শাহবাগে জামায়াত-ইনকিলাব মঞ্চের অবস্থান
কার্যক্রম নিষিদ্ধ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঘোষিত লক ডাউন কর্মসূচি ও সন্ত্রাসীদের নাশকতা প্রতিহত করতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে এবং জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং ইনকিলাব মঞ্চ শক্ত অবস্থান নিয়েছে। অবস্থানকারীরা শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবি করেন। সেইসাথে রাজধানীতে নাশকতার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান দেশবাসীর কাছে।
বৃহস্পতিবার স্বৈরাচার শেখ হাসিনার রায়ের তারিখ ঘোষণার দিন সকাল থেকেই জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবির ঢাকা মহানগর, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল, ইনকিলাব মঞ্চ ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস এলায়েন্স অব বাংলাদেশ (পুসাবসহ)সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের নেতাকর্মীরা শাহবাগে মিছিল এবং মোটর সাইকেল শোডাউন করেন। পরে শাহবাগে অবস্থান নেয় জামায়াতের নেতাকর্মীরা ও ইনকলাব মঞ্চের সদস্যরা।
শাহবাগ মোড়ে অবস্থানকারীরা 'আবু সাঈদ - মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ', 'আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দিব না', 'লীগ ধর, জেলে ভর', 'হই হই রই রই, খুনি হাসিনা গেলি কই' ও 'যাদের নেত্রী দিল্লি পালায়,তারা আবার ভয় দেখায়' প্রভৃতি স্লোগান দেন।
এ সময় অবস্থানকারীরা আমার দেশকে জানান, কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের করা নাশকতার প্রতিবাদে তারা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। সেইসাথে তারা বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মানুষকে ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে। লকডাউন কর্মসূচি দিয়ে তারা এখন আর মাঠে নেই। তারা জানে বাংলাদেশের মানুষ তাদের প্রতিহত করবে। তাই তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। দেশে এসে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার সাহস পায় না। ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে।
এদিন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা এবং ১৭ নভেম্বরের রায়ে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির প্রাপ্য সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে ইনকিলাব মঞ্চ। সংগঠনটির মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদীর নেতৃত্বে শাহবাগ জাদুঘরের সামনে থেকে মিছিল বের করে তারা। মিছিলটি হাইকোর্ট ও গুলিস্তান আওয়ামী লীগ কার্যালয় প্রদক্ষিণ করে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানেই আওয়ামী সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিহত করতে অবস্থান নেয় ইনকিলাব মঞ্চ সদস্যরা।
শরিফ ওসমান বিন হাদি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, যে যার মতো করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনায় জড়িতদের আইনের হাতে তুলে দিন। আমরা ন্যায়বিচার চাই। আ.লীগতো আসলে নাই। আগামী কয়েকদিন তারা টাকা দিয়ে ভাড়া করা গুন্ডাদের মাধ্যমে যা করবে, আমরা তা প্রতিহত করব। দেশবাসী তা প্রতিহত করবে।
তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার মাধ্যমে ও শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নতুনভাবে পথচলা শুরু করবে। এই বিচারকার্য সম্পাদনের মাধ্যমে বাংলাদেশে সুস্থ ধারার রাজনীতির সূচনা হবে।
এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা (র্যাব-পুলিশ-বিজিবি) সকাল থেকেই সেখানে অবস্থান নিয়েছেন। মেট্রোরেল-এর স্টেশনগুলোতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যাতায়াতকারীদের দিয়াশলাইসহ ঝুঁকিপূর্ণ সরঞ্জাম নিয়ে মেট্রোরেল ভ্রমণ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
তবে লকডাউনের কোন প্রভাব শাহবাগে দেখা যায়নি। সকাল থেকেই রাজধানীর এই গুরুত্বপূর্ণ এলাকাটির যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সড়কে তুলনামূলকভাবে কম প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস থাকলেও রয়েছে গণপরিবহণ।