প্রতিবন্ধী স্কুল পরিদর্শনকালে জামায়াত আমির
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা সবার জন্য কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন দেখি। যেখানে অভিজাত শ্রেণিও কল্যাণ লাভ করবে, আবার সমাজের বঞ্চিত এবং পিছিয়ে পড়ারাও কল্যাণ পাবে।
বুধবার আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপল রাজধানীর কুড়িলে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের একটি বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, যেখানে কল্যাণ রাষ্ট্র আছে, সেখানে এই ধরনের ‘স্পেশাল নিড বেবির’ জন্য একজন মানুষকে তারা নিয়োগ দেয়, তার পুরো বেতন ভাতা, সুবিধাদি সব সরকার বহন করে। এ ব্যক্তিটা মাও হতে পারে, ওই সন্তানের বাবা কিংবা ভাইও হতে পারে।
তিনি সব নাগরিককে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি সংবেদনশীল, দায়িত্বশীল ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান এবং মানবিক সমাজ গঠনে সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সেখানে জামায়াত আমির শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান এবং তাদের শিক্ষাদান ও পরিচর্যার সামগ্রিক পরিবেশ প্রত্যক্ষ করেন। পরিদর্শনকালে তিনি অভিভাবক, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও শিক্ষক মণ্ডলীর অভিব্যক্তি, প্রয়োজন ও চ্যালেঞ্জসমূহ মনোযোগ সহকারে শোনেন।
এসময় জামায়াত আমির বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুদের নিষ্পাপ হাসি, শিক্ষার প্রতি আগ্রহ এবং অনন্ত সম্ভাবনা আমার হৃদয় গভীরভাবে স্পর্শ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক, শিক্ষক মণ্ডলী ও অভিভাবকদের ত্যাগ, মমত্ববোধ ও ধৈর্য সত্যিই প্রশংসনীয়। তাদের ধৈর্য, ত্যাগ ও নিষ্ঠাকে সমাজের জন্য অনুকরণীয়। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
তিনি আরো বলেন, আমার বক্তব্যগুলোতে সাধারণত আমি বলি যে, আমি অভিজাত শ্রেণির মুখপাত্র নই, সমাজে যারা বিভিন্নভাবে প্রতিষ্ঠিত আমি তাদেরও মুখপাত্র নই। কারণ তারা তাদের জন্য যথেষ্ট। আমার সমস্ত পরিশ্রম, চিন্তা, মেধা সমাজের ঐ অংশের জন্য যারা বিভিন্ন দিক থেকে কষ্টে আছে এবং বঞ্চিত আছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমি প্রতিবন্ধী বলব না, যদিও এখানে লেখা আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। আমি বলব ‘স্পেশাল নিড বেবিজ’- যাদের প্রতি সমাজের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এই বেবিদের ব্যাপারে একজন মা বলেছেন, ‘আমার সমাজ তো আমাকে দেখেই একটু অন্যভাবে, স্বয়ং আমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনও আমাকে ভিন্নভাবে দেখে।’ তিনি বলেন, আসলে এইগুলা আমাদের অজ্ঞতা, মূর্খতা। আমরা যদি অন্যভাবে দেখতাম, তাহলে দেখতাম যে এই মা বিশাল একটা সামাজিক দায়িত্ব পালন করছেন। আমাদের সবার উচিত তাকে ফুল সাপোর্ট দেওয়া। তিনি যাতে আরো সুন্দরভাবে ওই বেবিটাকে আদরে, যত্নে, ভালোবাসায় বড় করতে পারেন। এখানে সমাজের দায়িত্ব, সমাজের এই বাচ্চাদেরকে বাছাই করে যার যেদিকে সম্ভাবনা আছে, তাকে সেইদিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
পরিদর্শনকালে জামায়াত আমিরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক ড. ইঞ্জিনিয়ার জুবায়ের আহমেদ এবং খিলক্ষেত থানা জামায়াতের আমির হাসনাইন আহমেদ।