সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা মামুনুর রশীদ
আওয়ামী লীগের পূনর্বাসনের বিরোধীতা করে কথা বলার কারণে আমাকে জঙ্গী বানিয়ে ভারতে পাচার করার হুমকি দেয় অপহরণকারীরা। তাদের বিষয়ে মুখ বন্ধ না রাখলে পরিবারসহ হত্যার হুমকি দিয়ে পূর্বাচলে স্টেডিয়ামের পাশে আমাকে ফেলে রেখে যায়।
শনিবার জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অপহরণ, অমানবিক নির্যাতন ও হুমকির বিষয়ে সাংবাদিকদের জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর তুরাগ থেকে নিখোঁজের ১০৪ ঘন্টা পর পূর্বাচলের নির্জন জায়গা থেকে উদ্ধার হয় মাওলানা মামুনুর রশীদ।
মামুনুর রশিদ বলেন, তুরাগ থেকে রিকশা ও মাইক্রো বাস যোগে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর জ্ঞান ফেরার পর দেখি একটা অন্ধকার রুমে আমি চেয়ারে বসা এবং আমার হাত-পা বাঁধা। কিছুক্ষন পর ২ জন লোক আমার সামনে এসে আমার আমার ফোনের পাসওয়ার্ড চায়। আমি পায়ওয়ার্ড দিতে না চাইলে আমার দাড়ি ধরে ৩/৪ টা চড় মারে। তারপর আমি মার খাওয়ার ভয়ে পাসওয়ার্ড দিয়ে দেই। ওরা আমার ফোন চেক করে সাব্বিরসহ সাব্বিরের সহযোগী অন্যান্যদের আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতার ছবি এবং ভিডিও পায় এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক তথ্য পায়। সাব্বির হোসেন হলেন উত্তরা জোনের সাবেক প্রজন্মলীগ সভাপতি । যিনি বর্তমানে যুবশক্তির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে থাকেন এবং তুরাগ থানা যুবশক্তির গ্রুপেও রয়েছেন।
ফোনে আওয়ামী লীগের তথ্য পাওয়ায় আমাকে অনেক গালিগালাজ করতে থাকে। তারপর আমাকে বলে আওয়ামী লীগ যদি এনসিপি ও যুবশক্তিতে যোগ দেয় তাহলে তোর সমস্যা কোথায়? তুই কেন এগুলো নিয়ে কথা বলিস/লেখালিখি করিস? তোরে জঙ্গি হিসেবে ভারতে পাচার করে দিব।
এছাড়াও তিনি বলেন, হঠাৎ এসে ওরা বলছিল, তোকে নিয়ে বড বড় মিডিয়া নিউজ করে, সেলিব্রিটিরা পোস্ট করে তুই তো বিরাট বড় নেতা, তোকে পাচার করে দিব। তবে তোকে আমরা যদি ছেড়ে দিই, বাহিরে গিয়ে তোর সাথে আমরা যা যা করেছি তা বলতে পারবি না, বললে তোকে আর তোর পরিবারকে মেরে ফেলবো।
এসময় মামুনুর রশীদ তার পরিবার ও নিজের জীবন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বলে জানান। সংবাদ সম্মেলনে তার স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ফজরের পর রাজধানীর তুরাগের হানিফ আলী মোড় এলাকার বাসা থেকে হাটতে বের হয়ে নিখোঁজ হন মাওলানা মামুনুর রশীদ। এরপর ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার জুমার পর তাকে পূর্বাচল শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের পাশে নির্জন এলাকায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা উদ্ধার করেন।
তিনি তুরাগ থানা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে উত্তরার রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।