কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার অধিবেশন শুরু
তৃতীয়বারের মত জামায়াতে ইসলামীর আমির হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন ডা. শফিকুর রহমান। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার উদ্বোধনী অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেন তিনি। ২০২৬–২০২৮ মেয়াদের জন্য তাকে শপথ পড়ান জামায়াতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম।
এ সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ, কর্মপরিষদ ও মজলিসে শুরার সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দলের গঠনতন্ত্রের ধারা-১৫ অনুযায়ী গত ৯ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশের সদস্যদের (রুকনদের) গোপন ব্যালটের মাধ্যমে আমির পদে ভোট নেওয়া হয়। পরে ১ নভেম্বর সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত হিসেবে ডা. শফিকুর রহমানকে আমির হিসেবে নির্বাচিত করে ফল ঘোষণা করা হয়। এ নির্বাচনের জন্য বিদায়ী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যরা তিনজনের একটি প্যানেল নির্বাচন করেছিলেন। তবে নিয়মানুযায়ী ওই প্যানেলের অন্য সদস্যদের নাম ও ভোটের সংখ্যা জানায়নি দলটি।
শপথ গ্রহণ শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জামায়াত আমির বলেন, আমরা মজলুম জাতি। দুর্নীতি ও দু:শাসনের কারণে স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ আমরা গ্রহণ করতে পারিনি। গত সাড়ে ১৫ বছরে জাতি দু:শাসন পার করেছে। তিনি বলেন, মানুষ হিসেবে আমরা ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নই। এজন্য আমরা বারবার ক্ষমা চাইতেই থাকবো।
তিনি সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দলের স্বার্থ না দেখে জনগণের ভোটের প্রতি সম্মান জানিয়ে খোলামনে যেন আগামীর রাজনীতি করতে পারি-সেই তওফিক আমাদের আল্লাহ দান করুন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, নতুন বাংলাদেশের যে প্রত্যাশা জেগে উঠেছে, তা বাস্তবায়নের জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। রাজনৈতিক এবং মেজরিটি-মাইনোরিটির কোন বিভাজন করা হবে না।
এদিকে শুক্রবার উদ্বোধন হওয়া জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার অধিবেশন শনিবার শেষ হবে। এ সময় দলের নতুন সেক্রেটারি জেনারেলসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ও কর্ম পরিষদ গঠন হবে। শনিবার এসব কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।
সূত্র মতে, শফিকুর রহমান ছাত্রাবস্থায় ১৯৭৩ সালে জাসদ ছাত্রলীগের মাধ্যমে তার ছাত্ররাজনীতি শুরু করেন। পরে, ১৯৭৭ সালে ইসলামী ছাত্রশিবিরে যোগদান করেন। সিলেট মেডিকেলে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি প্রথমে ওই প্রতিষ্ঠানের শিবিরের সভাপতি ও পরে সিলেট শাখার সভাপতি হন। ১৯৮৪ সালে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করে তিনি সিলেট শহর, জেলা ও মহানগর আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, ২০১১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রথমে ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ও ২০১৬ সালে সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পান ডা. শফিক। আওয়ামী সরকারের চরম জুলুম-নির্যাতনের মধ্যে দায়িত্ব পালনের ধারাবাহিকতায় তিনি ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর প্রথম আমির নির্বাচিত হন। পরে ২০২২ সালে অক্টোবরে দ্বিতীয়বারের মতো আমির নির্বাচিত হয়ে তিনি ২০২৩-২০২৫ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন।