হোম > জাতীয়

মাইক ব্যবহারে প্রার্থীদের বাধা তুলে নিল ইসি

গাজী শাহনেওয়াজ

আসন্ন সংসদ নির্বাচনের প্রচারে শব্দযন্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রার্থীদের ওপর থেকে সব ধরনের বাধা তুলে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে বর্তমানে একটি সংসদীয় আসনে প্রার্থীরা যত খুশি মাইক কাজে লাগাতে পারবেন। এর জন্য সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা-২০২৫-এ আমূল সংশোধন এনে এ সুযোগ দিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থা ইসি।

আগে একটি সংসদীয় আসনে প্রচারে একজন প্রার্থী দৈনিক সর্বোচ্চ তিনটির বেশি মাইক ব্যবহার করতে পারতেন না। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইসি তাদের কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসেছে। একই সঙ্গে, কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনে জরিমানা কমিয়ে আনা হয়েছে। আগের নির্ধারিত জরিমানা ছিল এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। সেখান থেকে ৫০ হাজার টাকা কমিয়ে জরিমানা এখন এক লাখ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া গণপ্রনিধিত্ব আধ্যাদেশ-১৯৭২-এ কিছু সংশোধন এনেছে ইসি। ইসির দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার আমার দেশকে জানান, নির্বাচনি প্রচারে কিছু শর্ত শিথিল করা হয়েছে। প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের জরিমানার হার কমানো হয়েছে। অনুরূপভাবে, জনসভার জন্য শব্দযন্ত্রের ব্যবহার নির্ধারণ করে সাধারণ প্রচারে মাইকিংসহ সব ধরনের প্রচারে বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন উৎসবমুখর হোক এমন বিবেচনায় আচরণ বিধিমালায় সংশোধন আনা হয়েছে।

ইসির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা নেই, এমন কিছু কর্মকর্তার পরামর্শে চলছে নাসির উদ্দিন কমিশনের নির্বাচনের সব কার্যক্রম। ফলে পদে পদে ভুল এবং অনভিজ্ঞতার ছাপ ফুটে উঠেছে। আরপিও ও রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় গুরুতর ভুলের কারণে দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসে নানাভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন তারা। কিন্তু এরপরও ওই অযোগ্য কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। এ নিয়েও ইসির বিরুদ্ধে যোগ্য কর্মকর্তাদের ক্ষোভ বাড়ছে।

এদিকে, জুলাই চেতনার পরিপন্থি কর্মকর্তারা সচিবালয়ে বসে নানাভাবে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমনকি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা নিয়ে ঝুঁকি বাড়ছে। অযোগ্য কর্মকর্তাদের ওপরে ভর করায় ইসির সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

ত্রয়োদশ সংসদের ভোটগ্রহণের তফসিলে মারাত্মক ভুল রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, আরপিওতে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সর্বোচ্চ সময় রাখার কথা বলা আছে ৫ (পাঁচ) দিন। তবে, ঘোষিত তফসিলে রাখা হয়েছে ৭ দিন। এমন বিতর্কিত ও ভুলেভরা তফসিলে ইসিকে এখন পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। তবুও ওই বিতর্কিত কর্মকর্তাদের প্রতিই আস্থা ইসির।

একটি নির্বাচন পরিচালনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর শাখা নির্বাচন সহায়তা ও সরবরাহ অধিশাখা-২। এই শাখাটি চলছে বিতর্কিত ও অদক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে। নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়াল তৈরি করা হচ্ছে, সেখানেও ভুলে ভরা। একজন নির্বাচন কমিশনার নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমার দেশের কাছে আফসোস করে বলেন, আমি চেষ্টা করেও বিতর্কিত কর্মকর্তাদের কমিশন থেকে সরাতে পারলাম না। এ জন্য দুঃখিত।

ইসি থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, নির্বাচনি প্রচারে একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ তিনটি মাইক ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু যেদিন জনসভা থাকত ওই মাইকগুলো সেখানেই ব্যবহার করা যেত। এতে রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে পড়েছিল ইসি। পরে আরচণ বিধিতে পরিবর্তন আনা কমিশন।

সংশোধিত আচরণ বিধিমালা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, একজন প্রার্থী যত খুশি তার সংসদীয় আসনে শব্দযন্ত্র ব্যবহার করে ভোটের প্রচার চালাতে পারবেন। একইভাবে, বিলবোর্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করা হয়েছে। অনুরূপভাবে, একটি রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে এ অপরাধে ওই দল বা প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশন দেড় লাখ টাকা জরিমানা করতে পারতেন। তবে, সেখানে সংশোধন এনে জরিমানা ১ লাখ টাকা করা হয়েছে।

ইসির দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা জানান, শুধু আচরণবিধিতে সংশোধনী আনা হয়নি, আরপিওতেও কিছু বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। নিষিদ্ধ দল ও তাদের সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রার্থী দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী চেতনার কর্মকর্তাদের পরামর্শে বর্তমান কমিশন সেখানেও নতজানুতার পরিচয় দিয়েছে। বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হলেই তিনি প্রার্থিতায় অযোগ্য হবেন না। অযোগ্য তখন হবেন, যখন ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে অভিযোগপত্র দাখিল হবে। এছাড়া কোনো আদালত কর্তৃক ফেরারি হলেও ওই ব্যক্তি নির্বাচন করতে পারবেন না।

অনুরূপভাবে, আগে বলা হয়েছিল, নির্বাচনে কোনো প্রার্থী অংশ নিলে তাকে মনোনয়নপত্র সশরীরে উপস্থিত হয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে। এখানেও শর্তে শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে প্রার্থী মনোনয়নপত্র সশরীরে উপস্থিত হয়ে দিতে না পারলেও সমস্যা নেই। প্রার্থী হওয়ার জন্য যিনি বা যারা প্রস্তাবক ও সমর্থক হবেন তারাও সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। তবে, প্রস্তাব ও সমর্থককে অবশ্যই ওই সংসদীয় আসনের ভোটার হতে হবে। অভিযোগ উঠেছে, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দলীয় জোট এবং বিগত তিনটি সংসদের গৃহপালিত বিরোধী রাজনৈতিক দলকে ভোটের মাঠে সুযোগ দিতে কমিশন আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তাদের পরামর্শে এই সুযোগ দিয়েছে।

গণমাধ্যমের ওপর হামলার ঘটনায় প্রেস সচিবের দুঃখপ্রকাশ

কোনো নির্দেশনা ও প্ররোচনায় পা না দেয়ার অনুরোধ ইনকিলাব মঞ্চের

সন্ধ্যায় দেশে ফেরার পর যেখানে নেয়া হবে হাদির লাশ

হাদির হত্যাকারীদের শাস্তি চেয়ে উত্তরায় বিক্ষোভ

হাদির মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের শোক প্রকাশ

উপকূলবাসীর স্বাস্থ্যসেবায় ‘শহীদ ওসমান হাদি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স’

হাদির লাশ নেওয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে

লাল সবুজের কফিনে সিঙ্গাপুর থেকে দেশের পথে হাদি

সন্ধ্যা ৬টায় শাহজালালে নামবে হাদির লাশ বহনকারী বিমান

সরকারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন মাহমুদুর রহমান