হোম > রাজনীতি

সরকার সব দলকে খুশি করলেও জনগণকে ফাঁকি দিয়েছে

সংবাদ সম্মেলনে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

স্টাফ রিপোর্টার

জুলাই জাতীয় সনদ আদেশের অনেকগুলো বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে উল্লেখ করে সেগুলো আরো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি বলছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ এমনভাবে জারি করা হয়েছে যে, এটিকে ক্ষমতাবানরা নিজেদের মতো ব্যাখ্যা করার সুযোগ রয়েছে।

শুক্রবার বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির এ অবস্থান তুলে ধরেন সদস্য সচিব আখতার হোসেন।

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের অনেকগুলো বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম, সরকার অস্পষ্টতা দূর করে অত্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তা উল্লেখ করবে। কিন্তু জুলাই সনদ বাস্তবায়নে এমন অস্পষ্টতা রয়ে গেছে যে, এটি পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, গণভোটকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেখানে সংস্কারের সব বিষয়কে একভাবে না দেখে সব বিষয় আলাদা হিসেবে দেখা হয়েছে। কিছু সংস্কারকে কম গুরুত্বপূর্ণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর বিবেচনাধীন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নানা পক্ষ নোট অব ডিসেন্টসহ (ভিন্নমত) জুলাই সনদ দেখতে চান। তারা ক্ষমতা পেলে বর্ণিত প্রক্রিয়া অনুযায়ী তাদের নিজেদের মতো নোট অব ডিসেন্টকে প্রধান করে তোলার সুযোগ থাকবে। ফলে গণভোটের মাধ্যমে সুরাহা হওয়ার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার, জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়া অনুযায়ী সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কীভাবে হবে—এখানে কি নোট অব ডিসেন্ট থাকবে নাকি থাকবে না—সে বিষয়ে আমরা স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাই।

আখতার হোসেন বলেন, গণভোটে অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বলতে কোনগুলোকে বোঝানো হয়েছে? এখানে বাক্যের মধ্যে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। ঐকমত্য কমিশনে আমরা সবাই দুদককে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের কথা বলেছি। এটিও কি অন্তর্ভুক্ত থাকবে, তা স্পষ্ট নয়।

তিনি বলেন, আবার উচ্চকক্ষে কারা প্রতিনিধি যাবেন, তাদের তালিকা প্রকাশ না করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পরের নির্বাচন থেকে প্রকাশের বাধ্যবাধকতা থাকবে কি না, এটি আদেশে ঠিক উপেক্ষিত থেকে গেছে। আমরা ১০ শতাংশ নারী থাকার বিষয়ে আলোচনা করেছি। ঐকমত্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু সেটির বিষয়েও স্পষ্ট উল্লেখ নেই।

গণভোটের অনেক বিষয় রাজনৈতিক দলগুলোর মর্জির ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের আস্থা ভোট ও অর্থনৈতিক বিল বাদে বাকিগুলো সংশোধনীর বিষয়ে আমরা একমত হয়েছিলাম, কিন্তু এটিকে এমনভাবে রাখা হলো যে, রাজনৈতিক দলগুলোর তাদের মতো অনুমোদন দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।

আখতার হোসেন আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী একাধিক পদে থাকতে পারবেন কি না- যদি গণভোটের মাধ্যমে জনগণ তার মতামত জানিয়ে দেয়, তাহলে কেন রাজনৈতিক দলকে নিজেদের মতো সংস্কার করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু এই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে গুরুত্বের বিচার ও অগুরুত্বের বিচারের মধ্যে দিয়ে আংশিক বাস্তবায়ন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আগে সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানের আওতায় চলে আসার বিষয় ছিল। বাস্তবায়ন আদেশে ১৮০ দিনের কথা বলা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তারা যদি ব্যর্থও হয়, তাহলে তার ফলাফল কী হবে, এগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে কি না, সে বিষয়ে অস্পষ্টতা এখানে রয়ে গেছে।

এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের যে আদেশ জারি করা হয়েছে, তা ক্ষমতাবানরা নিজেদের মতো ব্যাখ্যা করতে পারেন, এমন করে করা হয়েছে। সরকার দ্রুত এই অস্পষ্টতা দূর করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই সনদ নিয়ে দায়বদ্ধতা দেখায়নি। সনদ বাস্তবায়ন আদেশের মাধ্যমে সরকার সকল রাজনৈতিক দলকে খুশি করলেও জনগণকে ফাঁকি দিয়েছে। এই আদেশের মাধ্যমে মৌলিক সংস্কারের দিকে যাওয়া যাবে না। বাহাত্তরের ফ্যাসিবাদী কাঠামো দূর করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এই আদেশের মধ্যে দিয়ে আমরা বাহাত্তরের সংবিধানের পথেই হাঁটছি। এক হাসিনা যাওয়ার পর আরেক হাসিনা আসার প্রস্তুতি চলছে।

তিনি বলেন, গণভোটে ৪টি হ্যাঁ ভোটের প্যাকেজে অস্পষ্টতা রয়েছে। এগুলো সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে। এরপরই জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে এনসিপি। এই সনদের আইনি ভিত্তি পেলেও নৈতিক ভিত্তি পাইনি। সদিচ্ছা থাকলেও দুইটি দলের কারণে সরকার ভালো কিছু করতে পারছে না।

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়াকে ভোটব্যাংকের ইস্যু বানাবেন না। এমনটা করলে জনগণ আপনাদের প্রত্যাখ্যান করবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন প্রমুখ।

পাবনা-২ আসনে এনসিপির মনোনয়ন তুললেন মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ

একই দিনে দুই ভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও জনবিরোধী

রাজধানীতে আ. লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের আরো ৫ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

রংপুর-৬ আসনে এনসিপির মনোনয়ন সংগ্রহ মাসুমের

এনসিপির ১ হাজার ১১ মনোনয়ন বিক্রি, লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার

যে লক্ষ্য নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল তা অর্জন করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে

ঢাকা-১২ আসনে হাতপাখা প্রার্থীর পরিবর্তনের যাত্রা

প্রধান উপদেষ্টাকে কর্নেল অলির ধন্যবাদ

ঢাকা-১৩ আসনে জামায়াত প্রার্থীর ‘রান উইথ মোবারক’

গণভোটে আমরা রাজি, অপশনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জনগণের