হোম > জাতীয়

বাংলা সংস্কৃতির বহুত্ব ও বৈচিত্র্য

ড. ওয়াকিল আহমদ

আমাদের সংস্কৃতিতে চারটি সভ্যতার উপাদান রয়েছে, সেগুলো হলোÑঅনার্য, আর্য, মুসলিম ও পাশ্চাত্য সভ্যতা। অস্ট্রিক, দ্রাবিড়, ভোটচীনীয়, নেগ্রিটো, আলপানীয় নৃগোষ্ঠী হলো আদিবাসী। নদীবাহিত পলি এবং সমুদ্রজ প্রবাল জমে প্রাগৈতিহাসিক যুগে ব-দ্বীপ সদৃশ জনমানবশূন্য যে বঙ্গভূমির উৎপত্তি হয়, তাতে বাহির থেকে এসে এরাই প্রথম বসতি স্থাপন করেছিল। এগুলোর মধ্যে সিন্ধুর ‘দ্রাবিড় সভ্যতা’ ছিল উন্নত। এরপর পশ্চিম এশিয়ার আল্পস পর্বত থেকে একদল যাযাবর নরগোষ্ঠীর আগমন ঘটে, এরা নিজেদের আর্য এবং আদিবাসীদের অনার্য নামে অভিহিত করে। এরা উন্নত বৈদিক ভাষা ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতির অধিকারী ছিল। এর প্রায় তিন হাজার বছর পরে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে মুসলিমরা আগমন করে এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল ও বসতি স্থাপন করে প্রায় ৬০০ বছর রাজত্ব করে। এদের ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি ছিল সম্পূর্ণ নতুন ও উচ্চ মানসম্পন্ন। এরপর ইউরোপের বিভিন্ন জাতির আগমন ঘটে এবং শেষে ইংরেজ জাতি ঔপনিবেশ স্থাপন করে, কিন্তু বসতি স্থাপন করেনি। তারা প্রায় ২০০ বছর ভারত ও বাংলা শাসন করে। তাদের ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি অভিনব ছিল এবং শিক্ষাদীক্ষায়, জ্ঞানবিজ্ঞানে উন্নত ও অগ্রগামী ছিল। ১৯৪৭ সালে ইংরেজরা আন্দোলনের মুখে ভারত ও বাংলা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। তখন থেকে আমরা বঙ্গবাসী স্বাধীনতা ভোগ করে আসছি।

চার ভিন্ন যুগের চার ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর চার ভিন্ন সভ্যতার উপাদান নিয়েই আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য গড়ে ওঠে। চার ধারার সংস্কৃতির মধ্যে যে সংঘাত-সংঘর্ষ হয়নি এমনটি নয়, তবে কোনো একটি অন্যটিকে উৎখাত, অপসারিত অথবা নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি। আমাদের সংস্কৃতির মূলধারাটি হলো এসবের মিলন, মিশ্রণ, মিথস্ক্রিয়ার ফল। বাঙালি যেমন একটি ‘সংকর জাতি’, তার সংস্কৃতিতেও সংকরধর্ম রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘দিবে আর নিবে/ মিলিবে মিলাবে/ এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে।’

এরূপ লেনদেনের মাধ্যমে বঙ্গসংস্কৃতি গঠিত ও বিকশিত হয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন ও বিচিত্র উপাদানের মিলন, মিশ্রণ ও সংশ্লেষ ঘটেছে। সংকর জাতি রূপে কোনো কোনো ধারার নরগোষ্ঠী রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ আর্য-অনার্য, দ্রাবিড়, চীন, শক, হুন, মোগল, পাঠান জাতির ‘এক দেহে হলো লীন’Ñহওয়ার কথা বলেছেন। এটাই প্রকৃত সত্য। কবির তালিকায় ইংরেজ জাতির কথা নেই। কারণ তারা শাসন করেছে, বসতি স্থাপন করেনি।

