গোপালগঞ্জে ৪ দিনের মাথায় ৪ হত্যা মামলা, আসামি ৬ হাজার

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৫, ১৭: ৩১
গোপালগঞ্জ সদর থানা

গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চার দিনের মাথায় পৃথক চারটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে । এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ রমজান মুন্সি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। সে বিষয়ে একটি হত্যা মামলা হবে বলে জানা গেছে।

শনিবার গভীর রাতে গোপালগঞ্জ সদর থানায় চারটি হত্যা মামলা দায়ের করে চার পুলিশ কর্মকর্তা।

বিজ্ঞাপন

ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন ও সৎকার করা চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় দায়েরকৃত এ সকল মামলাযর প্রতিটিতে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৪ শ’ থেকে ১ হাজার ৫শ’ জনকে। এ চার মামলায় ছয় হাজার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর থানার এস আই মো. আইয়ুব হোসেন বাদী হয়ে রমজান কাজী হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মামলা দায়ের করেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণের জানা যায় বুধবার (১৬ জুলাই) এনসিপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শেষে পৌর পার্ক থেকে দুপুরে মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে গাড়িবহর নিয়ে রওনা দিয়ে নেতৃবৃন্দ গোপালগঞ্জ শহরের এসকে সালেহিয়া মাদ্রাসার কাছে পৌঁছালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং দুষ্কৃতকারীরা গাড়ি বহরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করে। পুলিশ,সেনাবাহিনীসহ আইন শৃখলারক্ষা বাহিনী এতে বাধা দেয়। হামলাকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর গুলি চালায়। এ সময় রমজান কাজী (১৭) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সদর থানার এস আই মো. শামীম হোসেন দীপ্ত সাহা (২৭) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গোপালগঞ্জ সদর থানায় ১৯ জুলাই গভীর রাতে অজ্ঞাত নামা ১ হাজার ৪শ’ থেকে ১হাজার ৫শ’ জনকে আসামি করে ওই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, বুধবার (১৬ জুলাই) এনসিপির গাড়ি বহরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং দুষ্কৃতিকারীদের হামলার ঘটনা শহরে ছড়িয়ে পড়ে। কলেজ মসজিদের পাশে মিলন ফার্মেসির সামনের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এটি প্রতিরোধ করতে গেলে হামলাকারীরা গুলি করে। সেখানে দীপ্ত সাহা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন । সংকটজনক অবস্থায় তাকে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

একই থানার এস আই আবুল কালাম আজাদ সোহেল রানা মোল্লা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শনিবার গভীর রাতে সদর থানায় ১৪ শ’ থেকে ১৫ শ’ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায় লঞ্চঘাট এলাকায় হোটেল রাজের সামনে দুষ্কৃতকারীরা এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী এগিয়ে আসলে তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতকারীরা। এ সময় সোহেল রানা মোল্লা (৩০) মারাত্মক আহত হন। তাকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশের এসআই শেখ মিজানুর রহমান ১ হাজার ৪ শ’ থেকে ১ হাজার ৫ শ’ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ইমন তালুকদার হত্যা মামলা দায়ের করেছেন ।

ঘটনার দিন গত ১৬ জুলাই আসামিরা শহরের পুরাতন সোনালীব্যাংকের সামনে এনসিপির গাড়িবহরে হামলা করে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এতে বাধা দিলে দুষ্কৃতকারী আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ইমন তালুকদার আহত হয়। পরে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত