নেদারল্যান্ডের পশ্চিম-দক্ষিণ হল্যান্ড প্রদেশে বিশ্বের প্রথম কালচারড মিট বা ল্যাবে-উৎপাদিত গোশতের খামার স্থাপিত হচ্ছে। স্কিপলাউডেন গ্রামের একটি দুগ্ধ খামারে এই সপ্তাহে প্রথম উৎপাদন মডিউল স্থাপন করার কথা রয়েছে। খামারটি পরিচালনা করছেন কা্র্ন ভ্যান লিউয়েন, তিনি মূলত একজন পনির প্রস্তুতকারক।
কালচারড মিট ধারণাটি প্রথম তুলে ধরেন গবেষক উইলেম ভান এলেন। তবে ২০১৩ সালে মাসট্রিখট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওলজিস্ট মার্ক পোস্ট গুগলের অর্থায়নে গরুর পেশির স্টেম সেল ব্যবহার করে বিশ্বের প্রথম ল্যাব-উত্পাদিত হ্যামবার্গার তৈরি করে এ ধারণাকে বাস্তবে রূপ দেন। নিবিড় পশুপালনে প্রাণীর কষ্ট কমানোর ভাবনা থেকেই এ উদ্যোগের সূচনা।
স্কিপলাউডেনের নতুন পাইলট প্রকল্পে ক্ষুদ্র পরিসরে সরাসরি খামারেই কালচারড গোশত উৎপাদনের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০২৬ সালের বসন্তে সেখানে একটি অভিজ্ঞতা কেন্দ্র চালু হবে, যেখানে দর্শনার্থীরা পুরো প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করতে পারবেন।
কালচারড মিট উৎপাদনের প্রক্রিয়াটি মূলত একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, যেখানে প্রচলিত খামারের বাইরে গবেষণাগারের পরিবেশ (ল্যাবরেটরি) বা বায়ো-রিঅ্যাক্টরে সম্পন্ন হয়। জীবন্ত প্রাণীকে হত্যা না করেই গোশত তৈরি করার একটি উপায়।
প্রথমে একটি সুস্থ প্রাণী (যেমন: গরু) থেকে ছোট বায়োপসি বা টিস্যুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত কোষগুলোকে একটি নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে, যাকে বলা হয় বায়ো-রিঅ্যাক্টর বা কালচার ট্যাঙ্ক, রাখা হয়। সেখানে এই কোষগুলিকে উষ্ণ রাখা হয় এবং তাদের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করা হয়। এই পুষ্টি উপাদানের মধ্যে থাকে অ্যামিনো অ্যাসিড, শর্করা, ভিটামিন এবং বৃদ্ধির হরমোন। এই পরিবেশটি প্রাণীর শরীরের ভেতরের পরিবেশের মতোই অনুকূল।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি।