নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনার জেরে আনোয়ার হোসেন সাব্বির (২২) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ স্বামী-স্ত্রী দুজনকে আটক করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া।
এর আগে, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের চর গুল্যাখালী গ্রামের পান বেপারী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ভিকটিম সাব্বিরকে ঢাকা নেওয়ার পথে ওই দিন দিবাগত রাত প্রায় ২টার সময় তার মৃত্যু হয়।
নিহত সাব্বির উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের রামেশ্বপুর গ্রামের তাজু ড্রাইভার বাড়ির মো. লিটনের ছেলে।
অপরদিকে আটককৃতরা হলেন, উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের পান বেপারী বাড়ির মো. সিরাজের ছেলে আব্দুর সোবহান শামীম (৩০) ও তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার (২৩)।
নিহতের বন্ধু আনোয়ার হোসেন শাকিল বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে ৪-৫ দিন আগে উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের চর গুল্যাখালী গ্রামের পান বেপারী বাড়ির আমার খালা মনোয়ারা বেগমের খেতের লাউ গাছ গোপনে কেটে ফেলে তার দেবর শামীম। তিনি বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে তারা তাকে হাতেনাতে ধরতে পরামর্শ দেয়।
বুধবার বিকেলে মরিচ গাছের চারা কেটে ফেলার সময় তিনি তার দেবর শামীমকে দেখে ফেলেন। সাথে সাথে তাকে জিজ্ঞাসা করলে উল্টো তার দেবর আমার খালাকে মারধর করে। খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে আমি আমার বন্ধু সাব্বিরসহ আমার খালার বাড়িতে গিয়ে তাকে হাসপাতালে পাঠাই।
এরপর আমরা আমার খালার বসতঘরে তালা দিয়ে চলে আসার পথে শামীম আমাদের সাথে কথা বলতে এগিয়ে আসেন। একপর্যায়ে তিনি বলেন মহিলারা-মহিলারা গন্ডগোল হয়েছে, তিনি কিছু করেননি। এরপর আমরা কেন এসেছি বলেই ক্ষিপ্ত হয়ে শামীম তার হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সাব্বিরকে মাথায় কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটার সময় আমার দেশকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আনোয়ার হোসেন সাব্বিরকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে সে মারা যায়। নিহতের লাশ উদ্ধার করে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত স্বামী-স্ত্রী দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে, অন্যদেরকে আটকের অভিযান চলছে।

