জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ বুধবার এক প্রস্তাবে রাশিয়ায় “জোরপূর্বক স্থানান্তরিত” ইউক্রেনীয় শিশুদের অবিলম্বে ও শর্তহীনভাবে ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে কিয়েভ ও মস্কোর আলোচনার প্রচেষ্টা চলার মধ্যেই এই স্পর্শকাতর বিষয়টি সামনে এলো।
এই প্রস্তাবটি ৯১-১২ ভোটে গৃহীত হয় । ৫৭ দেশ ভোটদানে বিরত থাকে, আর রাশিয়া প্রস্তাবটির বিপক্ষে ভোট দেয়। প্রস্তাবে বলা হয়, রাশিয়া যেন “জোরপূর্বক স্থানান্তর বা নির্বাসিত” সব ইউক্রেনীয় শিশুকে অবিলম্বে, নিরাপদভাবে ও শর্তহীন ফেরত পাঠায়। খবর এএফপির।
এছাড়া রাশিয়াকে আহ্বান জানানো হয়—জোরপূর্বক স্থানান্তর, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা, নাগরিকত্ব বা পরিচয় পরিবর্তন, দত্তক বা পালক পরিবারে পাঠানো, এবং শিশুদের রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত বা মতাদর্শগতভাবে প্রভাবিত করার মতো সব কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করতে।
ইউক্রেন দাবি করেছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়া অন্তত ২০,০০০ শিশু অপহরণ করেছে। এর মধ্যে ১,৮৫০-এর বেশি শিশুকে এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া গেছে এবং ফিরে এসেছে।
ইউক্রেনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়ানা বেতসা বলেন, “এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্র–সমর্থিত শিশু অপহরণের ঘটনা। শিশুদের ফেরত না এলে ইউক্রেনে ন্যায়সঙ্গত শান্তি অসম্ভব।”
রাশিয়ার পক্ষ থেকে ডেপুটি ইউএন দূত মারিয়া জাবোলোটস্কায়া প্রস্তাবটিকে “মিথ্যা অভিযোগে ভরা” বলে মন্তব্য করেন। তার বক্তব্য, “এই প্রস্তাবে যেকোনো সমর্থন যুদ্ধ, মিথ্যা ও সংঘাতকে উৎসাহিত করে। আর বিরোধিতা মানেই শান্তির পক্ষে ভোট।” রাশিয়া স্বীকার করে যে কিছু শিশু যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সুরক্ষার জন্য সরানো হয়েছিল, কিন্তু তারা অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
২০২৩ সাল থেকে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় শিশু অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে রাশিয়ার সেনাবাহিনী জাতিসংঘের কালো তালিকায় রয়েছে।
সেই বছরই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে, অভিযোগ—“ইউক্রেনীয় শিশুদের অবৈধভাবে রাশিয়ায় স্থানান্তরের যুদ্ধাপরাধের জন্য তার যুক্তিসঙ্গতভাবে দায় রয়েছে।”
এসআর