ভারতে পাচারের শিকার হয়ে দুই বছর কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছে ৩০ বাংলাদেশি কিশোর কিশোরী। বুধবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
ফেরত আসা কিশোর কিশোরীরা দেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা, খুলনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, বাগেরহাট, নড়াইল, রাজশাহী, নোয়াখালী, মুন্সীগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, রংপুর, নরসিংদী ও মাদারীপুর।
ফেরত পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন,রাজিব ইসলাম, রমজান শেখ, ইউসুফ শেখ, রাজু শেখ, রমজান গাজী, মলয় মন্ডল, সুদিপ্ত মন্ডল, আলাল মন্ডল, নিজাম উদ্দিন, ইয়াসিন, সোহেল সরদার, আরমান মোল্লা, তামিম গাইন, রিফাত হাসান, আব্দুল্লাহ শেখ, কারিমুল খান, সায়ুম মল্লিক, আনোয়ার হোসেন, স্বপ্না মন্ডল, শাহিন রেজা, অহনা শেখ, রুবি সরদার, মিম খাতুন, শারমিন আলী, টুস্পা পারভিন, সাভা খান, রাবেয়া খাতুন, ঝর্না খাতুন, রুনা খাতুন ও শামসুন্নাহার।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শাখাওয়াত হোসেন জানান, আড়াই বছর আগে দালালের প্রলোভনে সীমান্তপথে অবৈধভাবে ভারতের কলকাতায় যায় কিশোর–কিশোরীরা। সেখানে পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ভারতীয় আদালত তাদের দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়। দণ্ড শেষে পশ্চিমবঙ্গের একটি এনজিও তাদের দায়িত্ব নেয় এবং শেল্টার-হোমে রাখে।
পরে বাংলাদেশ ও ভারতের দূতাবাসের সমন্বয়, প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই এবং ভারত সরকারের বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে তাদের দেশে ফেরানো সম্ভব হয়।
ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তীতে পুলিশের তত্ত্বাবধানে তিনটি এনজিও সংস্থা—মহিলা আইনজীবী সমিতি, জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার এবং রাইটস—তাদের গ্রহণ করে।
মহিলা আইনজীবী সমিতির যশোরের প্রোগ্রাম অফিসার রেখা বিশ্বাস বলেন, ফেরত কিশোর কিশোরীদের বেনাপোল পোর্ট থানা থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে তাদের নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
দীর্ঘ দুই বছর পর প্রিয়জনদের দেশে ফেরার খবরে বিভিন্ন পরিবারে স্বস্তি ও আনন্দের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তবে একই সঙ্গে মানবপাচারের ভয়াবহতা ঠেকাতে সচেতনতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

