মিলরেট নিয়ে ইবির সিনিয়র-জুনিয়র মারামারি

প্রতিনিধি, ইবি
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ৪২

মিলরেটের হিসাবকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সিনিয়র ও জুনিয়র শিক্ষার্থীর মধ্যে ধস্তাধস্তি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সজিব এবং ২০১৯-২০ সেশনের মনিরুল ইসলাম রোহান আহত হয়েছেন।

শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টা নাগাদ কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডের একটি মেসে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত সজিব কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। এ ঘটনায় সজিবের রুমমেট ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের নয়নও আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, শিক্ষার্থী সজিব ও রোহানসহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডের সাবেক এমপি হানিফের বাসার পাশের গলির ওই মেসে থাকেন। মেসের নিয়ম অনুযায়ী মাসে ৪৫টি মিল (খাবারের হিসাব) ধার্য করা ছিলো। কিন্তু গত মাসে পূজার ছুটিতে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাড়িতে চলে যাওয়ায় নির্ধারিত মিলের সংখ্যা ৪৫ থেকে কমিয়ে ৪০ করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। এতে মেসেঞ্জারে পোলে ৫ জন সদস্য ৪০টি করার পক্ষে মতামত দিলেও সিনিয়র রোহান দ্বিমত জানায়। সে ৪৫ টাকা মিল ই ধার্য রাখার পক্ষে অবস্থান নিলে রোহান ও সজীবের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় সজিবের চোখ থেকে রক্তপাত হতে থাকলেও রোহান তাকে ইচ্ছেমতো তাকে লাথি-কিল-ঘুষি মারতে থাকে বলে অভিযোগ সজিব ও নয়নের। পরে বাড়িওয়ালা ও অন্যান্যরা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি সামলে সজিবকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় সজিব বলেন, সিনিয়র ভাই হিসেবে উনি একাধিকবার আমাকে মারার জন্য তেড়ে আসে। এরপর আমার জুনিয়ররা উনাকে রুমের বাইরে নিয়ে যায়। পরে আমার রুমমেট আর আমি কথা বলার জন্য উপরে গেলে উনি আমাদের দেখেই নয়নকে বের করে দেয়। আমার চোখ বরাবর ঘুষি মারার পরেই অনবরত ব্লিডিং হচ্ছিল আমি মাটিতে শুয়ে পরি সে আমার হাত পেছনে মুচড়ে ধরে চোখ, মুখ বরাবর অন্তত ২০ থেকে ৩০টি ঘুষি মারছে এবং টাইলসের কোনায় আমার পা বারি মারছে। আমি তার বিভাগের জুনিয়র আমি এভাবেই পড়ে যাওয়ার পরও আমাকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু ও ন্যায্য বিচার চাই।

এদিকে সিনিয়র শিক্ষার্থী রোহান বলেন, মিলের বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হওয়ার পরে আমি চলে আসি। তারপর নয়ন আর সজিব আমাকে মারতে ৩ তলায় আসছিলো। তখন ওদের সাথে আমার ধস্তাধস্তি হয়েছে। এরপর ওরা চলে যেয়ে আশপাশের লোকাল ছেলেপেলে, ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি, আমার বিভাগের ছাত্রদলের সানভীর অনিকসহ ২০/২৫ জন ছেলেপেলে ডেকে নিয়ে সবাই মিলে আমার নানীর সামনে আমাকে মারছে, আমার আঙুল ফেটে গেছে। ওরা কাল সকালের মধ্যে আমাকে মেস থেকে চলে যেতে থ্রেট দিয়ে গেছে, আমাকে পেলেই ওরা আবার মারবে। মার খেয়ে আমি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতেও যেতে পারিনি তাদের কারণে। ওরাই বাইরের ছেলেপেলে এনে বাড়িওয়ালার সামনেই আমাকে মেরেছে তারপর নিজেরাই ঘটনা সাজিয়েছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি এবং বিষয়টি বিভাগের সভাপতি ও প্রক্টর স্যারকে জানিয়েছি। উনারা ব্যবস্থা নিবেন বলেছেন।

বাড়িওয়ালা তৌহিদ ইকবাল খান বলেন, আমার চোখে দুজনই সমানভাবে দোষ করেছে। ছোট্ট একটা মিলের বিষয় নিয়ে তারা হাতাহাতি থেকে মারামারি পর্যায়ে নিয়ে গেছে। বাড়িওয়ালা হিসেবে তাদের বিষয়টি সমাধান করতে গেলে ও দেখি বাইরে থেকে তাদের ডাকা কিছু ছেলে এসে বিশৃংখলা করছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত