আপিল বিভাগের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরলেও আগামী নির্বাচন বর্তমান সরকারের অধীনেই চায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টন মোড়ে ‘বিদেশী কোম্পানির হাতে বন্দর না দেয়া, জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী টার্মিনাল চুক্তি বাতিল ও নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের দাবিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাইফুল হক বলেন, সাংবিধানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরতে আরো পাঁচ বছর সময় লাগবে। তবে নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বৈশিষ্ট্য মেনে কাজ করতে হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমরা প্রফেসর ইউনুস সরকারের অধীনে করতে চাই।
এই সরকারকে নিরপেক্ষ সরকার হিসেবে জনগণ দেখছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত ১৫ মাসে সরকার পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি। তাই নির্বাচন দিয়ে দ্রুত এই সরকারকে বিদায় নেওয়ার আহ্বান জানাই। রাজনৈতিক কমিটমেন্ট, ম্যান্ডেট ও জনসমর্থন আছে -এমন শক্তিশালী রাজনৈতিক সরকার ছাড়া দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত কোনভাবে রক্ষা করা যাবে না।
এসময় টার্মিনাল চুক্তিকে জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি উল্লেখ করে চুক্তিটি বাতিলের দাবি জানান সাইফুল হক। তিনি অভিযোগ করেন, আন্তর্জাতিক দরপত্র ছাড়াই তড়িঘড়ি করে চট্টগ্রাম ও কেরানীগঞ্জে দুটি কন্টেইনার টার্মিনাল বিদেশী কোম্পানির কাছে দেয়ার চুক্তি সই করেছে সরকার। যা জাতীয় স্বার্থবিরোধী।
এসব চুক্তি বর্তমান সরকারের এখতিয়ারের বাইরে। এই চুক্তি যদি দেশের স্বার্থে হয়, দেশের মানুষের উপকারের জন্য হয়, তবে চুক্তির প্রতিটি বিষয় মানুষের জানার অধিকার আছে। কিন্তু অতি গোপনীয়তা অবলম্বন করে দুই কোম্পানির কাছে সমুদ্র বন্দরকে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এই অধিকার আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে দেইনি।
দলটির সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কদিন পর দায়িত্বে থাকবে না। তখন এই চুক্তি নিয়ে যদি কোনো সমস্যা তৈরি হয় তাহলে এর জবাবদিহি করবে কে? এগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে হয়নি।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। প্রয়োজন হলে এরকম সিদ্ধান্ত জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার নেবে। এগুলো আমাদের অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ লাইফ লাইন। এই টার্মিনালের সঙ্গে অর্থনীতি জড়িত। তাই অবিলম্বে এই চুক্তি বাতিল করুন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে দলটি। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সদস্য সিকদার হারুন মাহমুদসহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।