ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের কাছে ৩৬ দফা লিখিত প্রস্তাব জমা দিয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে গিয়ে এ প্রস্তাব জমা দেয়।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আবদুল মঈন খান।
এ সময় তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন একটি উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে যে শঙ্কা তা কেটে যাবে। আমাদের ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থ নিয়ে এখানে আলোচনা করতে আসিনি। জাতির স্বার্থে আলোচনা করতে এসেছি। আমরা একটা পরিবর্তন চাই; যে পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশের জনগণ নির্ভয়ে চলতে পারবে।
পলাতক হাসিনা সরকারের অধীনে বিগত তিনটি (২০১৪, ১৮ ও ২৪) বিতর্কিত নির্বাচনের কর্মকর্তাদের ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের দায়িত্বে না রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন বা ইসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বলেছে, ওই সব নির্বাচনে যাদের বিরুদ্ধে বিতর্ক ছিল, তাদের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, বিগত তিন নির্বাচন, নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। আমরা কমিশনকে সতর্ক করেছি এদের বিষয়ে সচেতন থাকতে।
এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটা প্রতিনিধি দল সিইসির সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ ও সাবেক ইসি সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া।
বিএনপির ৩৬ দফা প্রস্তাব
ইসি সূত্রে জানা গেছে, এতে নির্বাচনে ইসলামী ব্যাংক ও সমমনা প্রতিষ্ঠানের কাউকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার দায়িত্ব না দিতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়েছে- নির্বাচনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা বা পোলিং পারসোন্যাল তথা প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে সর্বমহলের নিকট চিহ্নিত এমন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ প্রদান করা যাবে না।
যেমন- ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইবনে সিনা ইত্যাদি। উল্লেখযোগ্য যে, ইতোমধ্যে ইসলামী ব্যাংকে সারাদেশে প্রায় পাঁচ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ বাতিল করেছে এবং এসব শূন্য পদে তড়িঘড়ি করে দলীয় লোকজন নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে মর্মে জনশ্রুতি রয়েছে।
অবশ্য পরে ড. আব্দুল মঈন খান সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, তারা কোনো লিখিত প্রস্তাব দেননি।
যদিও বিএনপির এই নেতার হাতে ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে করণীয় প্রস্তাবসমূহ নির্বাচন কমিশনের সহিত সভার জন্য প্রস্তাবিত কার্যপত্র’ শীর্ষক একটি দলিল দেখা গেছে।