ধর্মের দিক থেকে যেমনÑহিন্দু, বৌদ্ধ, ইসলাম, খ্রিষ্ট, প্রাণিপূজা, জড়বাদ টিকে আছে, তেমনি ধর্মের প্রতীক মন্দির, মঠ, বিহার, প্যাগোডা, মসজিদ, গির্জা, পূজাবেদি, থান ইত্যাদিও টিকে আছে। ভাষার দিক থেকে অস্ট্রিক, দ্রাবিড়, সংস্কৃত, পালি, আরবি, ফারসি, তুর্কি, ইংরেজি, পর্তুগিজ ইত্যাদি ভাষার উপাদান মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। আমাদের ধান ও মাছের অধিকাংশ নাম আস্ট্রিক-দ্রাবিড় ভাষাগত, বাঙালির মাছভাত, পান্তাভাত, শাকান্ন, পঞ্চব্যঞ্জন, ষোড়শব্যঞ্জন, পান-সুপারি ইত্যাদি খাদ্য ও সেবন সংস্কৃতির উৎস সেখানেই নিহিত। এটি হলো আদি ও মৌলিক সংস্কৃতি। আবার পোলাও-কোর্মা, কালিয়া-কোপ্তা, বিরিয়ানি, বাকরখানি ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্য মোগল-পাঠানের দান।

ভাষার তৎসম শব্দসমূহের উৎস সংস্কৃত; সংস্কৃত শব্দজাত অজস্র স্থান ও নদীর নামকরণ রয়েছে। আরবি-ফারসি ভাষার প্রভাব জীবনের নানা ক্ষেত্রে একাত্ম ও অবিচ্ছিন্ন হয়ে মিশে আছে। মুসলমান নরনারীর নামে আরবি-ফারসি শব্দেরই বাহুল্য। আইনের ভাষায় অজস্র আরবি-ফারসি শব্দ বিস্তার লাভ করেছে। ইংরেজি ভাষার প্রভাব দুনিয়া জোড়া; আমাদের ব্যবহারিক, বৌদ্ধিক ও শিক্ষাজীবনে সে ভাষার আধিপত্য দিনদিন বেড়েই চলেছে। প্যান্ট-শার্ট, কোট-হ্যাট, হেলমেট ইংরেজদের কাছ থেকে পেয়েছি। এগুলো আমদানিকৃত হলেও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অবিভাজ্য ও অপরিত্যাজ্য। এগুলো পৃথক বা পরিত্যাগ করার কথা ভাবা যায় না। যারা করেছে, তাদের শব্দভান্ডার দরিদ্র হয়েছে।

প্রাক-মুসলিম যুগে পুরুষেরা একবস্ত্র মালকোচ মেরে পরতো, গরিব ঘরের মেয়েরা পরতো একবস্ত্র শাড়ি, ধনী হলে শাড়ি ও কাঁচুলি। সেলাই বস্ত্র চালু ছিল না। নরনারীর সবরকমের সেলাই বস্ত্র মুসলিম সংস্কৃতির দান। সাধারণভাবে হিন্দু পুরুষরা ধুতিকে এবং মুসলমান পুরুষেরা লুঙ্গিকে প্রধান পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে গ্রহণ করে। এখন পায়জামা-পাঞ্জাবি উভয় পুরুষ পরিধান করে। লুঙ্গি বার্মিজদের জাতীয় পোশাক। বার্মিজরা সেলাই করে না, আমরা সেলাই করে পরিদান করি। সুতরাং খাদ্যদ্রব্য, পোশাক-পরিচ্ছদ সাংস্কৃতিক উপাদান আমরা সাঙ্গীকরণ করেছি, আত্তীকরণ করিনি। আত্তীকরণ করেছি ভাষার ক্ষেত্রে। বাংলা ভাষা সংস্কৃত, আরবি-ফারসি, ইংরেজি ভাষার কাছে নতি স্বীকার করেনি, বরং আমরা সেসব ভাষার শব্দ, পদবন্ধ, প্রবাদ, বাক্যরীতি, ব্যাকরণ, রূপকথা, পুরাণ কথা আত্তীকরণ করে ভাষাকে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করেছি। এসব নিয়ে আমাদের একটি সংকরসমৃদ্ধ বিচিত্র বিশাল সাংকৃতিক সম্পদ গড়ে উঠেছে। একমাত্র মাতৃভাষা বাংলা আমাদের নিজস্ব সম্পদ, যা জীবন দিয়ে হলেও রক্ষা করতে ও বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছি। এটাই আমাদের সবচেয়ে গৌরবের স্থল।

