হোম > রাজনীতি

আইন উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন, সরকারের অবস্থান স্পষ্টের দাবি

আরপিও সংশোধন নিয়ে এনসিপির উদ্বেগ

স্টাফ রিপোর্টার

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন নিয়ে বিএনপিকে আশ্বাস দেওয়ায় আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তিনটি বিষয় উল্লেখ করে সরকারের অবস্থান জানতে চেয়ে আইন উপদেষ্টার বরাবর চিঠি দিয়েছে দলটি।

রোববার এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের সই করা এ চিঠি দেওয়া হয় বলে দলটির মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি আরপিওর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন সংক্রান্ত আলোচনায় বিএনপিকে দেওয়া আপনার ব্যক্তিগত আশ্বাস ও অবস্থান নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, একজন উপদেষ্টা হিসেবে আপনি রাষ্ট্রের নিরপেক্ষ আইন উপদেষ্টা, কোনো দলের প্রতিনিধি নন। নির্বাচনি আইন সংশোধনের মতো বিষয়ে কোনো একটি দলকে এককভাবে আশ্বাস প্রদান করা জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদের নিরপেক্ষতা ও দায়বদ্ধতার পরিপন্থী।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, আইন সংশোধনের মতো সিদ্ধান্ত কোনো একক ব্যক্তির নয়। এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক, পরামর্শনির্ভর ও জনস্বার্থমূলক প্রক্রিয়া। অতএব সরকারের পক্ষে এমন কোনো আশ্বাস বা প্রতিশ্রুতি দেওয়া যা একটি নির্দিষ্ট দলের দাবির সঙ্গে একমত হওয়ার ইঙ্গিত দেয়, তা আপনার প্রশাসনের প্রতি জন-আস্থাকে দুর্বল করবে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতার ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। একই সঙ্গে আরপিওর ২০ অনুচ্ছেদের বিষয়ে আপনি নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের বিপরীতে যে অবস্থান নিয়েছেন, তা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিপন্থী বলে আমরা মনে করি।

চিঠিতে বলা হয়— প্রথমত, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনব্যবস্থার উদ্দেশ্যই হলো দলগুলোর অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র, আর্থিক স্বচ্ছতা ও নীতিগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। কিন্তু যখন নিবন্ধিত দল অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করে, তখন তারা নিজেদের নিবন্ধনের দায়বদ্ধতা থেকে কার্যত অব্যাহতি পায়। এতে নিবন্ধনপ্রক্রিয়ার নিজস্ব অর্থই হারিয়ে যায়। একদিকে দলটি আলাদা পরিচয় দাবি করে, অন্যদিকে নির্বাচনে অন্য দলের প্রতীক ব্যবহার করে। এটি আইনি বৈপরীত্য সৃষ্টি করে এবং নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতাকে অকার্যকর করে তোলে।

দ্বিতীয়ত, গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি হলো রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহি। যে দলের নামে জনগণ ভোট দেন, সেই দলই নির্বাচনের পর জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। কিন্তু যখন একাধিক নিবন্ধিত দল বড় দলের প্রতীকে নির্বাচন করে, তখন ভোটার জানেন না তিনি আসলে কাকে ভোট দিচ্ছেন। ভোটার যে রাজনৈতিক দর্শন, নীতি বা নেতৃত্বকে সমর্থন জানাতে চান, তা অস্পষ্ট হয়ে পড়ে। এর ফলে ভোটার-দায়বদ্ধতার সম্পর্ক ভেঙে যায়।

তৃতীয়ত, এই বিধান কৃত্রিম বহুদলীয়তা সৃষ্টি করে এবং বড় রাজনৈতিক দলগুলোকে কাঠামোগত সুবিধা দেয়। বড় দলগুলো নিজস্ব স্বার্থে ছোট ছোট ‘প্রক্সি দল’ তৈরি করে তাদের প্রতীকে নির্বাচন করায়। পরে এই ছোট দলগুলো সংসদে বা বিভিন্ন কমিটিতে কৃত্রিম ভিন্নমত নিয়ে হাজির হয়ে বাস্তবে সেই বড় দলেরই বক্তব্য পুনরাবৃত্তি করে। এতে গণপরিসরে মতের বৈচিত্র্য নষ্ট হয়, ‘জাতীয় ঐকমত্য’ গঠনের প্রক্রিয়া বিকৃত হয় এবং নির্বাচনের পরবর্তী নীতিনির্ধারণে আর্টিফিশিয়াল বহুমতের জন্ম হয়।

এনসিপি বলেছে, তারা নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের অবস্থানের সঙ্গে একমত যে, আরপিওর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে স্পষ্টভাবে বলা প্রয়োজন—যেকোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অন্য কোনো দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে না। কোনো যৌথ জোট বা জোটনির্ভর প্রার্থী মনোনয়নের প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি নতুন নিবন্ধিত রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিকট নিবন্ধন করতে হবে।

দলটি বলছে, এমন সংশোধন রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত করবে না, বরং প্রকৃত গণতান্ত্রিক বহুত্ববাদকে শক্তিশালী করবে। কারণ, এতে প্রতিটি দলকে নিজের নাম, নীতি ও নেতৃত্বের দায় নিজেকেই নিতে হবে। এটি ভোটারের অধিকার, রাষ্ট্রীয় স্বচ্ছতা ও সাংবিধানিক ভারসাম্য রক্ষার অন্যতম শর্ত। উল্লিখিত দুটি বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

এর আগে গত ২৮ অক্টোবর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধ হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে দলগুলোর প্রার্থীদের ইচ্ছেমতো প্রতীক নেওয়ার সুযোগ বহাল চেয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের কাছে লিখিত আবেদন করে বিএনপি।

আইন উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ আবেদন দিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আইন উপদেষ্টা বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদে তুলবেন এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে প্রয়োজনে কথা বলবেন।

৫ দাবিতে জামায়াতসহ ৮ দলের নতুন কর্মসূচি

হঠাৎ লন্ডন কেন, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শুরু, প্রার্থী চূড়ান্তের সম্ভাবনা

জামায়াতসহ ৮ দলের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা আজ

জামায়াতের পুনর্নির্বাচিত আমিরকে জমিয়ত সভাপতির অভিনন্দন

খুলনা সদর আসনে মঞ্জুকে সবুজ সংকেত তারেক রহমানের

নেতাকর্মীদের ডিজিটাল প্রযুক্তি আয়ত্ত করার নির্দেশ ফখরুলের

রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতার বিরুদ্ধে ডাকসুর প্রতিবাদ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটি ফের সচল

ঐক্যবদ্ধ হয়ে একক প্রার্থীকে বিজয়ী করে ‘গুপ্ত স্বৈরাচারকে’ প্রতিহত করুন