৩৩ শতাংশ নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে নারীপক্ষ। রোববার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে নারীপক্ষ’র নেত্রীরা জানান, ৩৩ শতাংশ নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের জন্যই ঐক্যমত কমিশন গঠন করা হয়েছে।
সংগঠনের সভাপতি গীতা দাসের সভাপতিত্বে সংগঠন সমূহের ৭ম জাতীয় সম্মেলনের প্রাপ্ত বিষয়সমূহ উপস্থাপন করেন অমিতা দে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন নারীপক্ষ’র সদস্য কামরুন্নাহার, রাশিদা হোসেন, প্রকল্প পরিচালক সামিয়া আফরীন।
গীতা দাস বলেন, সহিংসতামুক্ত নারী জীবন সবার কাম্য। সমাজের সকল ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর দায়িত্ব নারী-পুরুষ, দলমত নির্বিশেষে সবার। মানবাধিকার লঙ্ঘন করার অধিকার সমাজে কারো নেই, এমনকি রাষ্ট্র সে অধিকার রাখে না। বাংলাদেশে বিভিন্ন বৈচিত্র্যের মানুষ রয়েছে। যেমন ধর্মীয় বৈচিত্র্য, লিঙ্গগত বৈচিত্র্য, ভাষাগত বৈচিত্র্যের মানুষ। তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। সমতায় তাদের অধিকার রয়েছে।
কামরুন্নাহার বলেন, নারীকে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে অধিকারসম্পন্ন নাগরিক ও মর্যাদাসম্পন্ন মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে নারীপক্ষ ৪২ বছর ধরে নিরলস ভাবে কাজ করছে। আমাদের এবারের সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল, নারী আন্দোলনের স্বতন্ত্র ধারা বিনির্মাণ, চলমান রাখা এবং বিস্তৃতি ঘটানো।
অমিতা দে বলেন, আদিবাসী নারী নেত্রী, শ্রমিক আন্দোলন এবং জুলাই আন্দোলনের নারী শিক্ষার্থী তাদের সংগ্রামের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে প্ল্যানারি অধিবেশনগুলোতে।
এবারের সম্মেলনে ৮টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশ গুলোর মধ্যে রয়েছে, সকল ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ও নারীর স্বাধীন ও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর প্রতিষ্ঠায় সংগঠিত হওয়া, আওয়াজ তোলা, যথাযথ জায়গায় দাবি উপস্থাপন এবং দেন-দরবার করা, নারী আন্দোলনের স্বতন্ত্র ধারা বিনির্মাণে সর্বস্তরে সহায়ক শক্তি বৃদ্ধি করা এবং তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, নারী আন্দোলনের জন্য সম্পদ আহরণ ও সম্ভাব্য উৎস যেমন: মানবসম্পদ, নেটওয়ার্ক, বিভিন্ন জোট, স্থানীয় সম্পদ, প্রযুক্তিগত জ্ঞান ইত্যাদি চিহ্নিতকরণে ও অর্জনে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা, বৈচিত্র্যকে মাঝে ঐক্য প্রতিষ্ঠায় ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা, বিভিন্ন অধিকার আন্দোলনের সাথে কার্যকর সম্পর্ক স্থাপনের কৌশল হিসেবে বিভিন্ন উদ্যোগের, যেমন- শ্রম আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, যৌনকর্মীদের আন্দোলন এর সাথে নারী আন্দোলনকে সংযুক্ত করা, আন্তঃপ্রজন্মের মধ্যে যোগসূত্রতা স্থাপনের মাধ্যমে নারী আন্দোলনের ধারাকে চলমান রাখা, তৃণমূল নারী সংগঠনগুলোর নিজেদের আত্মমূল্যায়নের মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করে উত্তরণের পদক্ষেপ নেওয়া, নারী আন্দোলনের ইস্যুকে রাজনৈতিক দলের এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করা।