এদিকে আবহমানকালের ধর্মীয় ও সামাজিক রীতিনীতি, আচার-আচরণ, প্রথা, উৎসবাদীও বহাল আছে। মুসলমানের ঈদ-মহরম উৎসব, হিন্দুর পূজাপার্বণ, বৌদ্ধদের মাঘীপূর্ণিমা ও কঠিন চীবর উৎসব, খ্রিষ্টানদের বড়দিন উৎসব, চাকমা-মারমা নৃগোষ্ঠীর বৈসাবি উৎসব, মণিপুরীর বর্ণাঢ্য নৃত্যানুষ্ঠান, সাঁওতালি নাচগান প্রভৃতি বাংলাদেশের মাটিতে অবাধে উদযাপিত হয়। জন্ম-বিবাহ-মৃত্যু উপলক্ষে আচার-অনুষ্ঠান সব জাতের মানুষ স্বাধীনভাবে পালন করে, কেউ বাধা দেয় না, রাষ্ট্রীয় কোনো বিধিনিষেধ নেই, বরং একে অন্যের উৎসব অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে আনন্দ শেয়ার করে। হিন্দুদের দুর্গাপূজা-রথযাত্রায় এবং শিয়া মুসলমানদের তাজিয়া মিছিলে কে বা কারা ভিড় করল, তা কি কেউ কখনো বাছবিচার করে দেখেছেন? কাউকে কি কখনো বাধা দেওয়া হয়েছে? হিন্দু কামার-কুমারের তৈরি যন্ত্রপাতি ও হাঁড়িপাতিল সব সম্প্রদায়ের সব লোক ব্যবহার করে, আবার মুসলমান জোলার বোনা বস্ত্র ও দর্জির তৈরি পোশাক সবাই ব্যবহার করে। কেউ কখনো প্রশ্ন তোলেনি। সম্প্রদায়ভেদ আছে বলে বর্জন করেছে, এমন নজির ইতিহাসে নেই। এছাড়াও গ্রামগঞ্জের ধর্মীয় ও সামাজিক বহুবিধ মেলাতো সবার জন্য উন্মুক্ত। মেলাগুলো তো সবশ্রেণির মানুষের মিলনকেন্দ্র। এসব দৃষ্টান্তের মধ্যেই বাংলা সংস্কৃতির বৈচিত্র্য এবং বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের প্রসঙ্গ জড়িয়ে আছে। সাংস্কৃতিক তত্ত্বের বিচারেও তা সংগতিপূর্ণ। একটি বৃহৎ, সুষম ও সুগঠিত সমাজের বিচিত্র ধরনের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সহাবস্থান ও শান্তিপূর্ণ উপস্থিতি এরূপ তত্ত্বের মূলকথা। এটি এমন একটি আদর্শ যাতে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী পরস্পরের সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাপোষণ করে ও স্বতন্ত্র অস্তিত্বের স্বীকৃতি দেয়। এরূপ সুসংহত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কৃতিকে জাতির শক্তির ও উন্নতির উৎস হিসেবে দেখা হয়। এর সামষ্টিক রূপের মধ্যে দেশ ও জাতির নিজস্ব পরিচয়টিও বিশ্বমাঝারে প্রকাশ পায়।

এবার সংঘাত বা ঠোকাঠুকির কথা বলি। ইতিহাস সরল পথে চলে না, অনেক সময় বাঁক নেয়। হিন্দু-মুসলমান দুটি বড় ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে যবন-কাফের বাকবন্ধ নিয়ে মনোমালিন্য অতীতে ছিল, এখন তেমনটি নেই। মন্দির ভেঙে মসজিদ, মসজিদ ভেঙে মন্দির বানানোর অপ্রীতিকর ঘটনা অতীতে ঘটেছে। এ যুগেও কিছু কিছু ঘটছে। অতীতে ‘গো-হত্যা’ ও মসজিদের সামনে বাদ্য বাজানো নিয়ে দাঙ্গার মতো নারকীয় কাণ্ড ঘটেছে। এযুগেও হিন্দু-বৌদ্ধ মন্দির ভাঙচুরের কথা সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়।

আবার সম্প্রদায়ের অভ্যন্তরেও অন্তর্দ্বন্দ্বের টুকটাক বিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সম্প্রতি মাজার ভাঙচুর, বাউলদের সাধুসংঘের ওপর হামলা, কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের বিরোধিতার মতো ঘটনা সমাজে উত্তাপ ছড়িয়েছে। এগুলো বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাজ, বৃহত্তর সমাজের নয়। তারপরও এটি সমর্থনযোগ্য নয়। আমরা সমাজ-সংস্কৃতির বৈচিত্র্যে ও বহুত্ববাদে বিশ্বাস করি। সমাজ-সংস্কৃতির ঐক্য ও সংহতি ধরে রাখার দায়িত্ব দেশ-সমাজ-রাষ্ট্রের। ‘ইউনাইটেড উই স্ট্যান্ড, ডিভাইডেড উই ফল’ প্রবাদকে মিথ্যা করা যাবে নাÑএটা আমাদের আদর্শ ও প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত।

আমরা চাইলাম, আর ‘কুন’ বা হয়ে গেল এমনটা তো নয়। একটা গ্রহণযোগ্য ও টেকসই সমাধান বের করতে হবে, যাতে ব্যাধিটা ক্রনিক হয়ে না দাঁড়ায়। এ দেশে প্রায় ৯১ শতাংশ মুসলমানের বাস। মুসলিম সংস্কৃতিতে উৎসব কম। শরিয়তে নাচ-গান-বাদ্য Ñসবই নিষিদ্ধ। আমরা উপন্যাস পড়েছি অভিভাবকের দৃষ্টি এড়িয়ে, সিনেমা দেখেছি গোপনে। মাজার ভাঙার পেছনে যে অভিযোগ রয়েছে, তাহলোÑএগুলোতে গান-বাদ্য হয়, মাদকদ্রব্যের কারবার হয়, অনৈতিক-অসামাজিক কাজেরও অভিযোগ রয়েছে। যেসব মাজারে গান-বাদ্য চালু আছে, সেগুলো মূলত কাওয়ালি গানের আঙ্গিকে আধ্যাত্মিক চেতনাপ্রসূত। সাধারণ মানুষ আধ্যাত্মিক ভক্তির টানে এবং জাগতিক দুঃখকষ্ট, দৈন্য থেকে মুক্তি ও শান্তিলাভের আশায় মাজারমুখী হয়। সিলেটের এক মাজারের দানবক্সে দু-তিন মাস অন্তর অন্তর কোটি কোটি টাকার দান পড়ে। এমনকি স্বর্ণালঙ্কার ও জমির দলিলও দান পাওয়া যায়। এসব দান কারা করে, কেন করে? তাদের আশা-ভরসা কী, প্রাপ্তি কী?Ñআমরা তা জানি না। আমাদের ধারণা, এসব শতসহস্র মানুষ সমাজ, দেশ, রাষ্ট্র থেকে কোনো কিছু পায় না, আপৎবিপদে তাদের পাশে এসে কেউ দাঁড়ায় না। দুঃখ-কষ্ট, জ্বালা-যন্ত্রণা দেওয়ার লোক আছে, ভালোবাসার লোক নেই। জীবিত হোক, মৃত হোক, পীরকে তারা আধ্যাত্মিক গুরু ও ত্রাতা বলে মানে। তার কাছ থেকে শান্তি, স্বস্তি, নিরাপত্তার আশায় মাজারে ছুটে যায়, দোয়া-দরুদ পাঠ ও দান খয়রাত করে একপ্রকার মানসিক সান্ত্বনা খুঁজে পায়। সাধারণ মানুষ দূরের কথা, নগরের সভ্য নাগরিকরাও মানসিক করে ছুটে যান সিলেটের হজরত শাহজালালের মাজার জিয়ারত করতে। রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনি প্রচারের শুরুতে মাজার দর্শন করতে দেখা যায়। শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা ভারতে বহুকাল থেকে এরূপ মাজার-কালচার চলে আসছে। ভাঙচুর করে এসব বন্ধ করে দিলে লাখ লাখ লোকের আধ্যাত্মিক ও মানসিক আশ্রয় থাকে না। অন্যদিকে যারা মাজার-সংস্কৃতি লালন করেন, তাদেরও কিছু দায়দায়িত্ব আছে। মাজারকে কেন্দ্র করে কোনো প্রকার অনৈতিক, অসামাজিক অনাচার, নেশা বা দুর্নীতি হলে তা কেবল মাজার কেন, সমাজের সর্বস্তরে সেসব বন্ধ করতে হবে।

