দেশের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ট্রান্স ন্যাশনাল ইসলাম বিদ্বেষীদের সর্বাত্মক ষড়যন্ত্র বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।
মঙ্গলবার জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে সম্পৃক্ত ছাত্রজনতা গঠিত প্রথম দল জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব গালিব ইহসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
দলটির দাবি, সোমবার অমর একুশে বইমেলায় দুই জন ছাত্রকে ‘জয়বাংলা’ স্লোগান দিয়ে মারধর করে দেশে জঙ্গিবাদের অপবাদ ছড়িয়ে দেয়ার অপচেষ্টা হয়েছে। এটি দেশের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। যার সঙ্গে ট্রান্স ন্যাশনাল ইসলাম বিদ্বেষীদের বয়ান ও অপপ্রচারের হুবহু মিল আছে। ফলে বইমেলার ঘটনাকে বাংলাদেশের মুসলমানদের ‘হত্যাকারী’ প্রমাণ করার ষড়যন্ত্র বলে গণ্য করা সময়ের দাবি।
বিবৃতিতে বলা হয়, অমর একুশে বইমেলার ১২৮ নম্বর স্টলে সব্যসাচী প্রকাশনী কুখ্যাত ইসলাম বিদ্বেষী ও জুলাই-আগস্ট গণহত্যার সমর্থক তসলিমা নাসরিনের ‘‘চুম্বন’’ নামে একটি বই বিক্রি করে আসছিল। সচেতন তরুণ নাগরিকরা এটি জানতে পেরে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদ করেন।
এর প্রেক্ষিতে বই মেলার মাঠের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সব্যসাচী প্রকাশনীর প্রকাশক মেহরান সানজানাকে তসলিমা নাসরিনের বই সরিয়ে নিতে বলেন। কিন্তু মেহরান সানজানা নিজের অপরাধকে আড়াল করতে ফেসবুকে মতলবি প্রচারণা চালান যে, ‘সব্যসাচী প্রকাশনীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে’। তিনি স্টল থেকে তসলিমা নাসরিনের বইও সরাননি।
ফলে সোমবার সন্ধ্যায় কয়েকজন ছাত্র মেলায় গিয়ে দেখতে পায় সব্যসাচী প্রকাশনী তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রি করছে। তখন তারা জিজ্ঞেস করেন, ‘একজন স্বঘোষিত নাস্তিক ও জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের বিরোধিতাকারী, নিয়মিত শহীদ ও উপদেষ্টাদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্যকারীর বই কেন আপনাদের স্টলে জায়গা পায়?’ এর জবাবে সব্যসাচীর প্রকাশনীর স্টলে থাকা মেহরান সানজানার স্বামী শতাব্দী ভব ছাত্রদেরকে তুই তুকারি সম্বোধন শুরু করে এবং বলে ‘তসলিমার পক্ষে আমি একাই লড়ে যাব’। এক পর্যায়ে তিনি দুই জন ছাত্রকে কিল ঘুষিও দেন। তিনি “জয় বাংলা” স্লোগান দিয়ে ছাত্রদের জঙ্গি ও মৌলবাদী সম্বোধন করেন। উপস্থিত ছাত্রজনতা শতাব্দী ভবের ঔদ্ধত্যের জবাবে প্রতিবাদী হয়ে উঠলে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায় এবং বিতর্কিত ১২৮ নম্বর স্টল ‘বন্ধ’ রাখে।
বিবৃতিতে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ বলেছে, মুসলমানদেরকে উসকানি দিয়ে উত্তেজিত করে উল্টো তাদেরকে অমানবিক প্রমাণ করা আন্তর্জাতিক পরিসরে ব্যাপকভাবে পরিচিত ইসলাম বিদ্বেষী বর্ণবাদের বহুল ব্যবহৃত একটি ধরণ। সোমবার বইমেলার ঘটনায় একই ধরনের বর্ণবাদ চর্চা করা হয়েছে। একদিকে প্রচার করা হয়েছে ‘তৌহিদি জনতা বইমেলায় হামলা করেছে’ আরেকদিকে ভারতের কুখ্যাত মুসলিম বিদ্বেষী পত্রিকা ‘আনন্দবাজার’ এ সব্যসাচী প্রকাশনীর প্রকাশক মেহরান সানজানার বরাতে প্রচার করেছে ‘বইমেলা জঙ্গিদের’। ফলে শঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, মুসলমানদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র দেশেও ঘনীভূত হচ্ছে। এ ষড়যন্ত্র সম্পর্কে দেশবাসীকে সচেতন হতে হবে। আর অন্তর্বর্তী সরকারকে যেকোনো ঘটনার বিষয়ে যথাযথ অনুসন্ধান করে বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ভিত্তিতে সঠিক তথ্য অবহিত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বিজ্ঞপ্তি/এমএস