সিরিয়ায় নতুন সরকারের সমালোচনা করায় মার্কিন সাংবাদিক বিলাল আব্দুল করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আব্দুল করিম, ২০১২ সাল থেকে সিরিয়ায় বসবাস করছেন, সোমবার উত্তর আলেপ্পো প্রদেশের আল-বাব থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। তবে সিরিয়ার সরকার এখনো তার গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য দেয়নি।
মার্কিন সাংবাদিক বিলাল আব্দুল করিম তার পূর্ব নাম ড্যারেল ল্যামন্ট ফেলপস সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ কভার করার সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি আরবি শেখেন এবং সাংবাদিকতা শুরু করেন। তিনি সিএনএন, চ্যানেল ৪, বিবিসি, স্কাই নিউজ এবং ডাচ প্রোগ্রাম নিউজ আওয়ার এর জন্য প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার কঠোর সমালোচনা করে আসছিলেন আব্দুল করিম।
তিনি অভিযোগ করে জানিয়েছেন, সাবেক বিদ্রোহী নেতা আহমেদ আল শারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে খুশি করার জন্য তার ইসলামী নীতিগুলোকে খুব বেশি সংযত করে ফেলেছেন। এছাড়াও আব্দুল করিম আগস্টে বিদেশী বিরোধী যোদ্ধাদের সিরিয়ার নাগরিকত্ব দিতে সরকারের অস্বীকৃতির সমালোচনা করেছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক্স-এ পোস্ট করা তার শেষ ভিডিওতে, আব্দুল করিম ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে যোগদানের জন্য শারা'র সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছেন।
পূর্ব সিরিয়ায় সন্দেহভাজন আইএস বন্দুকধারীর দুই মার্কিন সেনা এবং একজন বেসামরিক দোভাষীকে হত্যার একদিন পর প্রকাশিত ভিডিওটি আব্দুল করিম বলেন, "সম্ভবত এই ভিডিওটি আমাকে সমস্যায় ফেলবে"। তিনি বলেন, ‘আমেরিকানদের এখানে থাকার কোনো বৈধ কারণ নেই, আমরা শত্রুর উপস্থিতিকে বৈধতা দিতে পারি না, এবং আমি বলেছি আমেরিকা সিরিয়ার জনগণের শত্রু।’
২০২০ সালে, আব্দুল করিমকে উত্তর ইদলিব প্রদেশে হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) গ্রেপ্তার করে এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে ছয় মাস আটকে রাখে।
এই বছরের শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হওয়া এইচটিএসের নেতৃত্বে ছিলেন শারা এবং গত বছর আসাদকে উৎখাত করার ক্ষেত্রে এটিই ছিল প্রধান শক্তি।
যদিও আগে আব্দুল করিমের সঙ্গে এইচটিএসের সম্পর্ক ভালো ছিল, কিন্তু আটক কেন্দ্রগুলিতে নির্যাতনের প্রতিবেদনের সমালোচনা করার পর তার প্রতি গ্রুপের দৃষ্টিভঙ্গি তিক্ত হয়ে ওঠে।
তিনি আমেরিকার বিরুদ্ধে তাকে ‘হত্যা তালিকায়’ রাখার এবং পাঁচবার হত্যার চেষ্টা করার অভিযোগও করেছেন।