বাউল সাধক-শিল্পীরা, বিশেষ করে লালনপন্থিরা সাধুসঙ্গের আয়োজন করে ধর্মসাধনা ও মতবিনিময় করে থাকেন। গান-নাচ তাদের সাধনার অঙ্গ। তাদের ধর্মমত অবলম্বন করে গানগুলো রচিত হয়েছে ও হচ্ছে। বাউল একটি গায়ক সম্প্রদায়। লালন গানের মহিমা এমনই যে, জাতিসংঘ সেগুলোকে বিশ্ব-ঐতিহ্যের অঙ্গরূপে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাউলগান বাংলার সম্পূর্ণ নিজস্ব সম্পদ। চট্টগ্রামের মাইজভান্ডারি ও ফরিদপুরের মতুয়া ধর্মসম্প্রদায়ের ধর্মমত ও সংগীতচর্চার মধ্যেও একই চেতনা কাজ করে। গান-বাদ্যের মাধ্যমে তারা আধ্যাত্মিক মুক্তির সন্ধান করেন। আমরা যদি এসব বন্ধ বা উচ্ছেদ করি, তাহলে সাংস্কৃতিক বহুত্ব ও বৈচিত্র্য থাকে কী? যদি অনৈতিক-অসামাজিক কিছু চিহ্ন থাকে, তবে তা সংস্কার করার প্রয়োজন আছে। এ ব্যাপারে ক্ষুদ্র ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোকে নজর দিতে হবে। হামলা-মামলা চালিয়ে বা ভাঙচুর করে নয়, একত্রে বসে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য ও টেকসই সমাধান বের করতে হবে। আর এটাই হবে শুভবুদ্ধির কাজ।

বাংলাদেশে অতিক্ষুদ্রসংখ্যক কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের লোক বাস করেন। তারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন না, ধর্মীয় নেতা মির্জা গোলাম আহমদকে একজন ‘নবী’ হিসেবে দাবি করেন। এজন্য শরিয়তপন্থিদের দাবিÑকাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। এখানেও সংঘাতের পথে না গিয়ে সংলাপের মাধ্যমে একটা সুষ্ঠু সমাধান বের করা সংগত হবে। পরিহার বা বর্জনের নীতি গ্রহণ করলে আমরা অনেক কিছু হারাবো, অনেক আদর্শ থেকে বিচ্যুত হবো এবং একটি দুর্বল ও কূপমণ্ডুক জাতিতে পরিণত হব। আমাদের সংস্কৃতি একমুখী হয়ে পড়বে। উচ্ছেদ বা বিনাশ সমস্যা সমাধানের পথ নয়, শত্রুকে মিত্র এবং পরকে আপন করাই উত্তম পন্থা। তরুণদের কাছে আমার সব রকমের ফ্যাসিজম এবং রেসিজম রোধ ও নির্মূল করার আবেদন রইল।

শনিবার খোলা থাকবে তফসিলি ব্যাংকের সকল শাখা

তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: প্রেস সচিব

পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময় বাড়লো

এভারকেয়ার হাসপাতাল এলাকায় ড্রোন উড়ানো নিষেধ

আ.লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে যা বললেন প্রেস সচিব

বড়দিনে আতশবাজি-ফানুস-বেলুন উড়ানো নিষিদ্ধ

অপেক্ষা না করে ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরি করছে বাংলাদেশ

বৃহস্পতিবার ৪ ঘণ্টা টোল ছাড়া চলা যাবে এক্সপ্রেসওয়েতে

জাপানে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে ৭ হাজারের বেশি বাংলাদেশ পণ্য

আগের সীমানায় ফিরল পাবনা ও ফরিদপুরের আসন