শেখ মাহেদি ও শরিফুল ইসলামকে নিলামের আগে দলে ভিড়িয়ে চমক দেখায় চট্টগ্রাম রয়্যালস। তবে সেই চমক আর ধরে রাখতে পারেনি তারা। নিলাম টেবিল থেকে একমাত্র নাঈম শেখ ছাড়া তেমন কোনো বড় নাম দলে ভেড়াতে পারেনি। কাগজে-কলমে খানিকটা পিছিয়ে থাকা দলটা বিদেশিদের নিয়ে শক্তিশালী অবস্থানে যেতে চেয়েছিল। তবে সেই আশাতেও গুড়েবালি। ছয় বিদেশির চারজনই আসছেন না বিপিএলে। ফলে বিপিএল শুরুর আগ মুহূর্তে খানিকটা চাপেই পড়ে গেছে দলটি।
চট্টগ্রাম রয়্যালসের অধিনায়ক কে হবেন? সেটা এখনো নিশ্চিত হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে শুভাগত হোম কিংবা জিয়াউর রহমানের কাঁধে উঠতে পারে অধিনায়কত্বের দায়িত্বভার। এখনো অধিনায়ক নিয়ে যেমন দোটানায় ঠিক তেমনই দলের ম্যানেজমেন্ট নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। সিলেটে দলটি পা রাখার দিনেই ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। পরে অবশ্য সেই সমস্যার সমাধান করেছে দলটি। এত সব সমস্যার মাঝেও ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী দলটি।
চট্টগ্রাম রয়্যালসের ব্যাটিং লাইনআপে তেমন বড় কোনো নাম নেই। মূল দায়িত্ব থাকবে দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও মাহফিজুল ইসলাম রবিনের কাঁধে। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে উড়িয়ে আনা ক্যামেরুন ডেলপোর্টও আছেন। ওপেনিং সমস্যার সমাধান দেশিদের দিয়ে হলেও মিডল অর্ডারের জন্য দলটির দরকার বিদেশি ক্রিকেটার। সেই চাহিদা এখনো পূরণ করতে পারেনি।
মিডল অর্ডারে দেশিদের মধ্যে আছেন মাহমুদুল হাসান জয়, শুভাগত হোম, জিয়াউর রহমান ও সালমান হোসেন ইমন। জয়ের সামর্থ্য থাকলেও সালমান ইমন ও বাকিদের নিয়ে আছে খানিকটা প্রশ্ন। ঘরোয়া ক্রিকেটে তারা পরীক্ষিত হলেও বড় টুর্নামেন্টে নিয়মিত পারফর্ম করার অভিজ্ঞতা নেই তাদের। আর উইকেটের পেছনে দায়িত্ব সামলানোর জন্য চট্টগ্রাম রয়্যালসের স্কোয়াডে আছেন শুধুই জাহিদুজ্জামান খান।
বিপিএল শুরুর আগেই খানিকটা বিতর্ক ছড়ানো দলটির বোলিংয়ে আছে তিন বড় নাম- শরিফুল ইসলাম, তানভীর ইসলাম ও শেখ মাহেদি। পাওয়ার প্লে বোলিংয়ে সব সময়ই দারুণ করা শেখ মাহেদি ভূমিকা রাখতে পারবেন ব্যাটিংয়েও। মিডল অর্ডারে চট্টগ্রামের অন্যতম ভরসা তিনি। এছাড়া বোলিং আক্রমণের নেতৃত্বে থাকবেন শরিফুল। তার সঙ্গে আরেক বাঁহাতি আবু হায়দার রনি আছেন। সম্প্রতি এনসিএলে দারুণ খেলা মকিদুল ইসলাম অঙ্কন ও সুমন খানও আছেন স্কোয়াডে। স্পিন আক্রমণের মাহেদি-তানভীরের পাশাপাশি থাকবেন শুভাগত হোম। ফলে দলটিকে বোলিং নিয়ে খুব একটা ভাবতে হচ্ছে না।
দলটির চার বিদেশি আবরার আহমেদ, পল স্টার্লিং, নিরোশান ডিকওয়েলা ও চারিথ আসালাঙ্কা শেষ মুহূর্তে না আসার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ব্যাটিংই বাড়িয়েছে চিন্তার ভাঁজ। স্টার্লিং আসছেন না পারিশ্রমিক ইস্যুতে। ডিকওয়েলা ও আবরার পাননি অনাপত্তিপত্র। চারিথ আসালাঙ্কা কেন আসছেন না তা জানা যায়নি।
সব মিলিয়ে ভঙ্গুর এই চট্টগ্রাম রয়্যালস বিপিএলে ভালো খেলে নাকি আবার কোনো বিতর্কের জন্ম দেয় সেটাই দেখার অপেক্ষা।
চট্টগ্রাম রয়্যালস স্কোয়াড
মোহাম্মদ নাঈম শেখ, শরিফুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, সুমন খান, জিয়াউর রহমান, মাহফিজুল ইসলাম রবিন, আরাফাত সানি, আবু হায়দার রনি, শুভাগত হোম, সালমান হোসেন ইমন, জাহিদুজ্জামান খান, রহমতুল্লাহ আলী, শেখ মেহেদী, তানভীর ইসলাম, অ্যাঞ্জেলো পেরেরা, ক্যামেরুন ডেলপোর্ট।