মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের (পেন্টাগন) একটি খসড়া প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, চীন মঙ্গোলিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় নির্মিত নতুন তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র সাইলো ফিল্ডে নীরবে ১০০টিরও বেশি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) মোতায়েন করেছে। রয়টার্সের প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনা নিয়ে বেইজিংয়ের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।
পেন্টাগনের তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বের অন্য যেকোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশের তুলনায় চীন সবচেয়ে দ্রুতগতিতে তার পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ করছে। তবে এই অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করে বেইজিং বলেছে, এ ধরনের প্রতিবেদন চীনকে কলঙ্কিত করা এবং আন্তর্জাতিক সমাজকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে তৈরি।
গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে নিরস্ত্রীকরণ সংক্রান্ত একটি সম্ভাব্য উদ্যোগ নিয়ে কাজ করতে পারেন। কিন্তু পেন্টাগনের খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে চীনের আগ্রহের কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যায়নি। প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়, অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বা বিস্তৃত কূটনৈতিক আলোচনায় অংশ নিতে বেইজিং প্রস্তুত—এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গোলিয়া সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত সাইলো ফিল্ডগুলোতে চীন ১০০টিরও বেশি সলিড-ফুয়েল ডিএফ-৩১ আইসিবিএম মোতায়েন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে এসব সাইলো ফিল্ডের অস্তিত্বের কথা জানানো হলেও সেখানে ঠিক কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, সে বিষয়ে এবারই প্রথম নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করা হলো।
তবে নতুন করে মোতায়েন করা এসব ক্ষেপণাস্ত্রের সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে প্রতিবেদনে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি। এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে চীনের পারমাণবিক ওয়ারহেডের সংখ্যা ছিল আনুমানিক ৬০০-এর কিছু বেশি। যদিও উৎপাদনের গতি আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবুও সামগ্রিক সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
পেন্টাগনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই ধারা বজায় থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে চীনের পারমাণবিক ওয়ারহেডের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
চীন বরাবরের মতোই দাবি করে আসছে, তারা আত্মরক্ষামূলক পারমাণবিক নীতি অনুসরণ করে এবং ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ বা প্রথমে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার নীতিতে অটল।
এদিকে প্রতিবেদনে তাইওয়ান প্রসঙ্গেও উদ্বেগ তুলে ধরা হয়েছে। পেন্টাগনের মতে, চীন ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য সংঘাতে জয়ী হওয়ার মতো সামরিক সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে।
এসআর