মার্কিন প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, চীনের সামরিক সদস্যদের সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি সামরিক ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয়েছিল। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ঘাঁটির একটি অংশে প্রবেশে করতে দেয়া হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক দুই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে একথা জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই দুই সাবেক কর্মকর্তা বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) সদস্যদের আবুধাবির জায়েদ মিলিটারি সিটিতে আতিথ্য দিচ্ছিল।
২০২০ সালের দিকে কর্মকর্তারা এমন ধারণা করেছিলেন।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একজন ব্যক্তি বলেছেন, মার্কিন কর্মকর্তারা জায়েদ মিলিটারি সিটির একটি অংশে প্রবেশের অনুমতি চেয়েছিলেন। তবে তাদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘাঁটি সম্পর্কে আরো তথ্য সংগ্রহ শুরু করে।
তবে চীনের সামরিক সদস্যদের ভূমিকা কী ছিল, সে বিষয়ে কিছুই জানাননি ওই কর্মকর্তারা।
দুই সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, তারা উদ্বিগ্ন যে পিএলএ সংযুক্ত আরব আমিরাতে মার্কিন বাহিনীর গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য জায়েদ মিলিটারি সিটি ব্যবহার করতে পারে।
আরব আমিরাতের আল–ধাফরা এয়ার বেজে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮০তম এয়ার এক্সপেডিশনারি ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। এটি আবুধাবি থেকে মাত্র ২০ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত।
একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আর্থিক সহায়তার বিনিময়ে কিছু পূর্ব এশীয় দেশের পিএলএ-কে আতিথেয়তা দিয়েছে বলে মার্কিন গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।
আবুধাবির জায়েদ মিলিটারি সিটিতে চীনের কার্যকলাপ সম্পর্কে আগে কখনো প্রতিবেদন আসেনি।
পিএলএ-র সদস্যরা এখনো সেখানে আছেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। চীন সামরিকভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চেয়েছে, একারণে যুক্তরাষ্ট্র বারবার তাদের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করেছে। এই বিষয়টি ওয়াশিংটনের সঙ্গে আরব আমিরাতের সম্পর্কে টানোপোড়েন দেখা দিয়েছে।
২০২১ সালে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রতিবেদন করেছিল, চীন আবুধাবির কাছে একটি সামরিক বন্দর তৈরি করছে। সেই নিবন্ধ প্রকাশিত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের আরকেটি পৃথক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রকল্পটি বন্ধ করে দিয়েছে।
কিন্তু ডিসকর্ড মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত গোপন নথিতে বলা হয়েছে, এক বছর পরে, সেই ঘাটিতে কাজ পুনরায় শুরু হয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে একথা জানায়।
সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং চীনের সামরিক সম্পর্ক গোপন নয়। ২০২৪ সালে চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে যৌথ বিমান বাহিনীর মহড়া করেছিল দুই দেশ।
এই প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য মিডল ইস্ট আই ওয়াশিংটনে অবস্থিত আমিরাত এবং চীনা দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। প্রকাশের সময় পর্যন্ত কেউই সাড়া দেয়নি। মার্কিন যুদ্ধ বিভাগও কোনো মন্তব্য করেনি।
আরএ