রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন পাঁচ শিক্ষার্থী। টানা ২১ ঘণ্টা ধরে অনশনে থাকায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তারা। এর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় দুই শিক্ষার্থীকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। এর আগে টানা চারদিন ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্যালাইন দেওয়া হয়। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব এসে তাদের খোঁজ নেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তাদের।
এদিকে শিক্ষার্থীরা বলছেন, “প্রশাসন শুধু আমাদের আশ্বাসই দিচ্ছে, কার্যকর কোনো পদক্ষেপ তারা নিচ্ছে না।”
অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন: চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মো. সুমন আলী, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইকরা, একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী হুমাইরা, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ইমন ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাদিক।
এ সময় রাইসুল বলেন, “আমাদের এক দফা দাবি ছিল বহিরাগত সভাপতির অপসারণ। আমরা চাই আমাদের বিভাগের সভাপতি হবে আমাদের বিভাগ থেকেই। আমরা গতকাল প্রশাসনের সঙ্গে বসেছিলাম, কিন্তু তারা বহিরাগত চেয়ারম্যানকে বহাল রাখতে চায়। তাই আমরা গতকাল থেকে অনশনে বসেছি। আমাদের কয়েকজন অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত তাকে অপসারণ করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে।”
এ সময় বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী জান্নাত জামান বলেন, “আমরা গতকাল প্রশাসনের সঙ্গে বসেছিলাম কিন্তু তারা আমাদেরকে কোনো রকম আশ্বাস দেয়নি। তারা আরো সময় চেয়েছেন। তারা আমাদেরকে বলেছে বর্তমান সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে তাকে মেনে নেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু আমরা তাকে চাই না। যেহেতু আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না, আমাদের আন্দোলন চলবে। তাকে অপসারণ না করা পর্যন্ত অনশন চলবে।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “একটা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে আমার দায়িত্ব সকল বিভাগ যেন ভালোভাবে চলে সেটা দেখা। সেটার জন্য আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা সমাধান বের করার চেষ্টা করছি। একটা সমাধান বের হবে দ্রুতই। এখন ইস্যুটা হচ্ছে, এই কাজগুলো করতে গেলে যে সময়টুকু লাগে, সেটা তো আমাদের দিতে হবে।”
প্রসঙ্গত, গতকাল রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীবের সঙ্গে এক আলোচনায় বসেন শিক্ষার্থীরা। তবে কোনো রকম আশ্বাস না পাওয়ায় তারা আমরণ অনশনে বসেছেন বলে জানিয়েছেন। প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের রাইসুল মাহমুদ।