দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের এই 'মাহেন্দ্রক্ষণে' কারও 'হঠকারিতার' সুযোগ নেই এবং আগামী ফেব্রুয়ারির সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনই কেবল অন্তর্বর্তী সরকারকে 'মুক্তি' দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক জননেতা সাইফুল হক।
শুক্রবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির গণমিছিলপূর্ব ঢাকা সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। জনগণের জীবন-জীবিকা নিশ্চিত, বাজার সিন্ডিকেট দমন, অবাধ নির্বাচনের জন্য প্রশাসন ঢেলে সাজানো, সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতকরণসহ আট দফা দাবিতে এই সমাবেশ ও গণ-মিছিলের আয়োজন করা হয়।
সাইফুল হক বলেন, বিচার ও সংস্কারের ধারায় আগামী ফেব্রুয়ারিতে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার পথকে প্রশস্ত করতে হবে এবং গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দল ও অংশীজনকে এই লক্ষ্যে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
পার্টির সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করেন, ক্ষমতা গ্রহণের পর সরকারের একাংশ নিজেরা যেমন লোভে পড়েছে, তেমনি গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের মধ্যেও তারা 'লোভ আর ক্ষমতা-লিপ্সা' জাগিয়ে তুলেছে। তিনি বলেন, "প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার অভাবে তারা রাজনৈতিক দল ও জনগণের নজিরবিহীন সমর্থনকে কাজে লাগাতে পারেনি, বরং এই সমর্থনকে তারা দুর্বলতা হিসাবে বিবেচনা করে এসেছে।"
প্রতিবিপ্লব-প্রতিঅভ্যুত্থানের আশঙ্কা:
সাইফুল হক উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের অকার্যকারিতায় সামাজিক নৈরাজ্য বাড়ছে। গত ১৪ মাসেও দেশ প্রতিবিপ্লব ও প্রতি-অভ্যুত্থানের আশঙ্কা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। সরকারের অদূরদর্শীতায় গণঅভ্যুত্থান-বিরোধী নানা অপশক্তির তৎপরতাও বাড়ছে। তিনি সতর্ক করেন, রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা রাজপথ বা এলাকা দখলের সহিংস প্রতিযোগিতায় পর্যবসিত হলে রাজনৈতিক নৈরাজ্য বৃদ্ধি পাবে এবং গণঅভ্যুত্থানের অর্জন পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ও সরকারের সদিচ্ছা:
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন, গণভোট ও জুলাই সনদের ভিত্তিতে দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের অনেকটা নির্ভর করছে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর। এ কারণে সরকারকে যাবতীয় পক্ষপাতমূলক ভূমিকা থেকে বেরিয়ে এসে সবাইকে আস্থায় নিয়ে অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ়চিত্ত ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
নির্বাচনে টাকার খেলা বন্ধের আহ্বান:
নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে সাইফুল হক বলেন, "নির্বাচনে আমরা আর কোনো টাকার খেলা দেখতে চাইনা। অতীতের মতো নির্বাচনে টাকার খেলা আর পেশী-শক্তির দৌরাত্ম্য চলতে দিলে আগামী সংসদও বিত্তবান আর ব্যবসায়ীদের ক্লাবে পরিণত হবে। তিনি গণঅভ্যুত্থানের অর্জন ধরে রাখতে দেশবাসীকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।