কর্মবিরতিতে স্থবির বড়াইগ্রামের ৭৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

উপজেলা প্রতিনিধি, বড়াইগ্রাম (নাটোর)
প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ১১
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ১৭

দেশব্যাপী বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনে নাটোরের বড়াইগ্রামে স্থবির হয়ে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। টানা ৮ম দিনের কর্মবিরতিতে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসায় ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা সরকারি সুবিধা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছেন, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে, রোববার ৫ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া দেয়ার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন।

রোববার সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার এমপিওভুক্ত ৭টি কলেজ, ৪৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৮টি মাদরাসা ও পাঁচটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে কর্মবিরতি। এসব প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষক ঢাকায় আন্দোলনে গেছেন। বাকিরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানেই অফিসে অলস বসে থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। ধর্মঘট শুরুর দিন থেকেই এসব প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। এতে উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থা কার্যত থমকে গেছে। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে, পরীক্ষার সময়সূচি অনিশ্চিত হয়ে গেছে। অভিভাবকরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলনের কারণে শিক্ষাবর্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। এ সময় ক্লাসে না গিয়ে শিক্ষকদের অফিস কক্ষে বসে থাকতে দেখা যায়। জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। তার আগে কোনো ক্লাস নেবেন না তারা।

এ সময় জানতে চাইলে শ্রীরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম লাড্ডু বলেন, শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা, কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করতে হবে।

কুমারখালী দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা আহমদুল্লাহ বলেন, ‘সরকার প্রতি বছর বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বললেও শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নের উদ্যোগ খুবই সীমিত। ন্যায্য বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধি না হলে শিক্ষক সমাজের মধ্যে গভীর হতাশা তৈরি হবে।’

রয়না ভরট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জিহাদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্যারেরা আমাদের ক্লাস না নেয়ায় পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত সব সমস্যা সমাধান হয়ে স্যারেরা শ্রেণিকক্ষে ফিরে আসুক।’

আগ্রান উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, ‘সামনে আমাদের বার্ষিক পরীক্ষা। এ সময় যদি ক্লাস না হয়, তাহলে আমরা তো অনেক পিছিয়ে পড়বো। তাই ক্লাস যেন তাড়াতাড়ি শুরু হয়। আমরা যথাযথভাবে যেন পড়াশোনা করতে পারি, এটাই আমাদের চাওয়া।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আ.ন.ম. মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের এই কর্মসূচি আমাদের সাথে না, তারা সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন। তবে এভাবে কর্মবিরতি চললে অবশ্যই শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত