ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্র সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার বিচার দাবির আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এবং পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক।
ইবির আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নাসির উদ্দিন মিঝির ওই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ছড়িয়ে পড়ে।
অডিও ক্লিপে ওই শিক্ষককে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি কালকে এই মেয়েকে মাইক দিছো কেন? এই মেয়ে কে? এই মেয়ের আল কুরআনে কি? মাইক দিছে কে ওর হাতে? ডিপার্টমেন্টকে ধ্বংস করছো, না? বেশি বাড়ছো, না? ডিপার্টমেন্টকে ধ্বংস করার অধিকার কে দিছে তোকে? কোন মেয়ে সে?’
অডিওতে আরো শোনা যায়, ‘তোরে আমি ডাকছি আন্দোলনের সময়? তোকে কে এত বড় সাহস দিছে যে তুই বিভাগের ওপরে কথা বলিস? কী লাইন তোর? আমার বিভাগের যদি কোনো ছাত্রী হতো, আমার কোনো আপত্তি ছিল না। কোথাকার কোন একটা মৃত পোলা, যাই হোক সে তো চলেই গেছে। হাইয়ান, ইনসান না হাইয়ান নিয়ে গেছে ওখানে। আমি আল কুরআনের টিচার, ওখানে আমার সাথে গেছে জিন্সের প্যান্টের সাথে গেঞ্জি পড়া মেয়ে।’
এই অডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন ওই শিক্ষক। সাবেক সহ-সমন্বয়ক সাজাতুল্লাহ শেখ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘স্যারের মুখে এরকম বক্তব্য শুনে আমি ব্যথিত। সব ছাত্রীই তো মেয়ের মতো হওয়ার কথা ছিল। সেখানে এ রকম উচ্চারণ অযোগ্য শব্দ। আর বিভাগের শহীদ ছাত্রকে নিয়ে ওরকম তাচ্ছিল্য করে মন্তব্য না করলেও পারতেন স্যার। আহ সাজিদ।’
আরেক শিক্ষার্থী রাইসা বিনতে রাশিদা লিখেছেন, ‘এমন উচ্চারণ একজন অধ্যাপকের মুখে শোভা পায় না। পুরো রেকর্ডটা প্রকাশ করা উচিত, উনি কেন এমন রেগে গেলেন। কী কারণে, আর তাকে ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং ক্ষমা চেয়ে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে।’
অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক নাসির উদ্দিন মিঝি আমার দেশকে বলেন, ‘যে ছেলেটা মারা গেছে, সে ধার্মিক ও আলেম পরিবারের। সেদিন ছেলেটার বাড়িতে একটা মেয়ে যায়। এ কারণে ওই ছেলের পরিবার বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। এ ছাড়া কোনো মেয়ে গেলে আমার আপত্তি ছিল না। তবে তখন আমার প্রচণ্ড রাগ ও মাথা গরম থাকায় আমি এ রকম বলে ফেলেছি। এমন শব্দ চয়ন করা আমার ঠিক হয়নি, আমি তার জন্য দুঃখিত।’