পাকিস্তানে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে টমোটো। দেশটির গণমাধ্যম ডন জানায়, বন্যা এবং ফসলের অনেক ক্ষতি সত্ত্বেও পাকিস্তানের ইতিহাসে টমোটোর দাম কখনোই এত বেশি ছিল না। এটি একটি নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।
এদিকে আল আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পাকিস্তান-আফগানিস্তান সংঘাতের পর থেকে পাকিস্তানের প্রধান সীমান্ত ক্রসিংগুলো দিয়ে বাণিজ্য ও যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে টমেটোর বাজারে দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। এ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন ইসলামাবাদের বাসিন্দারা।
দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির পর চলতি মাসের শুরুতে উত্তর-পশ্চিমের টরখাম এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের চমন সীমান্ত ক্রসিংগুলো বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান।
সাধারণত পাকিস্তানে উৎপাদন কমে গেলে আফগানিস্তানের দুটি সীমান্ত দিয়ে টমেটো এবং অন্যান্য দ্রুত পচনশীল পণ্য আমদানি করা হয়। সীমান্ত বন্ধ থাকায় সম্প্রতি টমেটোর দাম ৪০০ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে। পাকিস্তানজুড়ে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০০ পাকিস্তানি রুপি (বাংলাদেশি প্রায় ২৬০ টাকা) ।
ইসলামাবাদের জি-৯ সবজি বাজারের একজন ক্রেতা শান মসিহ আরব নিউজকে বলেন, ‘এগুলো খুব দামি হয়ে গেছে। আমরা এর কোনো কারণ বুঝতে পারছি না।’ তিনি যোগ করেন, ‘যেহেতু যেকোনো রান্নায় টমেটো ব্যবহার করা হয়, তাই আমরা সমস্যায় পড়েছি।’
ইসলামাবাদের ফল ও সবজি বাজারের বিক্রেতা মোহাম্মদ ইমরান কথা বলতে গিয়ে জানান কীভাবে সরবরাহের এই টান পড়েছে। তিনি বলেন, সীমান্ত বন্ধ থাকায় আফগানিস্তান থেকে সরবরাহ বন্ধ।
ইমরান আরো বলেন, এখন ইরান, সিন্ধু ও কোয়েটা থেকে টমেটো আসছে। মানুষের চাহিদা কমেনি, ক্রেতারা এখনো একই পরিমাণ কিনছেন কিন্তু সরবরাহ তুলনামূলক অনেকটা কমে গেছে।’
তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগেও টমেটো প্রতি কেজি ৫৬০ পাকিস্তানি রুপিতে বিক্রি হয়েছিল।
সবজির পাইকারি বিক্রেতা শাপুর খান বলেন, সীমান্ত বন্ধ হওয়ার পর টমেটোর সরবরাহ ব্যাপকভাবে কমে গেছে। তিনি আরব নিউজকে বলেন, পাকিস্তানে টমেটো কম। এমনকি ইরান থেকে যে টমেটো আসছে, সেটাও পরিমাণে কম।
এই ব্যবসায়ী বলেন, পাকিস্তান আফগানিস্তান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮০ থেকে ১২০ ট্রাক টমেটো আমদানি করত।
কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। আশা করছে, শিগ্গিরই দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ইসলামাবাদের মার্কেট কমিটির চেয়ারম্যান সাজিদ আব্বাসি বলেছেন, কর্তৃপক্ষ টমেটোর দামের আকস্মিক বৃদ্ধি সম্পর্কে জানে। তারা সরবরাহ বৃদ্ধি করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আব্বাসি বলেন, ‘সীমান্ত বন্ধের কারণে দামের এই তারতম্য সম্পর্কে আমরা জানি। বিকল্প সরবরাহ রুট শক্তিশালী করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, শিগ্গিরই দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।