সোমালিল্যান্ডকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ইসরাইলের সিদ্ধান্তকে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি আখ্যা দিয়েছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও একাধিক মুসলিম দেশ। রোববার প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে পাকিস্তান, সৌদি আরব, তুরস্ক, ইরান, মিসর, কাতারসহ অন্যান্য দেশ এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানায়।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলের এই নজিরবিহীন পদক্ষেপ আফ্রিকার হর্ন অঞ্চল ও লোহিত সাগর এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে এবং সামগ্রিকভাবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে। একই সঙ্গে এটি আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের প্রতি ইসরাইলের “প্রকাশ্য ও সম্পূর্ণ অবজ্ঞার” প্রতিফলন।
এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এলো, যখন তেল আবিব আনুষ্ঠানিকভাবে স্বঘোষিত রিপাবলিক অব সোমালিল্যান্ডকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দেন, ইসরাইল সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক খাতে তাৎক্ষণিক সহযোগিতা শুরু করতে আগ্রহী। এক বিবৃতিতে তিনি সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আবদিরাহমান মোহাম্মদ আবদুল্লাহিকে অভিনন্দন জানান, তার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং তাকে ইসরাইল সফরের আমন্ত্রণ জানান। নেতানিয়াহু বলেন, এই স্বীকৃতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে স্বাক্ষরিত আব্রাহাম চুক্তির “চেতনার অংশ”।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহি জানান, সোমালিল্যান্ড আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেবে এবং এটিকে তিনি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তবে মুসলিম দেশগুলোর যৌথ বিবৃতিতে এই স্বীকৃতিকে “আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের নীতির গুরুতর লঙ্ঘন” বলে উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘ সনদ স্পষ্টভাবে রাষ্ট্রগুলোর সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার কথা বলেছে, অথচ ইসরাইলের এই পদক্ষেপ সেই মৌলিক নীতির পরিপন্থী এবং সম্প্রসারণবাদী মানসিকতার প্রতিফলন।
বিবৃতিতে সোমালিয়ার সার্বভৌমত্বের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলা হয়, সোমালিয়ার ঐক্য, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সম্পূর্ণ ভূখণ্ডের ওপর সার্বভৌম অধিকারের বিরুদ্ধে যেকোনো পদক্ষেপ দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে। এতে আরও সতর্ক করা হয়, কোনো রাষ্ট্রের অংশবিশেষকে স্বীকৃতি দেওয়া একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, যা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে।
একই সঙ্গে বিবৃতিতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, এই পদক্ষেপকে ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের ভূমি থেকে জোরপূর্বক উৎখাতের যেকোনো প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টাও নীতিগতভাবে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে।
সূত্র: জিও নিউজ
এসআর