বাংলাদেশে ভূমি বিরোধ একটি দীর্ঘদিনের জটিল সামাজিক সমস্যা। উচ্চ জনসংখ্যার চাপ ও সীমিত সম্পদের এই দেশে ভূমি কেবল সম্পদ নয়, বরং জীবিকা, মর্যাদা ও ক্ষমতার প্রতীক। তাই ভূমি কেন্দ্রিক বিরোধ ও মামলা সামাজিক স্থিতিশীলতাকে ব্যাহত করছে। এই সংকট থেকে পরিত্রাণে সার্ভে ও সেটেলমেন্ট প্রশিক্ষণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
রোববার রাজধানীর ভূমি ভবনের কেন্দ্রীয় সেমিনার হলে ১৪১তম ‘সার্ভে ও সেটেলমেন্ট প্রশিক্ষণ কোর্সে’র সনদপত্র বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ এসব কথা বলেন। ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর আয়োজিত ৫২ দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণে বিসিএস (প্রশাসন, পুলিশ, বন ও রেলওয়ে) এবং বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের মোট ৬০ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
সিনিয়র সচিব বলেন, “সঠিক জরিপ ও নির্ভুল রেকর্ড থাকলে জমি সংক্রান্ত মামলা-মোকদ্দমা কমে আসে। এতে সাধারণ মানুষ যেমন হয়রানি থেকে রক্ষা পায়, তেমনি রাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থার ওপর চাপ হ্রাস পায়।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ডিজিটাল ভূমিসেবা নিশ্চিতে জিআইএস, জিপিএস, ড্রোন সার্ভে ও ডিজিটাল ম্যাপিংয়ের মতো আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। কর্মকর্তাদের পেশাগত দক্ষতা ও কারিগরি জ্ঞান ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বক্তারা বলেন, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করতে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার বিকল্প নেই। বিশেষ করে ভূমি সংক্রান্ত অনিয়ম ও জটিলতা সমাধানে এই ধরনের প্রশিক্ষণ অত্যন্ত সময়োপযোগী।
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) মোহাম্মদ ইউসুফ, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) এ.জে.এম. সালাহউদ্দীন নাগরী এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের ড. মো. মাহমুদ হাসান (গ্রেড-১)।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ও কোর্স পরিচালক মো. মমিনুর রশীদ। এসময় ভূমি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে অতিথিবৃন্দ প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন।