জাতির ওপর থেকে কালো ছায়া এখনও যায়নি। এই কালো ছায়া দূর না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রশিবির ও জামায়াতে ইসলামী সংগ্রাম করে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শুক্রবার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সকল ধর্ম ও দল মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত বৈষম্যহীন ইনসাফ ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। বেকার ভাতা নয়, দক্ষ মানুষ তৈরি করতে চায় জামায়াত। শিক্ষা ব্যবস্থায় ভালো ক্যারিক্যুলাম অন্তর্ভুক্ত করা গেলে দক্ষ নাগরিক গড়ে উঠবে।
যেখানে কলমের হাতে অস্ত্র নয়, যেখানে মাদক ও সন্ত্রাসের কোনও স্থান নেই এবং যেখানে আমাদের মা ও বোনেরা নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে চলতে পারবেন আমরা এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাই—উল্লেখ করেন জামায়াত আমির।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামী ছাত্র শিবির আজ আর কেবল একটি সাধারণ ছাত্রসংগঠন নয়। চব্বিশের বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে দেশের আপামর ছাত্রসমাজ এই সংগঠনকে যে আস্থা ও ম্যান্ডেট দিয়েছে, তার অর্থ- ছাত্রসমাজের অভিভাবকের দায়িত্ব এখন ছাত্র শিবিরের কাঁধে।
তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চরিত্র গঠন, নৈতিক শিক্ষা, আধুনিক জ্ঞান ও গবেষণার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব আমাদের। অতীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভয়, সন্ত্রাস ও অনিশ্চয়তার যে কালো ছায়া নেমে এসেছিল; তা এখনো পুরোপুরি কাটেনি। এই কালো ছায়া দূর না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রশিবিরের লড়াই অব্যাহত থাকবে।
জামায়াত আমির বলেন, আজ এই পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রধান দায়িত্ব ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপর অর্পিত হয়েছে। কারণ এই সংগঠনের জন্মই হয়েছে জাতি গঠনের কারিগর তৈরি করার জন্য।
ছাত্র ও শিক্ষকের সম্পর্ক পিতা–পুত্রের মতো হওয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা চাই কোনো শিক্ষককে আর অপদস্থ করা হবে না, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাসের কেন্দ্র হবে না। অতীতে যারা এসব অপকর্ম করেছে, তারা নিন্দিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি ছাত্রসমাজ কোনোভাবেই বরদাস্ত করবে না।
তিনি বলেন, ছাত্রদের কাঁধে রয়েছে অসংখ্য শহিদের আত্মত্যাগ ও প্রত্যাশার ভার। এই ভার বহন করার শক্তি আল্লাহ যেন তাদের দান করেন।
দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা গড়তে চাই, যা শিক্ষার্থীদের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে—চরিত্রবান, দক্ষ ও আত্মনির্ভরশীল নাগরিক হিসেবে। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে একজন যুবকও বেকার থাকবে না; বেকার ভাতা নয়, প্রতিটি হাতে কাজ তুলে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, যারা শুধু সংখ্যা গুনে কর্মসংস্থানের কথা বলে, তাদের কাছে প্রশ্ন-বাকিদের কী হবে? আমরা চাই প্রতিটি যুবক হোক দেশের উন্নয়নের কারিগর।
ছাত্রসমাজকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তোমরা প্রস্তুত হও। ইনশাআল্লাহ তোমরা পারবে। আমরা তোমাদের সঙ্গে আছি।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, মিথ্যাচার ও অপপ্রচার দিয়ে ছাত্রশিবিরকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। স্বাধীনতাবিরোধী, রগকাটা ট্যাগ বা ক্রসফায়ার, আয়নাঘর দিয়ে ছাত্রশিবিরকে থামানো যাবে না।