জাতীয় নির্বাচন বানচাল করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই তফসিলের পরদিন শরিফ ওসমান হাদির ওপর ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, মূলত, এ জুলাই যোদ্ধাকে শুরুতেই টার্গেট করা হয়েছে। কুচক্রিরা আর কাদেরকে টার্গেট করেছে তা আমরা জানিনা। তবে তালিকা বেশ দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আসন্ন নির্বাচনে জাতীয় নেতা, জুলাই যোদ্ধা সহ সব প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে সবার জন্য প্রস্তুত করতে হবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ও ভয়ভীতিহীনভাবে ভোট দিতে পারে সে পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী যুব বিভাগ আয়োজিত যুব ম্যারাথনের সমাপনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, ভারত আমাদের স্বাধীনতা নয় বরং পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬৫ সালে যুদ্ধে লজ্জাজনক পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে আমাদেরকে সহযোগিতা করেছিলো। তারা আমাদের দেশের স্বাধীনতার-সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি না দিয়ে আওয়ামী বাকশালীদের মাধ্যমে দেশকে করদরাজ্যে পরিণত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছিলো। কিন্তু আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে সে অবস্থার অবসান হয়েছে।
তিনি ভারতের এমন ন্যক্কারজনক আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদ সহ সব মুক্তিযোদ্ধাকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় যুব বিভাগের সভাপতি ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১২ আসনের প্রার্থী সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১৪ আসনের প্রার্থী মোবারক হোসাইন, ঢাকা উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা, দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা-১৮ আসনের প্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক, ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী ডা. এস এম খালিদুজ্জামান, ঢাকা-১৬ আসনের প্রার্থী কর্নেল (অব.) আব্দুল বাতেন প্রমুখ।
পরওয়ার বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সেই ঐতিহাসিক স্থান, যেখানে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনী আমাদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের ভুলের স্বীকৃতি দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলো। কিন্তু প্রতিবেশী রাষ্ট্রের আধিপত্যবাধী মনোভাব ও তাদের এদেশীয় এজেন্টদের কারণে আমরা বিজয়ের স্বাদ পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারিনি এবং আমাদের স্বাধীনতাও সুরক্ষিত হয়নি। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, পাক বাহিনী সেদিন আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ না করে ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা জগজিৎ সিং আরোরার কাছে আত্মসমর্পন করেছিলো। মুক্তিযুদ্ধে সর্বাধিনায়ক জেনারেল এজি ওসমানী ছিলেন অনুপস্থিত। কেন অনুপস্থিত ছিলেন সে প্রশ্নের আজও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তাই পাক বাহিনীর আত্মসমর্থন ভারতীয় বাহিনীর কাছে বিবেচনায় প্রতিবেশী দেশটি ১৬ ডিসেম্বরকে তাদের বিজয় দিবস হিসাবে পালন করে। এর মাধ্যমে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছে।