বিএনপি ভেসে আসা দল না, হুঁশিয়ারি মির্জা ফখরুলের

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪০

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, টালবাহানা না করে দ্রুত নির্বাচনি শিডিউল ঘোষণা করুন। নির্বাচন আয়োজন করুন। তা না হলে আপনারা ব্যর্থ সরকার হিসেবে চিহ্নিত হবেন। এ জন্য আপনাদের জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বানচাল করতে চক্রান্ত করছে। তারা ঘেরাও কর্মসূচির মাধ্যমে দেশকে আবারো অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। ফ্যাসিবাদের হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। দেশের জনগণ কোনোভাবেই তা মেনে নেবে না।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অনেক শিশু আর সাধারণ মানুষের রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। আবার সেই জায়গায় ফিরে যাওয়ার জন্য যারা চক্রান্ত করছে তাদের মনে রাখতে হবে বিএনপি ভেসে আসা কোনো দল না। অনেক হামলা, মামলা, কারাভোগ আর আত্মত্যাগের বিনিময়ে বিএনপি আজকে এই অবস্থানে এসেছে। বিএনপি জনগণের দল। দয়া করে পানি ঘোলা করবেন না। দেশকে অস্থিতিশীল করবেন না। নৈরাজ্য শুরু করবেন না। বিএনপি রাস্তায় নামলে তখন পরিস্থিতি ভিন্ন রূপ নেবে।’

যশোর শহরের মুনসী মেহেরউল্লা ময়দানে (টাউন হল মাঠ) মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) বিকালে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা বিএনপি এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘৮৩ কোটি টাকা খরচ করে সংস্কার কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সভা করেছে। আমরা প্রতিটি সভায় মতামত দিয়েছি। ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদ প্লাজায় সকল দলের স্বাক্ষরে সংস্কারের প্রস্তাব পাস হয়। পরে উপদেষ্টামণ্ডলীর সভা শেষে আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘এখনো যা বাকি আছে তা মীমাংসার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সাত দিনের সময় দেয়া হলো।’ মনে হচ্ছে রাজনৈতিক দল তাদের হাতের পুতুল।’’

তিনি বলেন, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তাতে স্বাক্ষর হয়েছে। বাকিগুলোর সংসদে সমাধান হবে। ফলে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করুন।

‘আর একদিন পর ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ইতিহাসের এই দিনে জাতিকে ধ্বংসের চক্রান্ত হয়েছিল। কিন্তু, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও জনগণ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে দেশের শাসনভার তুলে দিয়ে রাষ্ট্রকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করেছিল। এখানো যারা দেশকে ধ্বংস করার চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’, বলেন মির্জা ফখরুল।

আগামী দিনের রাজনীতির গতিপথের আভাস দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিদায়ের পর দেশে গণতন্ত্র উত্তরণের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তাকে সত্যিকারভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে আমাদের শপথ নিতে হবে। শপথ নিতে হবে দেশকে আর কোনো আধিপত্যবাদের হাতে তুলে দেবো না। গণতন্ত্র হরণকারীদের হাতে তুলে দেবো না এবং পতিত ফ্যাসিস্টদের আর ফিরতে দেবো না।’

যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভাটি কার্যত বড় ধরনের জনসভায় রূপ নেয়।

এতে আর বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক টিএস আউয়ুব, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবিরা সুলতানা মুন্নি, আবুল হোসেন আজাদ এবং ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ।

স্মরণসভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যশোর-৩ আসনের প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ জেলার ছয়টি আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের বিপুল ভোটে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।

সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম, কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ছাড়াও বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত