত্বকালীন ছুটি, যৌন হয়রানি ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধ, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও ছাত্রীকল্যাণে কার্যকর পদক্ষেপ থাকবে। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার প্রত্যাশা—এই হীরক জয়ন্তী হোক বাস্তব উন্নয়নের সূচনা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবাসন সমস্যা সমাধান, গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টে সহায়ক উদ্যোগ এবং শ্রেণিকক্ষ ও অবকাঠামো উন্নয়নে কার্যকর পরিকল্পনা নিক—এটাই আমাদের প্রজন্মের চাওয়া।

শিক্ষার্থীদের ভাবনা

জানে আলম, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ

এবং সভাপতি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ৬০ হতে চলেছে। প্রশ্ন হলো—আগামী পাঁচ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়টি কী অর্জন করতে চায়, সে বিষয়ে কি কেউ ভাবছে? এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলায়তনের কথা বলে শেষ করা যাবে না। পেছনের কারণ নিয়ে অভিযোগ করে লাভ নেই। মানুষ স্বপ্ন দেখে, কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠানকে এগোতে হয় পরিকল্পনা ও লক্ষ্য নিয়ে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা—সবার মধ্যেই এক ধরনের সূক্ষ্ম ভালোবাসা ও টান কাজ করে। এখন প্রয়োজন সেই টানকে আরো প্রবহমান ও কার্যকর করে তোলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি দূরদর্শী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা জরুরি, যা বর্তমান ও সাবেক সবাইকে এক সুতোয় বাঁধবে। শিক্ষার্থীদের ত্যাগ ও সংগ্রামের বিনিময়ে যে নতুন সুযোগ এসেছে, তাকে সম্মান জানাতে এবং সার্থক করতে প্রত্যেককে নিজের অবস্থান থেকে উদ্যোগ নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি মানুষ যেন মনে করে—‘এই বিশ্ববিদ্যালয় আমার।’

পারমিতা চাকমা

শিক্ষার্থী, নাট্যকলা বিভাগ, ২০১৯-২০২০ সেশন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ বছর পূর্তি আমাদের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য গর্ব ও আবেগের বিষয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় পাঠ্যজ্ঞানের পাশাপাশি আমাকে দিয়েছে চিন্তা, নেতৃত্ব, সাহস ও সামাজিক দায়িত্ববোধের শিক্ষা। ক্যাম্পাসের সংস্কৃতি, সাহিত্য ও আন্দোলনের ইতিহাস আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। এখানে আমি শিখেছি, কীভাবে বৈচিত্র্যের মধ্যেও ঐক্য গড়ে তোলা যায় এবং কীভাবে নিজেদের অধিকারের জন্য লড়তে হয়। তবে সামনে আমার প্রত্যাশা—চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আরো গবেষণানির্ভর, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যময় ও আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আরো সুযোগ সৃষ্টি, মানসম্মত আবাসন ও নিরাপত্তা জোরদার হবে, শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ক আরো সহযোগিতামূলক হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হোক দেশের গর্ব ও বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় শুধু জ্ঞানের নয়, মানবিক মূল্যবোধেরও বাতিঘর হয়ে উঠুক, যেখানে থাকবে না জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও শ্রেণিগত কোনো বৈষম্য-বিদ্বেষ।

শিউলী ত্রিপুরা

শিক্ষার্থী, চারুকলা ইনস্টিটিউট, ২০২২-২৩ সেশন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নামটি উচ্চারণ করলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে সবুজে মোড়া পাহাড়, পাখির কলতান আর দূর থেকে ভেসে আসা শাটল ট্রেনের শব্দ। প্রকৃতির কোলে বসে গড়ে ওঠা ২৩১২ দশমিক ৩২ একরের এই বিশ্ববিদ্যালয় যেন এক জীবন্ত কবিতা, যেখানে প্রতিটি গাছ, প্রতিটি পথ বলে যায় জ্ঞানের গল্প, স্বপ্নের গল্প। আমি চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের সীমা পেরিয়ে লাইব্রেরির নিস্তব্ধ কোণে শিক্ষক ও সহপাঠীর সহযোগিতায় নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে; পড়াশোনার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে অংশ নিয়ে নিজেকে আরো সংবেদনশীল ও সৃজনশীল করে তুলতে। বিতর্কসভা, সাহিত্য আসর, সংগীতানুষ্ঠান কিংবা বন্ধুর মিষ্টি হাসির আড্ডা—এসবের মধ্য দিয়ে আমি খুঁজে নিতে চাই জীবনের অর্থ ও আনন্দ। এখানে আমি শুধু পড়াশোনা নয়—নিজেকে চিনতে চাই, ভাবতে চাই, বড় হতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমার প্রত্যাশা মানসম্মত শিক্ষা ও আধুনিক পাঠদান পদ্ধতি এবং ক্যাম্পাসে মুক্তচিন্তা পরিবেশ, যেখানে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মতামতের সম্মান থাকবে। আমার বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠুক শতভাগ শিক্ষার্থীবান্ধব এবং বৈচিত্র্যের ধারক-বাহক।

ব্রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

ছাত্রশক্তি সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেল ঘোষণা

উপকূলের জ্ঞানদীপ থেকে বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান

জকসু নির্বাচনে শিবিরের প্যানেল ঘোষণা

‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ নামে বামপন্থি প্যানেল ঘোষণা

জাবিতে মিষ্টি বিতরণ ও হাসিনার প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর

ঘোষিত প্যানেলকে ‘ভাড়াটিয়া’ আখ্যা দিয়ে ছাত্রদলের একাংশের বিক্ষোভ

সাত কলেজের স্বাতন্ত্র্য ও ঐতিহ্য বজায় রাখার দাবি

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে কুবিতে শুকরানা সিজদাহ্

হাসিনার ফাঁসির রায়ে ঢাবিতে ছাত্র-জনতার উল্লাস, মিষ্টি বিতরণ