ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারঘুতিকে হত্যার একটি ‘বিপজ্জনক পরিকল্পনা’ চলছে বলে সতর্ক করেছে ফিলিস্তিনি অধিকার গোষ্ঠী, ফিলিস্তিনি প্রিজনার্স সোসাইটি। বারঘুতিকে গুরুতর হামলার অভিযোগ এবং তার মুক্তির পক্ষে বাড়তে থাকা আন্তর্জাতিক দাবির প্রেক্ষাপটে এমন সতর্কতার কথা জানাল সংস্থাটি।
২০০২ সালে গ্রেপ্তার হওয়া ফাতাহ নেতা বারঘুতি পাঁচটি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা এবং হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেছে ইসরাইল। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বারঘুতি একজন জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
সংগঠনটির মহাপরিচালক আমজাদ আল-নাজ্জার বলেন, বারঘুতির ওপর ইসরাইলের ধারাবাহিক হামলা গোপন উদ্দেশ্যকে নির্দেশ করে, যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি জাতিসংঘকে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান এবং বারঘুতির সঙ্গে দেখা করতে একটি তদন্ত কমিটি পাঠানোর দাবি করেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির, বারঘুতির কক্ষে দিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে হুমকি দেন। বিশ্লেষকদের মতে, বারঘুতির জনপ্রিয়তা তাকে দুই-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাব্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পরিণত করতে পারে—যা বর্তমান ইসরাইলে সরকার বিরোধিতা করে।
বারঘুতির পরিবারও গুরুতর নির্যাতনের অভিযোগ করেছে। তার ছেলে কাসাম বারঘুতি জানান, ইসরাইলের কারগার থেকে মুক্তি পাওয়া বন্দি এক দাবি করেছেন, ইসরাইলি বাহিনী বারঘুতির ওপর ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন করেছে, তার দাঁত, পাঁজর, আঙুল ভেঙে দিয়েছে এবং কানের কিছু অংশ কেটে ফেলেছে। কাসাম জানান, তিনি সরকারি ও আইনি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও বারঘুতির বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পাননি।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ঘটনাটিকে “বিপজ্জনক প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা” বলে নিন্দা জানিয়েছে, এবং বারঘুতিসহ সব বন্দির নিরাপত্তার জন্য ইসরাইলকে সরাসরি দায়ী করেছে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের কারাগারে ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দি আটক রয়েছে এবং অনেকেই নির্যাতন, অনাহার ও চিকিৎসা অবহেলার শিকার।