হোম > বিশ্ব

সিরিয়ায় আসাদ পতনের বর্ষপূতিতে আনন্দ-উল্লাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ছবি: এএফপি

দামেস্কের উমাইয়া চত্বরের কাছে আতশবাজির মধ্যেই বাড়ির জানালা দিয়ে মাথা বের করে শিশুরা সিরিয়ার সবুজ-সাদা-কালো পতাকা নাড়িয়ে উচ্ছ্বাস করছিল। ৮ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতনের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।

শনিবার বর্ষপূর্তির দুদিন আগে থেকেই চত্বরের কাছে জড়ো হয়ে লোকজন উৎসব শুরু করেছে। ২৪ বছর বয়সি আবু তাজ একাকী কাছে দাঁড়িয়ে উৎসব দেখছিলেন। ১০ বছর আগে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের মধ্যে আলেপ্পোতে তার বাড়ি ছেড়ে এসেছিলেন তিনি। আসাদপন্থি সামরিক বাহিনী ও বিরোধী যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষে আবু তাজের বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়।

আলেপ্পো থেকে প্রথমে দামেস্ক, পরে লেবাননের বৈরুত হয়ে সৌদি আরবে কর্মরত বাবার কাছে চলে যান তিনি। এক দশকের নির্বাসনে আট বছর সৌদি আরবে ও দুবছর পড়াশোনার জন্য মিসরে ছিলেন আবু তাজ। আসাদের পতনের পর সপ্তাহখানেক আগে দামেস্কে ফিরেছেন তিনি।

আবু তাজ বলেন, উমাইয়া মসজিদে গত শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করেছেন তিনি। দেশের সংস্কৃতি এখন জনগণই নির্ধারণ করছে। সিরিয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে নিজের সন্তুষ্টি জানান তিনি।

এক বছর আগে বাশার আল-আসাদের সরকার পতনের মাধ্যমে সিরিয়ায় এক নিষ্ঠুর পুলিশি রাষ্ট্রের পতন হয়। সিরিয়ার বহু নাগরিকের জন্য এটি স্বস্তি নিয়ে আসে। ১৯৭০ সালে বাশারের বাবা হাফিজ আল-আসাদের মাধ্যমে সিরিয়ায় দীর্ঘ স্বৈরশাসনের সূচনা হয়।

স্বৈরশাসন থেকে মুক্তির পর প্রাথমিক দিনগুলোতে উৎসবে মেতে ছিল সিরিয়ার জনগণ। কিন্তু একইসঙ্গে ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কা ছিল। অনেকেই আমেরিকার আগ্রাসন-পরবর্তী ইরাক বা গাদ্দাফির পতন-পরবর্তী লিবিয়ার উদাহরণের আশঙ্কায় ছিলেন। খুব কম লোকই আহমদ আল-শারার নেতৃত্বের সিরিয়ার ওপর থেকে আমেরিকার কঠিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আশা করেছিলেন। এক সময় আমেরিকাই সিরিয়ার বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধানকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে তার মাথার মূল্য ঘোষণা করেছিল।

তবে আল-শারার শাসনে গত মার্চে সিরিয়ার লাতাকিয়ায় ও জুলাইয়ে সুওয়াইদায় সম্প্রদায়গত সংঘাতের ঘটনা ঘটে। দুই ঘটনাতেই সিরিয়ার বর্তমান সরকারের অধীন বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড চালানোর অভিযোগ ওঠে। গত মাসে সিরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর হিমসে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হয়েছিল। তবে সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সক্ষম হয়।

সবকিছু সত্ত্বেও উমাইয়া চত্বরে মানুষের আনন্দ দেখে বোঝা যায়, আসাদের পতনের অর্থ সিরীয় নাগরিকদের কাছে কী ছিল। পুরো দামেস্ক সবুজ-সাদা-কালো পতাকায় ছেয়ে গেছে। উমাইয়া মসজিদের বাইরে শিশুরা নিজেদের গালে পতাকার রঙ এঁকে ঘুরছে।

সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দাইর আয-যর প্রদেশের বাসিন্দা ২২ বছর বয়সি ওমরান। সম্প্রতি তিনি লেবানন থেকে ফিরেছেন। তিনি জানান, দীর্ঘ ৯ বছর তিনি মাকে দেখেননি।

ওমরান জানান, ৮ ডিসেম্বর মা ও ছোট ভাই বাহাউদ্দিনকে নিয়ে তিনি উমাইয়া চত্বরে উৎসবে অংশ নেবেন। তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমরা সবাই সুখী হবো।’

ইয়ারমুক ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা ২১ বছর বয়সি আবদুল আজিজ আল-উমারি বলেন, ‘স্বাধীনতার বর্ষপূর্তি পালন করতে আমরা এখানে এসেছি। আমরা অত্যাচারিত ছিলাম; কিন্তু এখন আমাদের দুঃখ দূর হয়েছে।’

সিরীয়রা জানান, ধীরে ধীরে সিরিয়া ধ্বংসস্তূপ থেকে জেগে উঠছে। পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত উন্নতি করছে। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আশাবাদী।

ফাঁস হওয়া ভিডিওতে আসাদ: ঘৌতা জাহান্নামে যাক

তাইওয়ানে ৫.৩ মাত্রার ভূমিকম্প

কাতারের আমিরকে স্বাগত জানালেন সৌদি যুবরাজ

নেতানিয়াহুকে মামদানির গ্রেপ্তারের ঘোষণা: আন্তর্জাতিক আইন কী বলে?

ফাঁস হওয়া ভিডিওতে আসাদ: খাবার কিনতে পারে না মসজিদে ব্যয় করে

রাশিয়ায় কেমন জীবন কাটছে স্বৈরশাসক আসাদের

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ‘গঠনমূলক কিন্তু কঠিন’: জেলেনস্কি

শান্তির জন্য ‘রাষ্ট্র বহির্ভূত’ শক্তির সাথেও সংলাপের আহ্বান কাতারের

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুবিয়ান্তোকে ইসলামাবাদে স্বাগত জানালেন শাহবাজ ও জারদারি

দক্ষিণ এশিয়াকে অস্থিতিশীল করছে ভারতের ‘নিউ নরমাল’ নীতি